উৎসবের মরশুমে ই-কমার্স সাইটগুলিতে ছাড়ের ছড়াছড়ি। রীতিমতো প্রতিযোগিতা চলছে অনলাইন শপিংয়ের এই সংস্থাগুলির মধ্যে। কিন্তু সস্তায় অনলাইনে কেনাকাটা করতে গিয়ে ভেজাল জিনিস কিনছেন না তো? এমনই প্রশ্ন তুলে দিল ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল অব ইন্ডিয়া (ডিসিজিআই)। অ্যামাজন এবং ফ্লিপকার্টে দেদার নকল এবং ভেজাল প্রসাধনী সামগ্রী বিক্রি হচ্ছে বলে সম্প্রতি দুই ই-কমার্স জায়ান্টকে নোটিস ধরিয়েছে ডিসিজিআই। দশ দিনের মধ্যে জবাব না দিলে আইনি বব্যস্থা নেওয়া হবে বলে দুই সংস্থাকে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
গত ৫ এবং ৬ অক্টোবর দেশের প্রান্তে দুই সংস্থার বেশ কয়েকটি প্যাকেজিং হাবে হানা দেন ড্রাগ ইন্সপেক্টররা। বাজেয়াপ্ত করা হয় প্রায় চার কোটি টাকার ভেজাল ও নকল প্রসাধন সামগ্রী। তার মধ্যে রয়েছে বিদেশি সামগ্রী, যেগুলির আমদানির পর্যাপ্ত নথি নেই। উদ্ধার হয়েছে এমন সামগ্রী, যেগুলি স্থানীয় ভাবে তৈরি করে সাঁটিয়ে দেওয়া হয়েছে নামি সংস্থার লেবেল। আবার অনেক সামগ্রী সম্পর্কে অভিযোগ, সেগুলি ব্যুরো অব ইন্ডিয়ান স্ট্যান্ডার্ডস (বিআইএস)-এর নির্দেশিকা মেনে তৈরি হয়নি।
১৯৪০ সালের ড্রাগ অ্যান্ড কসমেটিকস আইন অনুযায়ী, ভেজাল বা নকল সামগ্রী উৎপাদন, বিক্রি বা সরবরাহ দণ্ডনীয় অপরাধ। অভিযোগ প্রমাণিত হলে মোটা টাকা গুণাগার দিতে হতে পারে দুই সংস্থাকে। পাশাপাশি সংস্থার সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের অননুমোদিত সামগ্রী বিক্রির দায়ে হতে পারে জেল।
ফ্লিপকার্ট-অ্যামাজনের মতো ই-কমার্স সাইটগুলির নিজস্ব কোনও পণ্য নেই বললেই চলে। বিক্রেতা হিসাবে অন্য সংস্থা নিজেদের নথিভুক্ত করে। তার পর নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যাচাইয়ের পর বিক্রির অনুমতি মেলে। ই-কমার্স সাইটগুলি সেই সব পণ্যের অর্ডার নেয়, শিপিং বা ডেলিভারি করে এবং বিক্রির টাকা নিয়ে প্রস্তুতকারক সংস্থাকে তাদের প্রাপ্য মিটিয়ে দেয়। অর্থাৎ ই কমার্স সংস্থাগুলি মিডিলম্যানের কাজ করে থাকে। বিক্রেতা ও ক্রেতার মাঝের এই গোটা প্রক্রিয়ার জন্য নির্দিষ্ট হারে কমিশন নেয় ই-কমার্স সাইটগুলি।
কিন্তু বিক্রিত পণ্য নিয়ে কোনও অভিযোগ উঠলে তার দায় ই-কমার্স সাইটগুলিকেই নিতে হয়। সেই কারণেই এই সাইট দু’টিকে নেটিস ধরিয়েছে ডিসিজিআই। কিছুদিন আগে আরেক ই-কমার্স সাইট ইন্ডিয়া মার্টকেও একই রকম নোটিস দিয়েছিল ডিসিজিআই।