Thursday, December 5
Shadow

চাও লি ইং একটি ফুলের নাম

লিখেছেন : লি লি, সিএমজি বাংলা, বেইজিং

বাংলাদেশের দীপ্ত টিভিতে দারুণ জনপ্রিয়তা পেয়েছে চীনা ধারাবাহিক ‘রহস্যময়ী’। এ সিরিজের প্রাণকেন্দ্রে আছেন চীনা অভিনেতা চাও লি ইং। বাংলা ট্রিবিউনের পাঠকদের জন্য বেইজিং থেকে তাকে নিয়ে লিখেছেন চায়না মিডিয়া গ্রুপের সংবাদকর্মী লি লি।

চাও লিইয়িং

চীনা পঞ্জিকায় ২০২৪ সালটা হলো ড্রাগনবর্ষ। কিন্তু চীনের বিনোদনের ক্যালেন্ডারে তাকালে মনে হবে, এ বছরটা চাও লি ইংয়েরও। অভিনয়ে ১৮ বছর পর তার ক্যারিয়ারে একের পর এক ফুটতে শুরু করেছে সাফল্যের ফুল। ‘আর্টিকেল ২০’ ও ‘ওয়াইল্ড ব্লুম’ পিরিয়ড ড্রামার মাধ্যমে হান্ড্রেড ফ্লাওয়ার্স অ্যাওয়ার্ডের সেরা পার্শ্ব অভিনেত্রীর পুরস্কার এবং ফ্লাইং অপসারাস অ্যাওয়ার্ডের শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী ও চায়না টিভি গোল্ডেন ইগল অ্যাওয়ার্ডের সেরা অভিনেত্রী—তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পুরস্কারই জিতেছেন একযোগে।

চাও লি ইংয়ের অভিনীত ‘দ্য আনসিন সিস্টার’ চলতি বছরে টোকিও আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বিতার ইউনিটেও অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।

কোনো কোনো অভিনেত্রীর কর্মজীবনকে তুলনা করা হয় ফুলের সঙ্গে। ফোটে, ঘ্রাণ ছড়ায়, এরপর শুকিয়ে যায়। এমন ফুলের সময়কাল সীমিত। চাও লি ইং এমনটা মানতে রাজি নন। পরিশ্রমের ওপর প্রবল আত্মবিশ্বাসী ৩৭ বছর বয়সী এ অভিনেত্রী বললেন, ‘একটি ছোট ফুল হিসেবে সময়কাল ছোট হতে পারে, কিন্তু ছোট ফুল বড় ফুলেও পরিণত হতে পারে। এমনকি একটা ফুল দেখা গেল আরেকটা ফুলে রূপান্তরিত হলো। সময় মানুষের জন্য উপহার রেখে যায়। তাই বয়সের প্রতিটি ধাপেরই একটা স্বকীয়তা এবং ভূমিকা রয়েছে।’

চীনের বিনোদন জগতে চাওয়ের প্রবেশ সাত বছর বয়সে। এরপর বেশ ক’বছর ধরে সহ-অভিনেত্রীর চরিত্রেই তাকে দেখা যেত বেশি। এ কারণে চাওকে শুরু থেকেই কাঠখড় পোড়াতে হয়েছিল বেশ। এমনও শুনতে হয়েছিল, তার চেহারাটা নাকি প্রধান চরিত্রের জন্য ‘মানানসই’ নয়।

‘ওয়াইল্ড ব্লুম’-এ নজরকাড়া অভিনয়ের জন্য চায়না টিভি গোল্ডেন ইগল অ্যাওয়ার্ডের সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পাওয়ার সময় আবেগাপ্লুত চাও লি ইং বলেন, ‘আমি আশা করি, আমার উপস্থিতি সবার জন্য আশা নিয়ে আসবে।’

‘ওয়াইল্ড ব্লুম’ ধারাবাহিকে দেখানো হয়েছে ৯০’র দশকের ইস্পাত শিল্পের পরিবর্তনের রূপরেখা। সময়ের জোয়ারে একদল সাধারণ মানুষের সংগ্রামকে চিত্রিত করা হয়েছে এতে। এ নাটকে নিজের চরিত্রের রূপায়নের জন্য চাও লি ইং বাড়িয়েছিলেন পাঁচ কেজি ওজন। রূপালী পর্দায় নিজেকে সফলভাবেই শক্তিশালী এক নারীর চরিত্রে উপস্থাপন করতে পেরেছিলেন সহজেই।

চাওয়ের জন্ম ও বেড়ে ওঠা চীনের হ্যবেই প্রদেশের একটি গ্রামে। পেশাগত অভিনয় স্কুলের স্নাতক ছিলেন না তিনি। তবে গোলগাল ফুলের মতো মুখখানা নাটকের দর্শকদের মনে জায়গা করে নিয়েছিল পাকাপোক্তভাবে। অবশ্য, তখন সেই ‘সহ-অভিনেত্রীসুলভ চেহারা’র কারণে পাননি প্রধান চরিত্রের সুযোগ।

চাও জানালেন, সুযোগ না পেলেও তিনি প্রবীণ অভিনয়শিল্পীদের কাজ দেখতেন কাছ থেকে। শিখতেন চুপচাপ। তিনি জানতেন, এই পেশায় খানিকটা ভাগ্যের পাশাপাশি কঠোর পরিশ্রমও গুরুত্বপূর্ণ। এখানে নির্ভর করতে হবে পুরোপুরি নিজের ওপর।

শেষ পর্যন্ত, চাও তার অদম্য সংকল্পের জোরে পরবর্তী প্রতিটি চরিত্রেই প্রতিভার ছাপ রাখতে শুরু করেন। নষ্ট করেননি একটি সুযোগও। ধাপে ধাপে নিজেকে নিয়ে গেছেন মহাতারকার উচ্চতায়।

সামনের দিনগুলো নিয়ে চাও লি ইং বলেন, তিনি আরও কিছু শিখবেন, আরও এগিয়ে যাবেন। সিনেমা, নাটক যাই হোক না কেন, প্রতিটি চরিত্রকে নিখুঁতভাবে ফুটিয়ে তোলাই তার কাছে বড় কথা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Please disable your adblocker or whitelist this site!

error: Content is protected !!