Thursday, May 2
Shadow

এবার আশা করা যায় নতুন পরিচয় দাঁড়িয়ে যাবে : মিথিলা

মিথিলা

যেমন আছেন মিথিলা

কিছুদিন আগে মুক্তি পেয়েছিলো রাফিয়াত রশীদ মিথিলা অভিনীত স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘মুখোমুখি’। এই ছবি ছাড়াও সমসাময়িক বিভিন্ন ইস্যুতে তাঁর সঙ্গে কথা হলো..

মা ও মেয়ে অফিস থেকে ফিরছিলেন। পাঁচ বছর বয়সী মেয়ে আইরা তাহরিম খান অফিসে কী করে? ‘ওর স্কুল না থাকলে প্রায় প্রায়ই আমার সঙ্গে অফিসে যায়। অফিসে সেই পরিবেশটাও আছে। আমার কলিগরা তো ওর বেশ ভালো বন্ধু। আমি কাজ করতে থাকি। ও ওর মতো ঘুরতে থাকে, খেলতে থাকে। আবার একসঙ্গে মা-মেয়ে বাসায় ফিরি’—বললেন মিথিলা।

মা-মেয়ের রসায়ন বেশ। মায়ের মন খারাপ থাকলে মেয়েরও মন খারাপ হয়। নেচে-গেয়ে মায়ের মন ভালো করার চেষ্টা করে।

আরো পড়ুন : অনেক প্রস্তাব পেলেও ‘হ্যাঁ’ বলিনি : মৌ

কাজের সুবাদে প্রায়ই দেশ-বিদেশে ঘুরতে হয় মিথিলাকে। আইরা তখন মায়ের সফরসঙ্গী হয়। উগান্ডা, তানজানিয়া, চীনসহ অনেক দেশ ঘোরা হয়ে গেছে এরই মধ্যে। মেয়ের কারণেই অভিনয়ে আগের চেয়ে বেশি অনিয়মিত মিথিলা। বলেন, ‘অফিস শেষ হলে সোজা বাসায় মেয়ের কাছে চলে যাই। যে কারণে শুটিং বা অন্য কাজ সন্ধ্যার পরও রাখা সম্ভব হয় না। তা ছাড়া আমি তো এমনিতেই কম কাজ করি। অভিনয়ের পাশাপাশি অফিস নয়, অফিসের পাশাপাশি অভিনয় করি।’

বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ব্র্যাকে নারী শিক্ষা ও শিশু উন্নয়ন নিয়ে কাজ করছেন দীর্ঘদিন ধরে। বর্তমানে এই কার্যক্রমের প্রধান ব্যক্তি তিনি। সপ্তাহে পাঁচ দিন অফিস। শুক্র-শনিবারে টুকটাক অভিনয় বা উপস্থাপনা করেন। বাংলাভিশনের জনপ্রিয় অনুষ্ঠান ‘আমার আমি’ উপস্থাপনা করছেন। এ কাজটাই করছেন নিয়মিত। উপস্থাপনা কেমন উপভোগ করছেন? ‘আমি জাস্ট গল্প করি। আড্ডা মারি অতিথিদের সঙ্গে। যাঁরা আসেন, তাঁদের নিয়ে আমারও অনেক কৌতূহল থাকে। সেসব প্রশ্ন করি। এটা এমন নয় যে আমার খুব একটা স্ক্রিপ্ট মুখস্থ করে উপস্থাপনা করা হয়। সেটা হলে আমি রিলাক্সে কাজটা করতেও পারতাম না’—বললেন মিথিলা।

উপস্থাপনা করতে গিয়ে মজার অনেক অভিজ্ঞতা হয়। তবে যেটা তিনি জীবনে ভুলতে পারবেন না, আইয়ুব বাচ্চুর সাক্ষাৎকার নেওয়ার ঘটনা। বাচ্চু মারা যাওয়ার দেড় সপ্তাহ আগে অনুষ্ঠানটির শুটিং হয়। এটিই প্রয়াত সংগীত তারকার দেওয়া সর্বশেষ ইন্টারভিউ। ‘জানি না এটা আমার সৌভাগ্য নাকি দুর্ভাগ্য! কিন্তু বাচ্চু ভাইয়ের সঙ্গে যে সময় কাটানোর সুযোগ পেয়েছি, তার জন্য আমি গর্বিত। এটা সারা জীবনের একটা স্মৃতি হয়ে থাকবে। আমার উপস্থাপনায় প্রথম পর্বটা ছিল অর্ণবের সঙ্গে। সেটাও স্পেশাল। আমাদের ছোটবেলার স্মৃতি রোমন্থন করেছি। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সবাই জেনেছে, অর্ণব আমার ফুফাতো ভাই। শৈশবে আমরা একসঙ্গে অনেক সময় কাটিয়েছি। অবশ্য ও তো পরবর্তী সময়ে ভারতে পড়াশোনার জন্য চলে যায়।’

আরো পড়ুন : ফুসফুসের ক্যান্সার ছড়ানো প্রতিরোধ করে মরিচ: গবেষণা

‘আমার আমি’র এক পর্বে উপস্থিত হয়েছিলেন দীর্ঘদিনের বন্ধু জন কবির। অনুষ্ঠানের ফাঁকে তোলা একটি ছবি ভাইরাল হয়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। তা নিয়ে বলেন, ‘কিছুই বলার নেই। আমি স্পিচলেস। আমি অবাক হয়েছি। এটা কি জনের সঙ্গে আমার জীবনের প্রথম ছবি? এটা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় কত ট্রল, কথাবার্তা—খুবই বিরক্তিকর। যাদের কাজ নেই, তারাই এসব নিয়ে মাথা ঘামায়।’

গত সপ্তাহে প্রকাশ পায় মিথিলা অভিনীত স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘মুখোমুখি’। গত বছর মার্চে শুটিং হয় পার্থ সেনের এই ভারতীয় ছবির। তাঁর সহশিল্পী সব্যসাচী চক্রবর্তীর ছেলে গৌরব চক্রবর্তী। ছবিতে মিথিলার অভিনয়ের প্রশংসা করেছেন অনেকেই। মিথিলা বলেন, ‘আমি নাটকে অভিনয় করি। কাজটা হাতে নেওয়ার আগে ভাবিনি এটা ফিল্ম নাকি শর্ট ফিল্ম। গল্পটা শুনেছি আগে, খুবই ভালো লেগেছে। ঢাকার বাইরে গিয়ে অভিনয় করার অভিজ্ঞতা আমার নেই বললেই চলে। প্রথমবার কলকাতায় গিয়ে অভিনয় করলাম। ওখানকার কলাকুশলীদের সঙ্গে কাজ করার আগ্রহ ছিল। দুই দিনের জন্য গিয়ে শুটিং করে এলাম।’ বললেন গৌরবকে নিয়েও, ‘খুবই শান্তশিষ্ট লক্ষ্মী একটা ছেলে। বয়সে আমার ছোট। কাজটা খুব মনোযোগ দিয়ে করে। খুব বেশি কথা বলে না, আবার ফ্রেন্ডলিও। এত বড় অভিনেতার ছেলে, কিন্তু কোনো অহংকার নেই।’

২০১৮ সালে এই ছবির শুটিংয়ের উছিলায় জীবনে প্রথমবার ভারতে গেলেন। কাকতালীয়ভাবে গত বছর আরো দুইবার অফিসের কাজে তাঁকে সেখানে যেতে হয়েছে। ‘ভারতে গিয়ে খুব ভালো লেগেছে আমার। অনেক কিছু দেখার আছে ওখানে। প্ল্যান করি ফুল ফ্যামিলি নিয়ে যাওয়ার। গত বছরের শেষের দিকে সময় মিলল সবার। অত বড় দেশ তো একবারে ঘোরা সম্ভব নয়। এবার গিয়েছিলাম জয়পুর, আগ্রা, দিল্লি, কলকাতা। ভাই-বোনরা, মা-বাবা, পরিবারের নতুন সদস্য ইরেশ যাকের [বোন মিম রশীদের স্বামী]—বিশাল টিম নিয়ে গেছি’, বললেন মিথিলা।

করপোরেট চাকরিজীবী, অভিনেত্রী, গায়িকা, মডেল—অনেক পরিচয় তাঁর। একটা সময় ছবিও আঁকতেন। কিন্তু মিথিলার লেখালেখির খবর জানেন কয়জন? বললেন, ‘বাচ্চাদের জন্য একটা গল্পের বই লিখেছি। এবারের বইমেলায় প্রকাশ করার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু কয়েকজন প্রকাশকের সঙ্গে কথা বলে বোঝা গেল, প্রসেসিংটা এত সহজ নয়। দেখি কবে প্রকাশ করতে পারি। মেয়ের জন্য বিভিন্ন সময় গল্পের বই কিনতে গিয়ে লেখার তাগিদটা আসে। আর আমি কিন্তু ছোটবেলা থেকেই গল্প, কবিতা লিখি। হয়তো ওভাবে সেটা প্রকাশ করা হয়নি। এবার আশা করা যায় লেখিকার পরিচয় দাঁড়িয়ে যাবে।’

https://www.youtube.com/watch?v=r0t64gzuqtg

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Please disable your adblocker or whitelist this site!

error: Content is protected !!