বন থেকে উদ্ধার সেই মায়ের সঙ্গে দেখা করলেন ছেলে
Friday, December 5

বন থেকে উদ্ধার সেই মায়ের সঙ্গে দেখা করলেন ছেলে

টাঙ্গাইলের সখীপুরে বন থেকে উদ্ধার হওয়া সেই মায়ের সঙ্গে দেখা করতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গেলেন তাঁর একমাত্র ছেলে সানোয়ার হোসেন। তিনি বৃহস্পতিবার বিকেলে মায়ের সঙ্গে দেখা করেন এবং রাতে মায়ের সঙ্গে হাসপাতালে থাকবেন বলে জানিয়েছেন।

ছেলের দাবি, তাঁর মা একজন মানসিক রোগী। তিনি গত ২৩ মার্চ শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার নিজ বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন। তিনি তাঁর মাকে করোনার ভয়ে সখীপুরের বনে ফেলে যাননি। তবে মায়ের প্রতি তাঁদের পরিবারের যথেষ্ট অবহেলা ছিল। তিনি গাজীপুরের একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করার কারণে মাকে খুঁজতে সময় দিতে পারেননি।

সানোয়ার সখীপুরের ইউএনও, পুলিশ ও স্বাস্থ্য বিভাগের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং দেশবাসীর কাছে করজোড়ে ক্ষমা চান। তিনি বলেন, সখীপুরের প্রশাসন তাঁর মাকে বন থেকে উদ্ধার না করলে হয়তো তাঁর মা মারা যেতেন। তিনি কান্না করে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি ভীষণ লজ্জা পেয়েছি। আপনারা আমাকে ভুল বুঝবেন না।’

‘করোনা সন্দেহে মাকে সখীপুরের বনে ফেলে গেলেন সন্তানেরা’ শিরোনামে মঙ্গলবার  একটি সংবাদ প্রকাশ হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবরটি প্রচার হয়।মঙ্গলবার রাতে টেলিভিশনে ছবি দেখে সানোয়ার তাঁর মাকে শনাক্ত করেন। এরপর বৃহস্পতিবার বিকেলে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান।

স্থানীয় ইউপি সদস্য বলেন, সোমবার রাত আটটার দিকে বনের ভেতর থেকে এক নারীর কান্নার শব্দ শুনে স্থানীয়রা তাঁকে খবর দেন। পরে স্থানীয় চেয়ারম্যানসহ এলাকার লোকজন ওই নারীর কাছে যান। ওই নারী তাঁর ছেলেমেয়েরা কীভাবে তাঁকে জঙ্গলে ফেলে গেছেন, সেই কাহিনি বলেন। রাত ১২টার দিকে ইউএনওকে খবর দেওয়া হয়। রাত দেড়টার দিকে ইউএনও আসমাউল হুসনার নেতৃত্বে পুলিশ ও মেডিকেল টিম তাঁকে উদ্ধার করে রাতেই অ্যাম্বুলেন্সযোগে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করেন। তাঁর নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়নি।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী রেজিস্ট্রার (মেডিসিন বিভাগ) মোক্তাদির ভূঁইয়া জানান, সাজেদা নামের ওই নারী কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন। তাঁকে আইসোলেশন বিভাগে রাখা হয়েছে। কয়েক দিন পর ওই মাকে আবার দ্বিতীয় দফায় পরীক্ষা করা হবে।

সানোয়ার বলেন, বিকেল সাড়ে চারটার দিকে আইসোলেশন ওয়ার্ডে তিনি মায়ের সঙ্গে দেখা করেন। তাঁকে দেখে মা খুব খুশি হয়েছেন।

সানোয়ারের ভাষ্য, ২৩ মার্চ তাঁর মা নিখোঁজ হন। ২৫ মার্চ বাড়ি থেকে তাঁকে নিখোঁজের বিষয়ে জানানো হয়। ২৭ মার্চ তিনি মায়ের নিখোঁজের বিষয়ে ছবি দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্ট করেন। সেখানেও তাঁর মা একজন মানসিক রোগী বলে উল্লেখ করেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *