class="post-template-default single single-post postid-2438 single-format-standard wp-custom-logo group-blog vl-boxed aa-prefix-matin-">
Shadow

খাবারের পাতে প্রিয় রং হোক লাল

দিনে একটা করে লাল টুকটুকে আপেল খাওয়ার বার্তা দেওয়াই ছিল৷ তার সঙ্গে যুক্ত হল টম্যাটো ও ক্র্যানবেরি৷ হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ শুভ্র বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন, ‘‘সপ্তাহে অন্তত ৫–৬ দিন এই ধরনের খাবার খেলে রক্তচাপ ও খারাপ কোলেস্টেরল বশে রাখা সহজ হয়৷ হৃদরোগের  আশঙ্কা কমে প্রায় ৪০ শতাংশ৷

তার সঙ্গে লাল শাক, লাল বেল পেপার, চেরি, স্ট্রবেরি ও লাল আঙুর যুক্ত হলে তো কথাই নেই৷ অবশ্য তার সঙ্গে অন্যান্য খাবারও বুঝে খেতে হবে৷ নিয়মনিষ্ঠ জীবনযাপন করতে হবে৷ ব্যায়াম–ট্যায়ামও করতে হবে একটু–আধটু৷’’

লালের উপকার

লাল রঙের কারণ লাইকোপিন৷ খারাপ কোলেস্টেরল ও হার্টের ধমনিতে চর্বি জমার হার কমাতে যার ভূমিকা আছে৷ লাইকোপিনসমৃদ্ধ খাবার, বিশেষ করে টম্যাটো সপ্তাহে ৫ দিন করে ১০–১২ বছর খেলে ইসকিমিক হৃদরোগের আশঙ্কা প্রায় ২৬ শতাংশ কমে যায়৷

  • বিভিন্ন গবেষণা থেকে জানা গিয়েছে, রোজ একটি আপেল খেলে খারাপ কোলেস্টেরল প্রায় ৪০ শতাংশ কমে যায়৷ আবার ‘লোয়া ওমেন্স হেলথ স্টাডি’ অনুযায়ী যাঁরা রোজ আপেল খান, তাঁদের মধ্যে হৃদরোগে মৃত্যুর হার কম৷ তবে এই উপকার পেতে গেলে রস করে নয়, আপেল খেতে হবে চিবিয়ে৷ কারণ আপেলের খোসাতেই উপকার বেশি৷
  • রোজ তিন কাপ ক্র্যানবেরির রস খেলে উপকারী এইচডিএল কোলেস্টেরল বাড়ে প্রায় ১০ শতাংশ৷ হ-হৃদরোগের আশঙ্কা কমে প্রায় ৪০ শতাংশ৷
  • লাল বেল পেপারে কমলালেবুর তিন গুণ ভিটামিন সি আছে৷ আছে প্রচুর ফাইবার৷ কাজেই লো ক্যালোরি খাবারের সঙ্গে খেলে কোলেস্টেরল ও ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে৷
  • স্ট্রবেরিতে আছে ফোলেট৷ হার্টের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে তার তুলনা নেই৷
  • চেরি খেলে ভিটামিন সি–এর জন্য হার্ট যেমন ভাল থাকে, ফাইবার ও পটাশিয়ামের জন্য তেমনই কম থাকে হাই কোলেস্টেরল ও প্রেশারের প্রকোপ৷
  • লাল আঙুর ও রেড ওয়াইনে আছে প্রোয়্যান্থোসায়ানি়ডিন ও অন্যান্য ফ্ল্যাভোনয়েড পলিফেনল৷ নিয়মিত খেলে চর্বি জমে হৃদধমনীর পথ বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা অনেক কমে যায়৷
  • নিয়মিত তরমুজ খেলে প্রচুর ভিটামিন সি–এর জন্য উচ্চ রক্তচাপ ও ধমনীতে চর্বি জমার প্রবণতা কমে৷ তরমুজের ক্যালোরি খুব কম৷ তার উপর এতে আছে সিট্রুলিন নামের উপাদান, যার প্রভাবে শরীরে চর্বি কম জমে৷ হার্ট ভাল রাখার এও আরেক কারণ৷
  • লাল বাঁধাকপিতে আছে অ্যানথ্রোসায়ানিন পলিফেনল, কোলেস্টেরল কমাতে কাজে আসে৷ এর ক্যালোরিও কম৷ ফলে পরিমাণমতো খেলে ওজন বশে থাকে৷ তবে বেশি ভেজেভুজে না খেয়ে ভাপিয়ে রান্না করলেই উপকার পাওয়া যায় বেশি৷
  • রাজমা মাংসের চেয়ে উপকারী৷ কারণ এতে কোলেস্টেরল ও স্যাচুরেটেড ফ্যাটের বদলে আছে প্রচুর দ্রবণীয় ফাইবার, যা কোলেস্টেরল কমায়৷ আছে পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম—  রক্তচাপ বশে রাখতে যাদের বিরাট ভূমিকা৷ আছে ফোলেট, যা শরীরে হোমোসিস্টিনের পরিমাণ কমিয়ে হার্টকে অনেক বিপদের হাত থেকে বাঁচায়৷
  • লালচে রংয়ের পিঁয়াজ রেড ওয়াইনের চেয়েও উপকারী৷ নিয়মিত খেলে ভিটামিন সি–এর কারণে ইসকিমিক হৃদরোগের প্রবণতা কমে৷ অ্যালাইল প্রপাইল ডাইসালফাইড নামের যৌগ ও ক্রোমিয়াম রক্তে ইনসুলিনের মাত্রা ঠিক রেখে ব্লাড সুগার কমাতে সাহায্য করে৷ আবার কুইরসেটিন নামে যৌগ থাকে বলে হাইপ্রেশারের রোগী যদি নিয়মিত খান, বশে থাকে তাঁর রক্তচাপ৷ তবে পিঁয়াজের অধিকাংশ গুণ কিন্তু থাকে উপরের দিকে৷ খোঁসা ছাড়ানোর সময় খেয়াল রাখবেন৷

এক নজরে

  • শাক–সব্জি–ফল খাওয়ার অভ্যাস না থাকলে শরীরকে সইয়ে সইয়ে খান৷
  • প্রেশার বা কোলেস্টেরল খুব বেশি হলে জীবনযাপনের অন্য নিয়মও মেনে চলুন৷ দরকার হলে ওষুধ খান৷
  • রান্নায় টম্যাটো দিন৷ লাইকোপিন ভালভাবে শোষিত হবে৷
  • রোজ একটা আপেল খান৷ ভাল করে ধুয়ে, চিবিয়ে৷
  • ক্র্যানবেরি রস ৩–৪ কাপ খেতে না পারলে দু’–এক কাপ অন্তত খান৷
  • লাল বেল পেপার, টম্যাটো, লাল বাঁধাকপি, রাজমা, পেঁয়াজ  দিয়ে বানানো স্যালাড খান রোজ৷
  • খাওয়ার শেষে মিষ্টি হিসাবে খান চেরি, স্ট্রবেরি, আপেল, তরমুজ  ও লাল আঙুরে বানানো স্যালাড৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Please disable your adblocker or whitelist this site!