class="post-template-default single single-post postid-1835 single-format-standard wp-custom-logo group-blog vl-boxed aa-prefix-matin-">
Shadow

মেঝেতে মায়ের দেহ, ফ্যানে ঝুলছে বাবা, ঘরে অঝোরে কেঁদে চলেছে শিশু

ঘরের দরজা বন্ধ। সাড়ে ১০টা বেজে গিয়েছে। ভেতর থেকে ভেসে আসছে সাড়ে তিন বছরের শিশুপুত্রের টানা কান্নার আওয়াজ।

পাড়া প্রতিবেশীদের সন্দেহ হয়। কারণ ওই বাড়ির বাসিন্দা দম্পতির নিজেদের মধ্যে সম্পর্ক ভাল নয়, তা এলাকার সবাই জানতেন। তাই সন্দেহ নিয়েই তাঁরা ছুটে যান।

বার বার কলিং বেল বাজালেও কোনও সাড়া পাননি কেউ। কেবলই শিশুর কান্নার আওয়াজ। বাইরে থেকে ওই শিশুর সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেন তাঁরা। শিশুটি ভিতর থেকে আধো আধো কথায় বলে, ‘‘মা-বাবা কথা বলছে না।’’

শুক্রবার সকালে আর দেরি করেননি বরাহনগর নিরঞ্জন সেন নগরের বাসিন্দা সুদীপ দেব এবং সঙ্গীতা দেবের প্রতিবেশীরা। তাঁরাই উদ্যোগ নিয়ে দরজা ভাঙেন। খবর দেওয়া হয় থানায়। দরজা ভাঙতেই তাঁরা যা দেখেন সেটার জন্য আদৌ কেউ প্রস্তুত ছিলেন না।

 অনলাইনে ঘরে বসে আয় করতে এখানে ক্লিক করুন। ব্রাউজারটি ইন্সটল করুন।  

ঘরের মধ্যে তখন মেঝেতে শিশুটি কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে পড়েছে। পাশে মেঝের ওপর খাটের তলায় পাশ ফিরে শুয়ে আছে শিশুটির মা সঙ্গীতা। আর ঠিক পাশেই সিলিং পাখা থেকে ঝুলছে সঙ্গীতার স্বামী সুদীপের দেহ। গলায় ওড়নার ফাঁস।

সঙ্গীতার দেহ নিথর, বরফের মত ঠান্ডা। বুঝতে বাকি থাকে না প্রতিবেশীদের যে সঙ্গীতা অনেক ক্ষণ আগেই মারা গিয়েছেন। ওই বাড়ি থেকে তিনটে বাড়ি পরেই থাকেন সুদীপের মা-দিদি। তাঁরাও ছুটে আসেন।

প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের অনুমান, ওই দম্পতি আত্মঘাতী হয়েছেন। এক তদন্তকারী অফিসার বলেন, “সঙ্গীতার দেহে কোনও আঘাতের চিহ্ন নেই। কিন্তু, মুখ দিয়ে ফেনা বেরোচ্ছিল। মনে হচ্ছে তিনি সম্ভবত বিষাক্ত কিছু খেয়েছিলেন।” যদিও সঙ্গীতার পরিবারের অভিযোগ, তাঁকে শ্বাসরোধ করে খুন করেছেন সুদীপ এবং তার পর নিজে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। পুলিশ এখনও নিশ্চিত নয় কার আগে মৃত্যু হয়েছে। ব্যারাকপুর কমিশনারেটের এক আধিকারিক বলেন, “দেহ ময়নাতদন্ত হলে বিষয়টি স্পষ্ট হবে।” তবে ঘটনাস্থল থেকে কোনও সুইসাইড নোট পায়নি পুলিশ।

দম্পতির পরিবারের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ জানতে পেরেছে সাত বছর আগে সঙ্গীতা এবং সুদীপের বিয়ে হয়। কিন্তু সম্প্রতি তাঁদের মধ্যে সম্পর্ক খুব একটা ভাল ছিল না। অণিমা সাহা নামে এক প্রতিবেশী বলেন, “সঙ্গীতা সন্দেহ করত সুদীপের অন্য কোনও মহিলার সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক আছে। এই নিয়ে দু’জনের ঝামেলা লেগেই থাকত।”

সুদীপের মা গৌরীর পাল্টা অভিযোগ, সঙ্গীতাই বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন। তা নিয়েই অশান্তির শুরু। সেই অশান্তি এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে বৃহস্পতিবার রাতে দু’পরিবারের লোকজন এবং পাড়ার কিছু বয়স্ক মানুষকে নিয়ে মিটমাটের জন্য শালিশি সভা হয়। সেখানে ওই দম্পতি নাকি ঠিক করেন যে আপাতত তাঁরা এক বাড়িতে থাকলেও তাঁরা আলাদা রান্না করে খাবেন। রাতে যখন দম্পতি বাড়ি ফেরে তখনও তাঁদের পরিবারের কেউ বুঝতে পারেননি যে ওটাই ওই দম্পতির শেষ রাত হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Please disable your adblocker or whitelist this site!