পরিষ্কার টানটান জামা-কাপড় ছাড়া মনই ওঠে না। তাই বাড়ি ফিরেই বিন ব্যাগে চলে যায় নিত্য ব্যবহারের পোশাক। বেরনোর আগে আয়রন টেবলে চলে আরেক প্রস্থ লড়াই। পোশাক নিয়ে খুঁতখুঁতে বলে, এই-ই যদি হয় আপনার পোশাকের যত্ন নেওয়ার নমুনা— তা হলে কিন্তু সাবধান।
জানেন কি প্রিয় পোশাক সহজেই রংচটা, পুরনো হয়ে যাচ্ছে কেন? বিশেষজ্ঞদের মতে, এর জন্য সব সময় কোম্পানির মেটেরিয়াল দায়ী নয়, বরং ক্ষতির পিছনে লুকিয়ে রয়েছে আপনার এই অভ্যাসগুলোই!
তা হলে কি জামা-কাপড় কাচব না বা ইস্ত্রি করব না? মোটেই তা নয়। নিশ্চয় যত্ন নেব। তবে তার জন্য মেনে চলতে হবে কিছু নিয়ম
ট্যাগ পড়ুন মন দিয়ে
জামা-কাপড় কেনার পর তার ট্যাগ খুলে শরীরে চড়িয়ে নেওয়াই আমাদের অভ্যাস। কিন্তু এ বার সে অভ্যাসে রাশ টানুন। জামা-কাপড় কিনে খুঁটিয়ে পড়ে ফেলুন ট্যাগ। তাতে দাম ছাড়াও লেখা থাকে জরুরি কিছু কথা। ওতেই থাকে পোশাকের মান, ফ্যাব্রিক ও তা যত্ন নেওয়ার নিয়ম। সব পোশাক যেমন ঘন ঘন কাচা যায় না, আবার কিছু জামা-কাপড় আছে, যেগুলি রোজ কাচলেও দোষ নেই। কাচার সময়ে বিশেষ জামা কাপড় আলাদা কাচেন তো? নাকি হরদম সব জামা-কাপড়ের সঙ্গে জলে ভিজিয়ে কাচছেন বিশেষ পোশাকও? পোশাকে ঘন ঘন ইস্ত্রি দরকার কিনা বা প্রয়োজনে কতটুকু ইস্ত্রি যথেষ্ট— তার খতিয়ানও কিন্তু দেওয়া থাকে নামী কোম্পানির পোশাকে। কাজেই তা দিনের পর দিন নতুনের মতো দেখাতে চাইলে, মেনে চলুন ট্যাগে দেওয়া নির্দেশ।
সাবান বাছুন বুঝে
এও এক অদ্ভুত ঝোঁক। বরাবরের ব্যবহারের সাবান হঠাৎ বদলে ফেললেন বিজ্ঞাপনের চক্করে বা আরও বেশি পরিষ্কারের অজুহাতে। এ অভ্যাস যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন। আসলে, প্রায় সব ধরনের ডিটারজেন্ট বা লিকুইডে কম-বেশি একই রাসায়নিক থাকে। মূলত ফসফেট, কার্বনেট ও সোডিয়াম স্যালিকেট। এ সব রাসায়নিকের অণুগুলোর একাংশ ‘ওয়াটার লাভার’। যা সহজেই জলে মেশে। অপর অংশ কিন্তু ‘ওয়াটার হেটার’। যা মেশে তেলের সঙ্গে। বিভিন্ন রকমের ডিটারজেন্টে এর হিসেব আলাদা-আলাদা হয়। কাজেই কোন ধরনের পোশাকের জন্য কী সাবান বাছবেন, সেটাও সাবানের কম্পোজিশন দেখে ঠিক করুন।
সিএমসি-র মাপ দেখে নিন
সিএমসি? সে আবার কী? এক কথায় কার্বোক্সিমিথাইলসেলুলোজ। এই সিএমসি-র উপরই নির্ভর করে একটি ডিটারজেন্টের নোংরা পরিষ্কারের ক্ষমতা। সাবান যত মৃদু তার সিএমসি-ও তত কম। ফলে খুব নোংরা হয়েছে এমন পোশাক কাচতে সিএমসি কম এমন মানের সাবান বাছলে ঠকবেন।
ইস্ত্রি করব, কি করব না?
আলবাত ইস্ত্রি করবেন। তবে তারও কিছু নিয়ম আছে বইকি। ইস্ত্রির সরাসরি তাপ সবকরম পোশাকের জন্য উপকারী নয়। কিছু কিছু জামা-কাপড়ের ফ্যাব্রিক উত্তাপে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। নরম কাপড় বা বিশেষ কিছু রেশমকে ইস্ত্রির উত্তাপ থেকে দূরে রাখাই ভাল। একান্তই ইস্ত্রির প্রয়োজন পড়লে হালকা আয়রন বুলিয়ে নিন। অথবা, ভরসা করুন আদি উপায়ে— পোশাক ভাল করে ভাঁজ করে ঢুকিয়ে নিন বিছানার গদির তলায়। পরার আগে ইস্ত্রির মতো টান দেখে নিজেই চমকে যাবেন।
ভাল পোশাক আলনায় নয়
আলনা নয়, চেষ্টা করুন আলমারি ব্যবহার করতে। আলনায় ঝুলিয়ে রাখলে পোশাকের বিশেষ অংশের উপর চাপ পড়ে। ফলে আলনার রডের সঙ্গে লেগে থাকা অংশে হ্যাঙ্গিং লাইন তৈরি হতে পারে। ক্ষতি হয় ওই জায়গার ফ্যাব্রিক। তার চেয়ে ন্যাপথালিন বা কালো জিরে ছড়িয়ে আলমারিতে রাখুন পোশাক।