Monday, December 23
Shadow

মিয়ানমারের সঙ্গে সংঘাতে জড়াব না : প্রধানমন্ত্রী

মিয়ানমারের সঙ্গে সংঘাতে না জড়িয়ে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর প্রচেষ্টা বাংলাদেশ অব্যাহত রাখবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর শেরেবাংলানগরে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় পরিদর্শনে গিয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়ে তিনি এ কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘যেহেতু তারা আমাদের একেবারে প্রতিবেশী, সেহেতু আমরা তাদের সঙ্গে সংঘাতে যাব না। বরং তাদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে তাদের নাগরিকদের যেন তারা ফিরিয়ে নিয়ে যায় সেই প্রচেষ্টাই আমাদের অব্যাহত থাকতে হবে। আমি সবাইকে অনুরোধ করব যেন সেভাবে সকলে দায়িত্ব পালন করেন।’

মানবিক কারণেই রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের নিজেদের অভিজ্ঞতা আছে। একাত্তর সালে এক কোটি মানুষ শরণার্থী হিসেবে ছিল। কাজেই তাদের (রোহিঙ্গা) পুনর্বাসন করতে হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘মিয়ানমারের সঙ্গে আমরা ঝগড়া বাধাতে যাইনি। আমরা আলোচনা করেছি। আমরা চুক্তি সম্পন্ন করেছি এবং আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে তাদের দেশে ফেরত পাঠানোই আমাদের লক্ষ্য। সেই লক্ষ্য নিয়ে আমরা এখনো কাজ করে যাচ্ছি।’

তবে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি শান্তিপূর্ণ হলেও কেউ আক্রমণ করলে তার জবাব দেওয়ার মতো প্রস্তুতিও থাকতে হবে বলে মন্তব্য করেন সরকারপ্রধান। তিনি বলেন, ‘আমরা শান্তি চাই, শান্তিপূর্ণ পরিবেশ চাই। কিন্তু কেউ যদি আমাদের আক্রমণ করে তার যেন যথাযথ জবাব আমরা দিতে পারি আর আমাদের দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব যেন রক্ষা করতে পারি, সেই প্রস্তুতিটা সব সময় আমাদের থাকতে হবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘অন্তত আমি এটুকু বলব যে আমরা কারো সাথে যুদ্ধ করব না বা যুদ্ধ করতে চাই না। জাতির পিতা যে নীতিমালাটা দিয়ে গিয়েছিলেন যে, সকলের সাথে বন্ধুত্ব কারো সাথে বৈরিতা নয়। আমরা সেই নীতিতেই বিশ্বাস করি এবং সেই নীতিমালা নিয়েই কিন্তু চলছি।’

কারো সঙ্গে কোনো সমস্যা থাকলে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করা হয় জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী মিয়ানমার ও ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমা নিয়ে সমস্যা সমাধানের প্রসঙ্গ তোলেন। তিনি বলেন, ‘দুটি দেশই আমাদের বন্ধুপ্রতিম দেশ। বন্ধুপ্রতিম দেশের সঙ্গে বন্ধুত্ব রক্ষা করে তাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করে সেখানে আবার জয়ী হওয়া; এটা আমাদের কূটনৈতিক বা টেকনিক্যাল দিক থেকে ক্রিটিক্যাল ছিল। খুব একটা কঠিন দায়িত্ব ছিল। সেটা আমরা করতে পেরেছি।’

শান্তি রক্ষার জন্যও প্রস্তুতি থাকা দরকার বলে মনে করেন শেখ হাসিনা। বিশ্বে প্রযুক্তি ও যুদ্ধাস্ত্রের প্রতিনিয়তই পরিবর্তন হওয়ার কথা উল্লেখ করে শান্তি মিশনে যাওয়া বাংলাদেশিদের যুগোপযোগী থাকার কথাও বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের যারা সেখানে যাবে সব বিষয়ে তারা পারদর্শী থাকবে সেটাই আমি চাই। এটা একান্তভাবে দরকার, সেই ধরনের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা, সরঞ্জামাদি সংগ্রহ করা এবং উপযুক্ত করে গড়ে তোলা।’

প্রতিরক্ষা নীতিমালা, ফোর্সেস গোল ২০৩০ প্রণয়ন করা হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রতিটি ক্ষেত্রেই আমাদের একটি সুষ্ঠু পরিকল্পনা আছে। সেটি নিয়েই আমরা এগোতে চাই।’

ভারপ্রাপ্ত সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. শামছুল হক, নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল আওরঙ্গজেব চৌধুরী, বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল মাসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজিবিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ, প্রতিরক্ষা সচিব আখতার হোসেন ভূইয়াসহ সামরিক ও বেসামরিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Please disable your adblocker or whitelist this site!