মনে করুন, দিনের বা রাতের কোনো একটা সময় একা একা নিজের ঘরে বসে আছেন। বাসার লোকজন অন্য কামরাতে বসে টিভি দেখছে, বই পড়ছে বা কেউ ঘুমাচ্ছে।
এমন অবস্থায় হঠাৎই বুকে প্রচণ্ড ব্যথা শুরু হলো। বিনা দাওয়াতে হাজির মেহমানের মতো নাছোরবান্দা ব্যথাটা যেন আস্তে আস্তে আপনার নিচের চোয়ালের দিকে হেঁচড়ে আসা শুরু করলো! কাছাকাছি কেউ নেই। আপনি বুঝতে পারছেন, হৃদপিণ্ডের ক্রিয়া বন্ধ হবার উপক্রম হয়েছে আপনার। এখন আপনি কী করবেন?!
হার্ট অ্যাটাক হবার ফলে অধিকাংশ সময় মানুষ মারা যান, কারণ, বেশিরভাগ সময়ে দেখা গেছে, অ্যাটাককারীন সময়ে তারা একা থাকেন। অন্য কারো সাহায্য ছাড়া তাদের বুকের ওপর পাম্প করে হৃদযন্ত্রে রক্ত সঞ্চালন সম্ভব হয় না এবং ব্যথা শুরু হবার পরে অজ্ঞান হয়ে যাবার আগ পর্যন্ত সাধারণত তাদের হাতে সময় থাকে মাত্র ১০ সেকেণ্ড।
এমতাবস্থায় বুকে ব্যথার শিকার ব্যক্তি নিজেকে সাহায্য করতে পারেন বারংবার জোরে জোরে উচ্চস্বরে কাশি দিয়ে। সমূহ বিপদ ঠেকাতে এসময় আরও যা যা করতে পারেন-
* লম্বা করে শ্বাস নিন। এবার কাশতে শুরু করুন। কাশি না আসলেও জোর করে কাশুন। লম্বা সময় নিয়ে দীর্ঘ কাশি দিন। এর ফলে আপনার ফুসফুসে স্পাটাম/মিউকাস উৎপন্ন হবে যা সঙ্কট কাটাতে সাহায্য করবে।
*‘শ্বাস–কাশি, শ্বাস–কাশি…’ এই প্রক্রিয়া প্রতি দুই সেকেণ্ডে একবার করে করতে থাকুন, যতক্ষণ না কেউ আপনার সাহায্যে এগিয়ে আসে অথবা যতক্ষণ আপনার হৃদযন্ত্র একা একাই স্বাভাবিকভাবে স্পন্দিত হতে থাকে।
* লম্বা করে শ্বাস নেবার ফলে আপনি পর্যাপ্ত অক্সিজেন পাবেন। আর কাশির ফলে আপনার হৃদযন্ত্র সংকোচন-প্রসারণ হবে যার ফলে আপনার হৃদপিণ্ডের ভেতর দিয়ে রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে।
আর কয়েকবার কাশির ফলে উৎপন্ন সংকোচন-প্রসারণে হৃদযন্ত্রের স্বাভাবিক, স্বয়ংক্রিয় স্পন্দন ফিরে আসার কথা। এরপরে অপর কোনো ব্যক্তির সাহায্যে আপনি হাসপাতালে পৌঁছাতে পারবেন।
যদি আগে জেনে না থাকেন তবে কায়দাটা আপনি এখানে শিখে নিলেন। এখন দয়া করে বাবা-মা, ভাই-বোন, দাদা-দাদি, নানা-নানি, বন্ধু-বান্ধব, সবাইকে শেখান এই কৌশল। কারও সহযোগিতার অভাবে হার্ট অ্যাটাকের শিকার হয়ে যেন আর অসহায়ভাবে মৃত্যুবরণ না করে- এই চেষ্টা করি।