আপনি যদি চিকিৎসার জন্য ইন্ডিয়া যেতে যান তাহলে আপনার দরকার হবে ‘ইন্ডিয়ান মেডিকেল ভিসা‘। কারন টুরিস্ট ভিসায় সাধারণত নরমাল চিকিৎসা যেমন ডাক্তার দেখানো বা কিছু টেস্ট ইত্যাদি করাতে পারবেন। তবে বড় ধরনের চিকিৎসা যেমন অপারেশন ইত্যাদির জন্য মেডিকেল ভিসা আবশ্যক। যদিও টুরিস্ট ভিসার আবেদনের অনেক তথ্য পাওয়া যায় তথাপি মেডীকেল ভিসার সম্পুর্ন তথ্য একটু কম পাওয়া যায়। তাই আমি এখানে ভারতীয় মেডিকেল ভিসার জন্য করনীয় সব বিষয়গুলো এখানে তুলে ধরব।
ভারতীয় মেডিকেল ভিসার আবেদনের প্রক্রিয়া সব প্রায় টুরিস্ট ভিসা আবেদনের মতই তবে দুটো ডকুমেন্ট এক্সট্রা লাগে।
তাই সবার শুরুতেই আপনাকে বলব আপনি আগে আমার টুরিস্ট ভিসা নিয়ে পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। কারণ বেশিরভাগ বিষয় একই হওয়াতে আমি আবার এখানে লিখছি না। শুধু যেখানে যেখানে পার্থক্য সেগুলো এখানে লিখব।
ভারতীয় ভিসা আবেদনের বিস্তারিত নিয়ম
প্রাথমিক বিষয়
প্রথমেই একটি বিষয় জেনে নেওয়া যাক যে ইন্ডিয়ার ডাক্তার দেখাতে কিন্তু রোগি একা যান না। সাধারণত রোগি যাবেন ও সাথে এক বা একাধিক সঙ্গী যাবেন যাদেরকে ‘মেডিক্যাল এটেন্ডেন্ট’ বলা হয়ে থাকে। এদের সবারই ভিসা লাগবে। রোগীর ভিসা হবে ‘মেডিকেল ভিসা’ Visa Type: MED আর এটেন্ডেন্টদের ভিসা হবে ‘মেডিক্যাল এটেন্ডেন্ট’ Visa Type: MEDx.
সবারই ভিসা আবেদন করতে হবে। এক্ষেত্রে এটেন্ডেন্ট যে কেউ ভিসা আবেদন জমা দিতে পারবে। রোগীর নিজে গিয়ে জমা দিতে হবে না।
ভারতে মেডিকেল ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
এখানে ভারতীয় মেডিকেল ভিসার আবেদন করতে যেসব কাগজপত্র লাগবে তা এখানে দিচ্ছি।
- পাসপোর্ট
- এককপি ২x২ ইঞ্চি মাপের প্রিন্টেড ছবি ও আরেকটি সফট কপি (শুধু অনলাইন আবেদনের সময় লাগবে)
- পুরনকৃত ফর্ম (প্রিন্টেড)
- স্মার্ট কার্ড/এনআইডি অথবা জন্ম সনদের ফটোকপি
- ইউটিলিটি বিলের ফটোকপি (বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস বা টেলিফোন বিল)
- পেশার প্রমাণপত্র (বেসরকারি চাকুরিজীবি হলে NOC, সরকারি চাকুরিজীবি হলে NOC/G.O>., ছাত্র হলে আইডি কার্ড বা বেতনের রশিদ, ব্যাবসায়ী হলে ট্রেড লাইসেন্স এর ফটোকপি, আর পেশা কৃষি হলে জমির খতিয়ানের ফটোকপি)
- ব্যাংক স্টেটমেন্ট, ডলার এনডোর্সমেন্ট অথবা ইন্টারন্যাশনাল কার্ডের কপি
- পাসপোর্ট এর ডাটা পেইজের ফটোকপি (ছবির পাতা)
- সর্বশেষ ইন্ডিয়ান ভিসার ফটোকপি (যদি থাকে)
- অন্য কোন সাপোর্টিং কাগজ যদি দিতে চান।
- পূর্ববর্তি সকল পাসপোর্ট। যদি পুরাতন পাসপোর্ট থাকে তাহলে অবশ্যই দিতে হবে। আর হারিয়ে গেলে জিডি কপি ও লস্ট সার্টিফিকেট দিতে হবে।
- ভারতে ডাক্তারের এ্যাপোয়মেন্ট লেটার (তারিখসহ)
- সকল প্রেসক্রিপশন ও রিপোর্ট এর ফটোকপি ও মেইন কপি
সুতরাং দেখতেই পাচ্ছেন কি কি লাগবে। এখানে শুধু ডাক্তারের এপোয়েন্মেন্ট লেটারটা আপনাকে ম্যানেজ করতে হবে। আপনি কোন হাঁসপাতালে কোন ডাক্তার দেখাতে চান সেগুলা জানা থাকলে নিজেই হয়ত অনলাইনে এপোয়েন্মেন্ট নিতে পারেন। আর তা না পারলে কোন কম্পিউটারের দোকানে গেলে ওরা ম্যানেজ করে দিবে।
আর মেডিক্যাল এটেন্ডেন্ট ভিসার জন্য ১১ নম্বর পর্যন্ত কাগজগুলো লাগবে। আর একটা ভিসা লেটার লাগবে ইন্ডিয়ান হাইকমিশনারকে এড্রেস করে, যে আপনি আপনার অমুক রোগির এটেন্ডেন্ট হিসেবে ভিসা চাচ্ছেন। এই লেটারে রোগির পাসপোর্ট নাম্বার ইত্যাদি উল্লেখ থাকবে। এইটাও কম্পিউটারের দোকানে গেলে পাবেন। না হলে নিজেই করে নিতে পারেন।
১. ভারতীয় মেডিকেল ভিসার আবেদন ফরম প্রস্তুত করা
এখানে শুধু আবেদনের শুরুতে মেডিকেল ভিসার জন্য মানে রোগীর আবেদনের জন্য ‘Visa Type’ ‘MEDICAL VISA‘ সিলেক্ট করবেন ও মেডিক্যাল এটেন্ডেন্ট এর জন্য ‘Medical Attendant‘ সিলেক্ট করবেন। বাকি সব ট্যুরিস্ট ভিসার মতই।
ইটোকেন
এখন কোন কেন্দ্রেই সব ধরণের ভিসার জন্য ইটোকেন লাগে না।
কত সময় লাগে?
কাগজপত্র ঠিক থাকলে সাধারণত এক সপ্তাহেই পাসপোর্ট ফেরত পাবেন। আমার এক ভাই গত ২৬.০৯.২০১৮ এ তার ও তার বাবার জন্য ভিসা আবেদন জমা দিয়ে ৬ দিন পর ০১.১০.২০১৮ এ পাসপোর্ট ফেরত পেয়েছেন। দুজনেরই ভিসা হয়েছিল।
আশা করি ইন্ডিয়ান মেডিকেল ভিসা আবেদন সম্পর্কে আপনাদের সকল প্রশ্নের উত্তর দিতে পেরেছি। তারপরেও আরো কোন প্রশ্ন থাকলে করুন। আমি উত্তর দিব। প্রশ্নের জন্য সাইটের মেইন কমেন্ট বক্সে প্রশ্ন করলে আমার কাছে ইমেইলে নোটিফিকেশনে আসবে তাই দ্রুত উত্তর দিতে পারব। আর ফেসবুক কমেন্ট করলে আমাকে ম্যানুয়্যালি চেক করতে হয়, তাই একটু দেরি হতে পারে।
আর আপনার কাছে যদি আপডেট তথ্য থাকে অথবা কোন তথ্য ভুল মনে হয় তাহলে দয়া করে কমেন্ট করে জানান, আমি আপডেট করব। এতে সবারই উপকার হবে। আমি উপযুক্ত ক্রেডিট দেয়ার চেষ্টা করব।
অনেক ধন্যবাদ কষ্ট করে পড়ার জন্য।
সূত্র : নির্বোধ ডটকম