Monday, December 23
Shadow

স্ট্রোক সারাবে ভেষজ ঔষুধ

স্ট্রোক সারাবে ভেষজ ঔষুধ

এক গবেষণায় দাবি করা হচ্ছে, জিঙ্কো বিলোবা নামের একটি গাছের ভেষজ নির্যাস স্ট্রোক আক্রান্ত রোগীর মস্তিষ্ক আবার কার্যক্ষম করে তুলতে সাহায্য করতে পারে।

ব্রিটেনের কোনো কোনো দোকানে এই ভেষজ ওষুধ পাওয়া যায়।

তবে স্মৃতিশক্তি বাড়াতে এবং অবসাদের চিকিৎসায় চীনে এই ভেষজ ওষুধ ব্যবহার করা হয়।

চীনে ৩৩০ জন স্ট্রোক আক্রান্ত রোগীর ওপর ছয় মাস ধরে এক পরীক্ষামূলক চিকিৎসা চালিয়ে গবেষকরা দেখেছেন অসুখের পর যাদের এই ওষুধ দেওয়া হয়েছে তাদের মস্তিষ্ক ভালো কাজ করতে পারছে।

তবে কোনো কোনো বিশেষজ্ঞ বলছেন ওই রোগীদের মস্তিষ্কের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য জিঙ্কো বিলোবা একা দায়ী কিনা- তা খুব জোর দিয়ে এখনি বলা সম্ভব নয়।

অনলাইন সাময়িকী স্ট্রোক অ্যাণ্ড ভাসকুল্যার নিউরোলজি যেখানে এই গবেষণার খবর ছাপা হয়েছে তারা অবশ্য স্বীকার করেছে এ ব্যাপারে আরো ব্যাপক ও দীর্ঘ সময় নিয়ে পরীক্ষামূলক চিকিৎসা ও গবেষণা চালানো দরকার।

চীনের পাঁচটি হাসপাতাল থেকে রোগীদের নিয়ে নানজিং ইউনিভার্সিটি মেডিক্যাল স্কুলে এই গবেষণা চালানো হয়।

স্ট্রোকে আক্রান্ত হ‌ওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যেই ওই ৩৩০ জন রোগীকে এই ওষুধ খাওয়ানো হয়। এসব রোগীর গড় বয়স ছিল ৬৪। এদের মধ্যে অর্ধেক রোগীকে অ্যাসপিরিন ট্যাবলেটের পাশাপাশি প্রতিদিন জিঙ্কো বিলোবা দেওয়া হয় আর বাকি অর্ধেককে শুধু অ্যাসপিরিন ট্যাবলেট খাওয়ানো হয়।

স্ট্রোকের সময় মস্তিষ্কের গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলোতে রক্তের সরবরাহ ঠিকমত হয় না, যার ফলে স্মৃতি নষ্ট হয় এবং স্ট্রোক থেকে সেরা ওঠা রোগীদের গুছিয়ে ভাবা বা সঠিকভাবে সব কাজ করার ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়।

গবেষকদের উদ্দেশ্য ছিল দেখা যে অ্যাসপিরিন বড়ির সঙ্গে জিঙ্কো বিলোবা খাওয়ালে স্ট্রোকে আক্রান্ত মস্তিষ্কের ক্ষতি সামলে ওঠা সম্ভব হয় কিনা।

এর আগে প্রাণিদের ওপর পরীক্ষায় দেখা গেছে, জিঙ্কো বিলোবা মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বাঁধার কারণে স্নায়ুকোষের মৃত্যু ঠেকাতে পারে। এর কারণ সম্ভবত মস্তিষ্কের ধমনীগুলোতে রক্তপ্রবাহ বাড়াতে সাহায্য করে জিঙ্কো বিলোবা।

গবেষণায় আরো দেখা গেছে, জিঙ্কো বিলোবা খাওয়ার পর রোগী কথা বলার জড়তা দ্রুত কাটিয়ে উঠতে ও পেশির শক্তি অনেক দ্রুত ফিরে পেতে সক্ষম হয়েছে। তবে গবেষকরা স্বীকার করেছেন যথেষ্ট দীর্ঘ সময় তারা রোগীদের পর্যবেক্ষণ করেননি এবং রোগীরা জানতেন কাকে কোন দলে রেখে পরীক্ষামূলক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে, যা হয়তো ফলের  ওপর প্রভাব ফেলে থাকতেও পারে।

জিঙ্কো বিলোবা কী ধরনের গাছ
জিঙ্কো বিলোবা অন্যতম সবচেয়ে প্রাচীন এক প্রজাতির গাছ।

গবেষকরা বলছেন, যে নির্যাস তারা এই গবেষণায় ব্যবহার করেছেন তাতে ক্ষতিকর রাসয়নিকের মাত্রা ছিল আগে ব্যবহার করা নির্যাসের তুলনায় অনেক কম। পরীক্ষার সময় খুবই কম পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া তারা লক্ষ্য করেছেন।

তারা পরীক্ষামূলক চিকিৎসার পর রোগীদের দুই ভাগে ভাগ করে তাদের স্বস্থ্যের অবস্থা প্রায় দুই বছর ধরে পর্যবেক্ষণ করেছেন এবং জিঙ্কো বিলোবা ব্যবহারকারীদের মধ্যে কোনরকম নেতিবাচক ফল দেখেননি বা তাদের উপসর্গ কোনভাবে ফেরত আসেনি।

কিন্তু যাদের শুধু অ্যাসপিরিন বড়ি দিয়ে চিকিৎসা করা হয়েছিল তাদের কারো কারো আবার স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। তবে গবেষকরা বলেছেন তারা এই গবেষণায় যে ফল পেয়েছেন তাতে তারা আশাবাদী এবং এ নিয়ে তারা আরো গবেষণা করতে চান।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Please disable your adblocker or whitelist this site!