class="post-template-default single single-post postid-16797 single-format-standard wp-custom-logo group-blog vl-boxed aa-prefix-matin-">
Shadow

ভারতের বিখ্যাত সিএমসি হাসপাতালে চিকিৎসা তথ্য

সিএমসি হাসপাতালেকেন ভ্যলরে চিকিৎসা করবেন?
************************************
ভ্যালরে রয়েছে ভারতের বিখ্যাত সিএমসি হাসপাতাল। হাসপাতালের মান ও সেবা একেবারেই বিশ্বমানের কিন্তু চিকিৎসা খরচ তুলনামূলক অনেক কম। এটি খ্রিস্টান মিশনারী পরিচালিত একটি অলাভজনক হাসপাতাল। আমার হিসেবে জটিল অপারেশনে বাংলাদেশের একটি ভাল মানের প্রাইভেট হাসপাতালে যে খরচ হয় প্রায় একই খরচে আপনার ভ্যলরে ট্রান্সপোর্ট, থাকা-খাওয়া, চিকিৎসা সব খরচই হয়ে যাবে। কিন্তু চিকিৎসা পাবেন বিশ্ব মানের। হাসপাতালের প্রায় ২৫ ভাগ বাংলাদেশী রোগী। অনেক রোগীকে দেখেছি সিএমসিতে গিয়ে প্রমান হয়েছে দেশে তারা ভুল চিকিৎসা বা ভুল ডায়াগনসিসের শিকার হয়েছিলেন। তাই আপনার রোগ ও চিকিৎসার যথার্থতাও নিশ্চিত হতেও সিএমসিতে একবার দেখিয়ে আসতে পারেন।

ভৌগলিক অবস্থানঃ
***********************
দক্ষিন ভারতের রাজ্য তামিলনাডু। বাংলাদেশ হতে পশ্চিমবঙ্গ, ওডিসা, অন্ধপ্রদেশ, তেলুগু রাজ্য পার হয়ে তারপর তামিলনাডু রাজ্য। রাজ্যের রাজধানী চেন্নাই যা পূর্বে মাদ্রাজ নামে পরিচিত ছিল। চেন্নাইতে রয়েছে দুইটি বিখ্যাত হাসপাতাল। চেন্নাই এ্যাপোলো এবং রামচন্দ্র হাসপাতাল। চেন্নাই হতে ১৩৩ কিঃমিঃ দূরে একটি জেলা শহর ভ্যালর। ভ্যালরেও রয়েছে বিখ্যাত দুইটি হাসপাতাল। সিএমসি হাসপাতাল এবং নারায়নী হাসপাতাল। তামিলনাডুর কোন হাসপাতালে চিকিৎসা করাবেন? সিএমসি, নারায়নী,চেন্নাই এ্যাপোলো এবং রামচন্দ্র চারটি বিখ্যাত হাসপাতাল রয়েছে তামিলনাডু রাজ্যে। আমার মতে যাদের সময় ও ধৈয্য আছে তারা চিকিৎসা করাবেন সিএমসিতে। সিএমসিতে চিকিৎসা বিশ্বমানের কিন্তু রোগীর আধিক্যের কারনে ডাক্তারের এ্যাপয়েন্টমেন্ট থেকে শুরু করে সবকিছুতেই সময় বেশি নিবে, লাইনে দাড়াতে হবে, ওয়েটিং রুমে দীর্ঘ সময় বসে থাকতে হবে। যাদের সময় কিংবা ধৈয্য কম কিন্তু টাকা আছে তাদের সাজেস্ট করব চেন্নাই এ্যাপোলোতে চিকিৎসা করতে। আর যাদের সময়, ধৈয্য এবং টাকা সবই কম তাদের বলব শ্রি রামচন্দ্র বা নারায়নী হাসপাতালে চিকিৎসা করতে। দুইটির মধ্যে শ্রি রামচন্দ্র হাসপাতালকে আমি এগিয়ে রাখব। মনে রাখবেন, শ্রি রামচন্দ্র বা নারায়নী হাসপাতালে দুটিই মান ও সেবায় বাংলাদেশের হাসপাতালগুলর তুলনায় অনেক অগ্রগামী কিন্তু খরচে বাংলাদেশের প্রাইভেট হাসপাতালগুলোর তুলনায় কম।
কিভাবে যাবেন?
১।ঢাকা-চেন্নাইঃ ঢাকা হতে সরাসরি বিমানে চেন্নাই যেতে পারেন। ভাড়া জন প্রতি ১৫০০০-১৮০০০ টাকা।
২। ঢাকা-কলকাতাঃ বাস (এসি)- ১৮০০-১৯০০ টাকা বাস (নন-এসি) – ১০০০ টাকা ট্রেনঃ ১১৬০/১৬৩৩/২৩৮৬ বিমানঃ রিজেন্ট-৭০০০+- টাকা, বাংলাদেশ বিমান-৭,০০০+- টাকা জেট এয়ার ৭১০০+- এয়ার ইন্ডিয়া ৭১০০+- (কিছু কম বেশি হতে পারে)
৩। কলকাতা – চেন্নাই ট্রেনঃ জেনারেল টিকেট ভাড়া থ্রি টায়ার এসি – ২৫০০+- টাকা, ননএসি- ১২০০+- টাকা। ২৭-৩০ ঘন্টা জার্নি। বিমানঃ ৫৫০০-৭০০০ টাকা (কিছু কম বেশি হতে পারে)। প্রায় ২:৩০ ঘন্টার জার্নি।
৪। চেন্নাই – ভ্যালরঃ টেক্সি ক্যাব রিজার্ভ – নন এসিঃ ১৫০০-১৮০০ রুপি, এসিঃ ২২০০-২৫০০ রুপি রেলঃ ভাড়া ২০০ রুপি বাসঃ ভাড়া ১৫০-২০০ রুপি ** চেন্নাই হতে ভ্যালর যাত্রায় রেলে অনেক ভীড় হয় এমনকি বসার সিটও পাওয়া যায় না। তাই টেক্সি ক্যাব বা বাসে যাওয়াই ভাল।
৫। কোলকাতা – কাটপাডি (ভ্যালর) ট্রেনঃ ভাড়া কলকাতা চেন্নাই অপেক্ষা ১৫০-২০০ রুপি বেশি হবে। সময় ৩০-৩২ ঘন্টা। টিকেট পেতে হলে বেশ কিছুদিন আগে থেকেই বুক করে রাখা ভাল।কাটপাডি মানে ভেলরের রেল ষ্টেশন। রেল ষ্টেষন থেকে সিএমসি পর্যন্ত অটো ভাড়া ১০০-১৫০ রুপি। কাটপাডি স্টেশন হতে বাসেও সিএমসি যেতে পারেন। ভাড়া মাত্র ৫ রুপি।
** কলকাতা-চেন্নাই/ভ্যালর ট্রেনের টিকেট বাংলাদেশের বিশ্বস্ত ট্রাভল এজেন্টদের কাছ থেকে নেওয়াই ভাল। কলকাতায় যাওয়ারপর টিকেট নাও পেতে পারেন। তাছাড়া কলকাতায় গিয়ে টিকেটের জন্য ২/১ দিন স্টে করে মূল্যবান সময় নস্ট ও অতিরিক্ত খরচ কেন করবেন? আমি ট্রাভল এজেন্টদের মাধ্যমেই ট্রেনের টিকেট করেছিলেম। কলকাতায় গিয়ে এক রাতও হোটেলে থাকতে হয়নি।
***** ২/১ মাস আগে হতে প্ল্যাণ করলে কলকাতা-চেন্নাই প্লেনে কনেক কম টাকায় ফ্লাইট অফার পাওয়া যেতে পারে। এ বিষয়ে ট্রাভল এজেন্টদের সহায়তা নিন।

কোথায় থাকবেন?
********************
সিএমসি এর আশে পাশেই অসংখ্য হোটেল, লজ পাবেন। লজগুলোতে পাবেন রান্নার সুবিধা এবং রুম ভাড়াও তুলনামূলক কম। নন-এসি ১৫০ হতে ৪০০ রুপি। বেশিরভাগ লজগুলোই ভ্যাপসা গন্ধ, পর্যাপ্ত আলো-বাতাসের অভাব রয়েছে।আর আপনার সঙ্গী হিসেবে রুমগুলোতে পাবেন ছাড়পোকা। তবে পরিস্কার-পরচ্ছন্ন, আলো-বাতাসযুক্ত এবং ছারপোকামুক্ত রুম নিতে চাইলে ডাবল রুমের জন্য বাজেট সামান্য বাড়াতে হবে। মিনিমাম তিন দিনের জন্য রুম ভাড়া নিতে হয়। আমার অপিনিয়ন হলো প্রথমে বেশি টাকা দিয়ে একটি ভাল হোটেলে উঠে পড়ুন। ১ম দিন হাসপাতাল রেজিস্ট্রেশন, পুলিশ স্টেশনে রিপোর্ট ইত্যাদি নিয়ে ব্যস্ততা যাবে। ২য় দিন হতে কম খরচে ভাল মানের লজ খুজে বের করবেন।ভাল করে ২/৩ দিন সার্চ করলেই কম বাজেটে মনের মতো লজ পেয়ে যাবেন। হাসপাতালের কাছের লজগুলোতে ভাড়া তুলনামূলক বেশি। আমি ছিলাম হাসপাতালের একেবারেই কাছে দিবিয়া গেস্ট হাউজে। রুম ভাড়া ডাবল সিট ৩৬০ রুপি, ত্রিপল বেড ৪৫০ রুপি, চার বেড রুম ৫০০ রুপি। আর প্রথম দিকে আমি ছিলাম একটু দূরে আরকে রেসিডেন্সিতে।ভাড়া ডাবল বেড ২৫০ রুপি, ত্রিপল বেড ৩৫০ রুপি। এ দুটি লজই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, পর্যাপ্ত আলো-বাতাস রয়েছে এবং ছাড়পোকা মুক্ত। লজ গুলতে রয়েছে স্বপাকের ব্যবস্থা। ১ সেট হাড়ি-পাতিল-প্লেট ও গ্যাসের সিলিন্ডারর চুলার দৈনিক ভাড়া ১০ হতে ১৫ রুপি। সিলিন্ডারে গ্যাস খরচ প্রতি কেজি ১০০ রুপি। ৩ জনের রান্না হলে ১ কেজিতে ৬/৭ দিন চলে যাবে। খাওয়ার পানি ১ জার ৩৫-৪০ রুপি। এসি হোটেলের ভাড়া ৭০০-১০০০ রুপি। এসি হোটেল্লে রান্না করে খাওয়ার সুযোগ নেই।এসি হোটেল চাইলে বিমল লজে উঠতে পারেন। সিএমসি এর কাছে, পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন।

সিএমসি হাসপাতাল রেজিস্ট্রেশন পক্রিয়া :
********************************************************
১। বাংলাদেশ হতেঃ বাংলাদেশ হতে ইন্টারন্যাশনাল ক্রেডিট কার্ড দিয়ে সিএমসি হাসপাতালে এপয়েন্টম্যান্ট করে যেতে পারেন। পূর্বে এপয়েন্টম্যান্ট না করে গেলে ভ্যালরে গিয়ে নিশ্চিত কয়েকদিন বসে থাকতে হবে। ভারতে যাবার ১ মাস আগেই এপয়েন্টম্যান্ট করে রাখবেন। নিউরোলজি, ই এন টি, পালমনোলজি, রিউমলোটজি বিভাগে মিনিমান ২ মাস আগেই এপয়েন্টম্যান্ট করবেন। অন্যাথায় সময়মতো এপয়েন্টম্যান্ট পাবেন না। যাদের ক্রেডিট কার্ড নেই কিংবা ক্রেডিট কার্ড দিয়ে অনলাইন এপয়েন্টমযান্ট করতে পারবেন না তারা বিশ্বস্ত মেডিক্যাল টুরিজম সার্ভিস এর সহায়তা নিতে পারেন।

২। ভ্যালরে পৌছেঃ
ভ্যালরে আপনার হোটেল বা সিএমসি এর নিকটবর্তী সইবারক্যাফে অথবা কম্পিউটার রয়েছে এমন অনেক দোকান হতে পাসপোর্ট নিয়ে কেবল রোগীর প্রিরেজিস্ট্রেশন করুন। এ কাজে ২০রুপি ব্যয় হবে। তবে কিছু ডাকাইত ৫০ রুপি নিবে । প্রিরেজিস্ট্রেশন ফরম, আপনার ও এটেনডেন্ট এর পাসপোর্ট এবং পুর্বে বাংলদেশের চিকিত্সা সংক্রান্ত ডকুমেন্ট (যদি থাকে ) সহ সিএমসি হাসপতালের International Patient Office (কাউন্টার ৯০০বি) এ চলে যাবেন। সেখানে একজন সিকিউরিটি গার্ড থাকবে। তার কাছ হতে টোকেন নম্বর নিন।কাগজে লিখিত টোকেন নম্বরটি রেখে দিন। তারপর নির্ধারিত লাইনে বসুন। চেয়ারে বসবেন, এটিই লাইন। একজন করে সামনে যাবে, আপনিও একলাইন সামনে যাবেন। ওই রুমে তিনটি কাউন্টার, Registration counter, Triage Counter এবং Bill/ Payment counter। প্রথমে লাইন ধরে রেজিস্ট্রেশন কাউন্টারে যাবেন। সেখানে আপনার হোটেলের নাম ও ঠিকনা চাইবে। হোটেল হতে কার্ড নিয়ে আসবেন। এখনে আপনার ও সাথে যারা থাকবে সকলের পাসপোর্ট জমা দিন । রেজিঃ সম্পূর্ণ হলে আপনকে সামনের এক সারিতে অপেক্ষা করতে বলবে। কিছুক্ষনপর Triage counter হতে আপনার টোকেন নম্বর সহ ডাকবে। সেখানে আপনার পূর্বের মেডিকেল রেকর্ডসহ যাবেন। এসময় আপনার টোকেন কাগজটি দেখতে চাইবে। আপনার অসুখ সম্পর্কে প্রশ্ন করে এই কাউন্টার আপনার ডাক্তার ঠিক করবে। তারপর আপনকে আবার বসতে বলবে। পরে বিল কাউন্টার হতে আপনার নাম ধরে ডাকবে। সেখানে ডাক্তার এপয়েন্টমেন্ট পেমেন্ট করবেন। এসময় কৃশ কার্ড ও এপয়েন্টমেন্ট স্লিপ পাবেন। এখনে আপনি ও সাথে যাদের পাসপোর্ট দিবেন সকলের জন্য একটি করে ফরম দিবে। ফরমটি ফিলাপ করে পরে পুলিশ স্টেশনের সিল মেরে আনতে হবে।ইন্টারন্যাশনাল পেশেন্ট অফিসে সম্পূর্ণ পক্রিয়া শেষ করতে দুই হতে চার ঘন্টা লাগবে। পুরনোরোগীদের প্রিরেজিস্ট্রেশন দরকার নেই. টোকেন নম্বর নিয়ে রেজিস্ট্রেশন কাউন্টারে লাইনে বসবেন.
*** যারা দেশ হতে এপয়েন্টম্যান্ট নিয়ে যাবেন তাদেরকেও International Patient Office (কাউন্টার ৯০০বি) এ রেজিঃ করতে হবে । তবে তাদের প্রি রেজিঃ এর দরকার হবে না এবং Triage counter এ কোন দরক্র হবে না।

৪৯২ নং কাউন্টার
*******************************
সিএমসি হাসপাতলে এপয়েন্টমেন্ট অনেক দেরিতে পেয়েছেন ? এপয়েন্টমেন্ট স্লিপ নিয়ে ISSCC বিল্ডিং এর 492 নং কাউন্টারে যোগাযোগ করুন। এপয়েন্টমেন্ট এগিয়ে আসতে পারে। যদি আপনার কোন নির্দিষ্ট ডাক্তারের প্রয়োজন না হয় তবে বলুন যে কোন ডাক্তার হলেই চলবে কিন্তু যত দ্রুত সম্ভব এপয়েন্টমেন্ট দিন। আশা করছি দ্রুত এপয়েন্টমেন্ট পাবেন। মূলত কেউ এপয়েন্টম্যান্ট ক্যান্সেল করলে ৪৯২ নং কাউন্টারে ঐ এপয়েন্টম্যান্টটি আপনাকে দেওয়া হবে। তবে এ বিষয়ে নিশ্চয়তা প্রদান করা যায় না।
ক্রিশ কার্ডঃ ক্রিশ কার্ড মূলত সিএমসি এর একটি ডেবিট কার্ড। টাকা নিয়ে ঘুরতে না চাইলে বা হোটেলে টাকা রাখতে না চাইলে আপনার সকল টাকা হাসপাতালের নির্ধারিত কাউন্টারে জমা দিয়ে ক্রিশ কার্ডে টাকা ভরে নিন। টাকা ভরার সময় আপনাকে রিসিট দিয়ে দিবে। ০.০৫% সার্ভিস চার্জ কেটে নিবে। ডাক্তার ভিজিট, ঔষধ ক্রয়, হাসপাতাল ভর্তি হতে শুরু করে সিএমসিতে আপনার যে কোন বিল ক্রিশ কার্ডের মাধ্যমে পেমেন্ট করতে পারেন। এটি চুরি হলেও অন্য কেউ আপনার বিল ছাড়া অন্য কোন পেমেন্ট করতে পারবে না। কার্ডের পাসওয়ার্ড গোপন রাখুন। ফেরার সময় সামান্য ব্যালেন্স রেখে বাকি টাকা তুলে নিন। ভবিষ্যতে বাংলাদেশে বসে এই কার্ড দিয়েই অনলাইনে আপনি আপনার পছন্দমতো ডাক্তার এ্যাপয়েন্টমেন্ট দিয়ে আসতে পারবেন। এজন্য প্রইয়োজনীয় কিছু ব্যালেন্স রেখে আসুন।

MRO Couter
**********************
সিএমসি এর প্রতিটি বিভাগে রয়েছে Medical Record Officer (MRO) কাউন্টার। কাউন্টার নম্বর, কোন বিল্ডিং, কত তলা সবই লেখা থাকে এপয়েনমেন্ট স্লিপে। স্লিপে টাইমও লেখা থাকবে। নির্ধারিত সময়ে স্লিপ নিয়ে MRO কাউন্টারে আসুন । কাউন্টারে অফিসার স্লিপে টোকেন নম্বর ও রুম নম্বর লিখে দিবে। অনেক সময় টাইমও বলে দিবে। টোকেন নম্বর অনুসারে ডাক্তারের রুমে প্রবেশ করুন।
টোকেনঃ
সিএমসি তে ডক্টরেট এপয়েন্টমেন্ট পেপার নিয়ে নির্ধারিত সময়ে MRO অফিসে যাবেন. MRO কাউন্টারে আপনার এপয়নমেন্ট কাগজে রুম ও টোকেন নম্বর লিখে দিবে. চেম্বারের বাইরে বসুন. এমন একটি ডিসপ্লে স্ক্রিন দেখতে পাবেন. ডানে রুম নম্বর বামে টোকেন নম্বর. আপনার সিরিয়াল এলে রুম নম্বর অনুসারে ডাক্তারের চেম্বারে প্রবেশ করুন. ডাক্তারকে সব খুলে বলুন. ভয় নেই, যতবড় ডাক্তার হোক অনেক সময় দিবে আপনকে.
পুলিশ রিপোর্টঃ
ভ্যালরে পৌছে রোগী ও রোগীর এটেনডেন্টকে পুলিশ স্টেশনে রিপোর্ট করতে হয়।
১. সিএমসিতে ইন্টারন্যাশনাল পেশেন্ট অফিসে রোগী ও তার এটেন্ডডেন্ট এর পুলিশ রিপোর্ট এর জন্য ফরম দিবে। হোটেলে ফিরে ফরমগুলো পুরন করুন।
২. অনলাইনে রোগী ও তার এটেন্ডডেন্ট এর সি ফরম পুরণ করুন। আপনার হোটেল ম্যনেজার বা বাহিরে অনেকেই এ কাজটি করে দিবে। এজন্য জনপ্রতি বিশ হতে একশ রুপি চার্জ নিবে। অনেক হোটেলে এটি ফ্রি করে দেয়।
৩. এখন সকলের হাসপাতাল ফরম ১ কপি, সি ফরম ২ কপি, পাসপোর্ট সাইজ ছবি ১ কপি, হোটেলের কার্ড, মূল পাসপোর্টসহ থানায় চলে যাবেন. সকাল ১১ টার পরে অথবা সন্ধার পর পুলিশ স্টেশনে যাবেন। সেখানে আপনার মতো অনেক বাংলাদেশী দেখতে পাবেন। লাইনে দাঁড়ান এবং রিপোর্ট পক্রিয়ায় শেষ করুন। মনে রাখবেন এ কাজ করতে পুলিশকে ২০-৩০ রুপি খরচা দিতে হবে। আর যতবার হোটেল chang করবেন ততবার সি ফরম করে থানায় রিপোর্ট করতে হবে।
টাকা দরকার হলে কি করবেন?
বাংলাদেশ হতে যাবার সময় যা পারেন টাকা/ডলার নিয়ে যাবেন। কলকাতা হতে টাকা ভাঙ্গিয়ে নিবেন কেননা এখানেই সবচাইতে ভাল রেট পাবেন। কালকাতায় প্রতি একশ টাকায় বর্ডার হতে ৩০-৫০ পয়সা বেশি এবং ভ্যালর হতে প্রায় ২ টাকা রেট বেশি পাবেন। ভ্যালরে গিয়ে টাকা ফুরিয়ে গেলে বাংলাদেশ ব্যতীত অন্য যে কোন দেশ হতে ওয়েস্টান ইউনিয়ন, মানিগ্রাম এর মাধ্যমে টাকা আনতে পারবেন। কিন্তু বাংলাদেশ হতে বৈধভাবে টাকা আনার কোন উপায় আমার জানা নেই। আপনার হোটেল/লজের আশে পাশেই কিছু হুন্ডি বিজনেস পেয়ে যাবেন। বাংলাদেশে তাদের একাউন্টে কেউ টাকা জমা দিবে, ৩০ মিনিট হতে ১ ঘন্টার মধ্যে আপনি তাদের কাছ থেকে টাকা তুলে যায়। কিন্তু এটি বৈধ প্রক্রিয়া নয়।

ভিসা সংক্রান্তঃ
*****************************
মেডিক্যাল ভিসা নিয়ে ভ্যালরে চিকিৎসা করতে আসুন। চিকিৎসা সম্পূর্ণ হবার পূর্বে আপনার ভিসার মেয়াদ শেষ হলে আপনার ডাক্তারের রিকমেন্ড লেটার নিয়ে সিএমসি এর আইআর অফিসে যাবেন।সেখান হতে রিকমেন্ড লেটার নিয়ে ভ্যালর এসপি অফিসে অতিরিক্ত সময় স্টে করার অনুমতি নিন। মেডিক্যাল ভিসা ছাড়া অন্য ভিসায় আপনি এই সুযোগ পাবেন না। অনুমতি ছাড়া ওভার স্টে করলে আপনাকে কিন্তু ভাল ঝামেলাই পড়তে হবে। তাছাড়া অনেক হাসপাতালেই মেডিক্যাল ভিসা ছাড়া চিকিৎসা করলেও সার্জারী করবেনা। এদানিং সিএমসি এর কোন কোন বিভাগ মেডিক্যাল ভিসা ছাড়া সার্জারী করছে না।
*** সরকারী চাকরিজীবিদের জন্য মেডিক্যাল কারন দেখিয়ে লিভ পাওয়া খুব কঠিন। যারা ভ্রমনে জিও নিয়ে ভারতে গিয়ে চিকিৎসা করছেন তারা মনে রাখবেন জিও দিয়ে সর্বচ্চ ৪৫ দিন বিনা ভিসায় ভারতে অবস্থান করা যায়।
কিছু টিপসঃ
** রোগী হিন্দি/ইংরেজীতে কথা বলতে না জানলে এটেন্ডেন্ট হিসেবে হিন্দি বা ইংরেজীতে কথা বলতে পারে এমন কাউকে সাথে নিয়ে যাবেন।
** অপারেশনের দরকার হলে মহিলা এটেন্ডেন্ট নিয়ে যাবেন। হাসপাতালে রাতে রোগীর সাথে শুধু মহিলা থাকতে পারবে। মহিলা নিয়ে না গেলে নার্সদেরকে বলে আপনাকে একজন আয়া নিতে হবে। আয়ার চার্জ প্রতিদিন ২০০ রুপি।
** হাসপাতালে ডাক্তারের অফিস, ল্যাব, ফার্মেসি, কোন বিল্ডিং বা যে কোন স্থান খুজে পেতে সিকিউরিটি গার্ডের সাহায্য নিন। চারিদিকি সিকিউরিটি গার্ডের লোকেরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এবং কোন স্থান খুঁজে পেতে তারা দারুন সাহায্য করে।
** যে কোন তথ্যের প্রয়োজন হলে নিঃসংকচে পোস্টে কমেন্ট অথবা লেখককে মোবাইল(০১৮১৬৭১২৬২২, ০১৭৮০১৬৮৮৬৫) করতে পারেন।
• লেখকের অনুমতি ছাড়া এই লেখা কোথাও কপি পেস্ট করা যাবে না। কেউ করলে আইনুনাগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
লেখক – মোঃ মনিরুল ইসলাম মিলন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Please disable your adblocker or whitelist this site!