একটি ট্রাস্ট গঠন করে তাতে নিজের সব স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি দান করেছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। গতকাল রবিবার বিকেলে এই ট্রাস্ট গঠন করেন। পরে নিজের বাসভবন বারিধারার প্রেসিডেন্ট পার্কে গুলশান রেজিস্ট্রি অফিসের লোকজন ডেকে এনে সব সহায়-সম্পত্তি ট্রাস্টের নামে রেজিস্ট্রেশনের কাজ সম্পাদন করেন তিনি।
গতকাল রাতে কালের কণ্ঠকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন জাপা চেয়ারম্যানের প্রেস সেক্রেটারি খন্দকার দেলোয়ার জালালী। তিনি জানিয়েছেন, এরশাদ নিজেও ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য হিসেবে রয়েছেন। বোর্ডের অন্য সদস্যরা হলেন এরশাদের ছেলে এরিক এরশাদ, একান্ত সচিব মেজর (অব.) খালেদ আখতার, চাচাতো ভাই মুকুল ও তাঁর ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর।
তবে ৯০ বছর বয়সী সাবেক এই সামরিক শাসক তাঁর ট্রাস্টি বোর্ডে স্ত্রী রওশন এরশাদ ও ভাই জি এম কাদেরকে রাখেননি।
ইউনিয়ন ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য এরশাদ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় লিখেছিলেন, তাঁর নগদ টাকার পরিমাণ ২৮ লাখের মতো। হলফনামায় এরশাদ বার্ষিক আয় দেখান এক কোটি সাত লাখ টাকা। ব্যবসা থেকে তিনি আয় করেন দুই লাখ ছয় হাজার ৫০০ টাকা।
ইউনিয়ন ব্যাংক থেকে সম্মানী হিসেবে ৭৪ লাখ ৭১ হাজার ১০ টাকা পান এরশাদ। এ ছাড়া ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে তাঁর ৩৭ লাখ ৬৯ হাজার ৪৬ টাকা জমা রয়েছে। বিভিন্ন শেয়ারে তাঁর অর্থের পরিমাণ ৪৪ কোটি ১০ হাজার টাকা। তাঁর সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ ও এফডিআর ৯ কোটি ২০ লাখ টাকা; ডিপিএস রয়েছে ৯ লাখ টাকার।
এরশাদ লিখেছিলেন, গুলশান ও বারিধারায় তাঁর দুটি ফ্ল্যাট রয়েছে, যার দাম এক কোটি ২৪ লাখ টাকার কিছু বেশি। এর বাইরে ৭৭ লাখ টাকা দামের একটি দোকান রয়েছে তাঁর। যানবাহনের মধ্যে তাঁর রয়েছে ৫৫ লাখ টাকা দামের ল্যান্ড ক্রুজার জিপ, ১৮ লাখ টাকা দামের নিশান কার এবং ৭৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা দামের আরেকটি ল্যান্ড ক্রুজার জিপ। ট্রাস্টের নামে ঢাকা ও রংপুরের যে সম্পদ তিনি দান করেছেন তার অনুমানিক মূল্য ৬০ থেকে ৭০ কোটি টাকা।
বেশ কিছুদিন ধরে শারীরিকভাবে অসুস্থ এরশাদ গত ৩০ ডিসেম্বরের একাদশ সংসদ নির্বাচনে এক দিনও প্রচারে যাননি। নির্বাচনের আগে চিকিত্সার জন্য সিঙ্গাপুরে গিয়েছিলেন তিনি। সেখান থেকে ফেরার পর নির্বাচনের দিন ভোট দিতেও নির্বাচনী এলাকা রংপুরে যাননি এরশাদ।
গত ৬ জানুয়ারি আইন প্রণেতা হিসেবে শপথ নেন এরশাদ, তবে তিনি সংসদে গিয়েছিলেন হুইলচেয়ারে চড়ে। এরপর ২০ জানুয়ারি আবার সিঙ্গাপুর গিয়েছিলেন এরশাদ। তখন জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, রক্তে হিমোগ্লোবিন ও লিভারের সমস্যায় ভুগছেন তিনি।
https://www.youtube.com/watch?v=AoO_iZhlnGs&fbclid=IwAR3u7SUbGRYOrtftvgpHqglgnvhNW6qUeUFFZVgUi-fL7vugbl8l5WN5yp4