বৌদি বা সাধারণভাবে মধ্যবয়সি মহিলাদের প্রতি আকর্ষণ কমবেশি সব বাঙালি কিশোর-যুবকের মধ্যেই দেখা যায়। কিন্তু এই বৌদি -প্রীতির কারণ কী?
ওবাড়ির ঝুমুর বৌদি ভেজা চুলে বারান্দায় এলেই তাঁর দিকে অপলক নেত্রে চেয়ে থাকে এবাড়ির ক্লাস ইলেভেনের দীপক। পাশের পাড়ার সুনন্দা বৌদির কথা ভেবে ভেবে রাত্রে ঘুম আসে না এই পাড়ার মাধ্যমিক পাশ বান্টির। এইসব ‘বৌদি’ বা সাধারণভাবে মধ্যবয়সি মহিলাদের প্রতি আকর্ষণ কমবেশি সব বাঙালি কিশোর-যুবকের মধ্যেই দেখা যায়। কিন্তু এই বৌদি-প্রীতির কারণ কী?
মনস্তত্ত্ব জানাচ্ছে, বৃহত্তর অর্থে বাঙালি পরিবারের বিশেষ ধরনের গঠনতন্ত্রই যুব সম্প্রদায়ের এই মানসিকতার কারণ। বাঙালি পরিবারতন্ত্রে সন্তানধারনের পরে মহিলাদের সাধারণভাবে একটা সময়পর্ব কাটাতে হয় যৌনতাবঞ্চিত অবস্থায়। স্বামীর সঙ্গে সহবাস সেই সময়ে একরকম নিষিদ্ধ সদ্য মা হওয়া মহিলাদের। এই অবস্থায় মায়ের অবদমিত যৌনাকাঙ্ক্ষা মেটানোর উপায় হয়ে দাঁড়ায় তার সদ্যোজাত পুত্রসন্তান। মা তার ছেলেকে কোলে নিয়ে তার পুরুষাঙ্গে আদর করছেন বা তার পুরুষাঙ্গে চুমু খাচ্ছেন— এই দৃশ্য বাঙালি পারিবারিক পরিসরে অতি সুলভ। একা মা নন, মাতৃসমা অন্য মহিলারা— মাসি বা পিসিরাও একই কায়দায় আদর করেন শিশুপুত্রটিকে।
ছেলেটি তখন এক অদ্ভুত দোটানায় ভুগতে শুরু করে। মায়ের প্রতি তার এক দুর্মর টান গড়ে ওঠে। একই সঙ্গে তার মনের মধ্যে কোথাও একটা এই বোধও জন্ম নেয় যে, তার মা ঠিক যা চাইছে তা তার পক্ষে মেটানোও সম্ভব নয়। মায়ের কাছ ঘেঁষে থাকার পাশাপাশি মায়ের কাছ থেকে দূরে সরে যাওয়ার ইচ্ছেও তার অবচেতন মনে ক্রিয়াশীল হয়।
শৈশবের এই অভিজ্ঞতা বড় হওয়ার পরেও বাঙালি ছেলেদের মানসিকতাকে প্রভাবিত করতে থাকে। মাঝবয়সি মহিলাদের শারীরিক ক্ষুধা অপরিসীম, অতএব নিজের শরীরী চাহিদা মেটানোর পক্ষে তারাই সবচেয়ে সুলভ— এমন ধারণা নিয়েই বড় হয় বাঙালি ছেলেরা। এই মানসিকতা থেকেই গড়ে ওঠে তাদের বৌদি -প্রীতি।
অবশ্য এই বিশেষ ধরনের যৌনচেতনা কেবল বাঙালিদের মধ্যে নয়, ভারতের অন্যান্য সম্প্রদায়ের কিশোর-যুবকদের মধ্যেও দেখতে পাওয়া যাবে। ‘‘তেল ঢাললে আগুন কখনও নেভে না, আর মহিলাদের শরীরী খিদে কখনও মেটে না’’— এই জাতীয় প্রবাদবাক্য সারা দেশেই কম-বেশি প্রচলিত রয়েছে। এর নেপথ্যেও এই বিশেষ যৌন-মানসিকতাই ক্রিয়াশীল।