Monday, December 23
Shadow

কনের সাজে ঝুলন্ত স্ত্রী, আমগাছে ঝুলছে স্বামীও, হাতের তালুতে লেখা…

স্ত্রীপরনে লেহেঙ্গা-চোলি, খোঁপায় লাল চেলি। বারান্দার কড়ি-বরগা থেকে ঝুলছে বৌমা।

রবিবার সকালে ঘুম থেকে উঠে এ দৃশ্য দেখে চিৎকার করে উঠেছিলেন মোহনপুরের বৈতার হেমাঙ্গিনী দত্ত। প্রাণপণে ছেলেকে ডাকতে থাকেন তিনি। সাড়া মেলেনি। বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে গিয়ে দেখেন, আমগাছে ঝুলছে ছেলেও। পরনে জিন্‌স, জ্যাকেট, মাথায় টুপি। তাঁরই বাঁ হাতের তালুতে লেখা, ‘আমাদের মৃত্যুর জন্য তিন জন দায়ী। ব্যাগে নাম আছে’।

 বিয়ের দেড় বছরের মাথায় মৃত দম্পতির নাম সন্দীপ দত্ত (২৮) ও সুমিতা দণ্ডপাট (২০)। দেহ দু’টি ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। পুলিশের অনুমান, আত্মঘাতী হয়েছেন সন্দীপ। তাঁর হাতে লেখা অনুযায়ী ঘটনাস্থলে পাওয়া ব্যাগে চিরকুটও মিলেছে। তবে তাতে কাদের নাম রয়েছে, তদন্তের স্বার্থে তা বলতে রাজি হয়নি পুলিশ। সুমিতা আত্মঘাতী হয়েছেন নাকি, তাঁর মৃত্যুর পিছনে অন্য কিছু রয়েছে তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। তাঁদের দাবি, ঘটনাস্থলে কিছু তথ্যপ্রমাণ মিলেছে। সুমিতার জেঠতুতো দাদা মানস বলেন, ‘‘মেয়েকে মেরে ঝোলানো হয়েছে। পরে কিছু করতে না পেরে আত্মঘাতী হয়েছে সন্দীপ। থানায় অভিযোগ জানাব।’’ তবে এ দিন রাত পর্যন্ত মোহনপুর থানায় লিখিত অভিযোগ হয়নি।

 

কী হয়েছিল শনিবার রাতে? হেমাঙ্গিনী জানিয়েছেন, শনিবার রাত দশটা নাগাদ স্কুল থেকে বাড়ি ফিরেছিল ছেলে। রাতে না খেয়েই ঘুমোতে যায় সে। হেমাঙ্গিনী বলেন, ‘‘রাতে দু’জনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়েছিল শুনেছি। অতটা কান দিইনি। সকালে এই কাণ্ড।’’

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে খবর, প্রায় দেড় বছর আগে বৈতা এলাকার গণেশ দত্তের ছেলে সন্দীপের সঙ্গে এগরার পাঁচরোলের নরেন দণ্ডপাটের মেয়ে সুমিতার বিয়ে হয়। ঘাটালের একটি স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির কর্মী ছিলেন সন্দীপ। বিয়ের তিন মাস পর থেকে সম্পর্কের জটিলতা শুরু। প্রতিবেশীরা জানান, স্বামী-স্ত্রী দু’জনেই পরস্পরকে সন্দেহ করতেন। অশান্তি এমন পর্যায়ে গিয়েছিল যে, গ্রামে বসে মিটমাটও করা হয়। পুলিশ সূত্রের খবর, তিন-চার মাস আগে সুমিতার নামে নিঁখোজ ডায়েরি করেছিল সন্দীপের পরিবার। পরে তিনি ফেরেন। তখন কলকাতায় দিদির বাড়িতে গিয়েছিলেন সুমিতা। সম্পর্কে জটিলতা এবং তার জেরে গোলমালের কথা মেনেছেন মানসও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Please disable your adblocker or whitelist this site!