শীতে পাওয়া যায় প্রচুর সবজি। শীতের সময় এই সবজি পেতে হলে বপন করতে হবে শীতের আগে। চলুন এর মধ্যে কিছু ফসলের চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে জেনে নিই।
মুলা
মুলা চাষের উপযুক্ত সময় আশ্বিন থেকে কার্তিক পর্যন্ত। জমি একটু উঁচু হতে হবে। বেলে দোআঁশ মাটি মুলা চাষের জন্য বেশি উপযোগী। চাষের জন্য মাটি ভালোভাবে তৈরি করে নিতে হবে। মাটিতে পর্যাপ্ত জৈব সার ব্যবহার করতে হবে। বীজ সাধারণত ছিটিয়ে বা সারিতে বপন করা যায়। সারিতে বপন করলে গাছের যত্ন নিতে সুবিধা হয়। এক সারি থেকে আরেক সারির দূরত্ব হবে ২৫-৩০ সেন্টিমিটার।
পরিচর্যা
বীজ থেকে চারা গজায় খুব দ্রুত। বড়জোর ৩-৪ দিন লাগবে। কিছুদিন পর অতিরিক্ত চারা তুলে পাতলা করে দিতে হবে। গাছ ঘন হয়ে গেলে মুলার বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হবে। মাটিতে যেন পর্যাপ্ত রস থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। প্রয়োজনে সেচ দিতে হবে এবং আগাছা পরিষ্কার করতে হবে। রোগ ও পোকা আক্রমণ করলে ব্যবস্থা নিতে হবে।
গাজর
গাজর প্রায় সারা বছর পাওয়া যায় তবে শীতকালে এর ফলন বেশি হয়। শীতকালীন সবজির মধ্যে গাজর একটি অন্যতম জনপ্রিয় সবজি। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন ও খনিজ লবন। গাজর চাষের জন্য উপযুক্ত সময় আগস্ট থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত।
বীজ বপন পদ্ধতি
গাজর যেহেতু মাটির গভীরে যায় তাই জমিও গভীর করে চাষ করা উচিত। সাধারণত ৮-১০ ইঞ্চি গভীরে চাষ করতে হবে। মাটি ভালোভাবে ঝুরঝুরা করে নিতে হবে। সারিতে চারা বা বীজ বপন করতে হবে। একটি চারা থেকে আরেকটি চারা দূরত্ব হবে ২০ সেন্টিমিটার।
পরিচর্যা
গাজর চাষে মাটিতে প্রচুর জৈব সার দিতে হয়। ভালো ফলন পেতে জমিতে রস থাকতে হবে। কম্পোস্ট ব্যবহার করলে ফলন ভালো হয়। চারা গজানোর পর গাছ বেশি ঘন হয়ে গেলে কিছু তুলে পাতলা করে দিতে হবে। প্রয়োজনে সেচ দিতে হবে।
সরিষা
কেউ চাষ করেন সরিষা বীজের জন্য, কেউ শাকের জন্য। এর জন্য আলাদা জাতের বীজও আছে। সরিষার জন্য দোআঁশ মাটি উপযোগী। সাধারণত অক্টোবরের মাঝামাঝি ও নভেম্বরে শুরুতে এর বীজ বপন করতে হয়। জমি ভালো করে চাষ দিয়ে মাটি ঝুরঝুরে করে বীজ বপন করতে হয়।
পরিচর্যা
জমিতে পর্যাপ্ত সার প্রয়োগ করতে হবে। আগাছা দমন করতে হবে। পোকা আক্রমণ করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।
টমেটো
টমেটো অতি জনপ্রিয় একটি ফল। টমেটো চাষের জন্য সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবর উপযোগী। টমেটো চাষের জন উর্বর দো-আঁশ মাটি উপযু্ক্ত।
পরিচর্যা
টমেটো গাছ প্রচুর খাদ্য গ্রহণ করে থাকে তাই জমিতে পর্যাপ্ত সার থাকতে হবে। প্রয়োজনে পানি দিতে হবে। গাছ সামান্য বড় হলে দুই কাণ্ডের মাঝে গজানো ‘সাকার’ ছেঁটে দিতে হবে।
লিখেছেন দিলরুবা আফরোজ