কিছু খাওয়ার আগে বা পরে হাত ধোয়া আমাদের স্বাস্থ্যকর অভ্যাস। কেবল হাতে লেগে থাকা খাবারের অবশিষ্টাংশ পরিষ্কার করতেই নয়, জীবাণু বা কীটনাশক খাবারের সঙ্গে পেটে গিয়ে যাতে আমাদের অসুস্থ না করে, সেই কারণেও ভাল করে হাত ধোয়ার অভ্যাস রপ্ত করানো হয় শিশুদেরও। চিকিৎসকরাও এই স্বাস্থ্যকর বিধিকে রীতিমতো অভ্যাসে পরিণত করতে পরামর্শ দিয়ে থাকেন আমাদের। সাবানের পরিবর্তে আজকাল আমরা অনেকেই লিকুইড হ্যান্ড ওয়াশ এ আস্থা রাখি।
কিন্তু এই হ্যান্ড ওয়াশের মাধ্যমে হাত পরিষ্কার করতে গিয়েই হিতে বিপরীত হচ্ছে না তো? হ্যান্ড ওয়াশ থেকে বড়সড় কোনও অসুখ বাসা বাঁধার সম্ভাবনাকে কিন্তু উড়িয়ে দিচ্ছেন না মার্কিন বিজ্ঞানীরা। তাঁদের মতে, বেশির ভাগ বাজার চলতি লিকুইড হ্যান্ড ওয়াশে ট্রাইক্লোসান ও ট্রাইক্লোকার্বন নামের দু’টি রাসায়নিক উপাদান রয়েছে। যার প্রভাবে শরীরের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। জীবাণু ধ্বংস করতে এই দুই উপাদান খুব কার্যকর বলে দাবি করে হ্যান্ড ওয়াশ প্রস্তুতকারী সংস্থারা, তেমনই ত্বকের জন্য এরা ক্ষতিকারক।
মার্কিন ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের দাবি, শুধু লিকুইড হ্যান্ড ওয়াশেই নয়, একাধিক মাউথ ওয়াশ, টুথপেস্ট ও ডিটারজেন্টেও এই সব ক্ষতিকর রাসায়নিকের উপস্থিতি থাকে। মার্কিন বিশেষজ্ঞদের দাবি, ট্রাইক্লোসান ও ট্রাইক্লোকার্বন মিশ্রিত হ্যান্ড ওয়াশ অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে জন্মাতে পারে ‘ড্রাগ রেজিস্ট্যান্ট জার্ম’— যাদের কোনও ওষুধের দ্বারাই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব নয়।
ত্বক বিশেষজ্ঞ কৌশিক লাহিড়ীও এই দুই উপাদানকে এড়িয়ে চলারই পক্ষপাতী। তাঁর মতে, এই দুই উপাদান ত্বককে খসখসে করে তোলা, ত্বকে নানা প্রদাহের জন্ম দেওয়া ছাড়াও পেটের অসুখের কারণ হতে পারে। অতিরিক্ত ব্যবহারে হাইপোথ্যালামাস ও থ্যালামাসেও সমস্যা তৈরি করতে পারে এই দুই উপাদান।
তা হলে উপায়?
- চিকিৎসকদের মতে, হ্যান্ড ওয়াশ কেনার আগে খুঁটিয়ে দেখে নিন আপনার কেনা হ্যান্ড ওয়াশে এই উপাদানগুলি রয়েছে কি না, থাকলে এড়িয়ে চলুন সে সব হ্যান্ড ওয়াশ।
- প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে পরিবারের জন্য হ্যান্ড ওয়াশ কিনুন।
- মৃদু ক্ষারযুক্ত সাবান ব্যবহার করেও হাত ধুতে পারেন, তা ত্বকের জন্যও উপকারী, জীবাণু নাশ করতেও সক্ষম।
- শিশুদের জন্য হ্যান্ড ওয়াশ কখনওই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কিনবেন না।