Monday, December 23
Shadow

‘প্রত্যাবর্তন’ সৌদি যুবরাজের

বাণিজ্যিক সম্পর্ক, জলবায়ু পরিবর্তন ও ইউক্রেন ইস্যুতে বিশ্বনেতাদের মতবিরোধের মধ্য দিয়ে আর্জেন্টিনায় শুরু হয়েছে দুই দিনব্যাপী জি-২০ সম্মেলন। জোটের ঐক্য নষ্টের অভিযোগে গত শুক্রবার সম্মেলনের প্রথম দিনই তোপের মুখে পড়েন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

অন্যদিকে এই সম্মেলনের মধ্য দিয়ে বিশ্বনেতাদের সঙ্গে অনেক দিন পর বসার সুযোগ পেলেন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান, যিনি সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যার ঘটনায় মাস দুয়েক ধরে ‘জনবিচ্ছিন্ন’ ছিলেন।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও ১৯ দেশের এ বাণিজ্যিক জোটের এটি ১৩তম সম্মেলন। বিশ্লেষকরা বলছেন, এর আগের কোনো সম্মেলনে জোটের নেতাদের মতবিরোধ এত তীব্র আকার ধারণ করেনি। এমনকি ২০০৮ সালে প্রথম সম্মেলনের সময় বিশ্ব অর্থনীতিতে প্রচণ্ড মন্দা অবস্থা চললেও জি-২০ নেতাদের সম্পর্কে এতটা তিক্তটা দেখা যায়নি।

সম্মেলনের শুরুতেই তোপের মুখে পড়েন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সমালোচনা হয় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে নিয়েও। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁর কারণে জোটের ঐক্য নষ্ট হয়েছে। তবে কানাডা ও মেক্সিকোর সঙ্গে নতুন চুক্তি করায় ট্রাম্পকে সাধুবাদও জানান কেউ কেউ। এই চুক্তির পাশাপাশি চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের চলমান বাণিজ্য যুদ্ধকেও নিজের জয় মনে করেন ট্রাম্প।

সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিংও। তিনি বলেন, ‘বাণিজ্যিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে জোটের নেতাদের আরো উদার হতে হবে। দায়িত্বশীল হতে হবে বিশ্ব অর্থনীতি নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে।’ এদিকে ইউক্রেনের তিনটি জাহাজ জব্দ করায় পুতিনের সমালোচনা করেন অনেক নেতা। তাঁদের মধ্যে ইউরোপিয়ান কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টাস্ক সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ইউক্রেনের জাহাজ জব্দের ঘটনায় রাশিয়ার ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ হতে পারে।

জি-২০ সম্মেলনের মধ্য দিয়ে মাস দুয়েক পর ‘জনসমক্ষে’ এলেন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। গত ২ অক্টোবর সাংবাদিক জামাল খাশোগি খুন হওয়ার পর এটাই ছিল দেশের বাইরে কোনো সম্মেলনে যুবরাজের প্রথম অংশগ্রহণ। শুক্রবারের সম্মেলনে নির্ধারিত ফটোসেশনের পরই যুবরাজের সঙ্গে করমর্দন করেন পুতিন। এ সময় ট্রাম্পের চেহারা অনেকটা মলিন ছিল। চিনপিংকে মনে হয়েছে নির্বিকার।

সম্মেলনে অবশ্য খাশোগি হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি তোলেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ ও যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে। জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে টাস্ক স্বীকার করেন, এ ধরনের ইস্যুতে যখন ট্রাম্প ‘একলা চলো’ নীতির কথা বলেন, তখন সেই ইস্যু মোকাবেলা করা সত্যিই অনেক কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।

এদিকে বুয়েনস এইরেসে যখন বিশ্বনেতাদের বৈঠক চলছিল, তখন সেখানকার রাজপথে বিক্ষোভ করছিল তরুণরা। বিক্ষোভকারীরা আর্জেন্টিনার পাশাপাশি ডোনাল্ড ট্রাম্প ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কঠোর সমালোচনা করে। তারা বলে, যেখানে আর্জেন্টিনার হাজারো তরুণ বেকার হয়ে বসে আছে, সেখানে এ ধরনের সম্মেলনের নামে কোটি কোটি ডলার খরচের কোনো মানে হয় না।

সূত্র : এএফপি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Please disable your adblocker or whitelist this site!