Tuesday, April 22

ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায় বারবিকিউর ধোঁয়া

হইচই, আড্ডা আর ঝলসানো মাংসের স্বাদ। এ তিন অনুষঙ্গের রসায়নে বাড়ছে তরুণদের মধ্যে বারবিকিউ পার্টির জনপ্রিয়তা। তবে এর কারণে যে বাড়ছে মৃত্যুঝুঁকি, সে বিষয়টি অনেকেরই অজানা। মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর বারবিকিউর ধোঁয়া। এতে পলিসাইক্লিক অ্যারোমেটিক হাইড্রোকার্বন (পিএএইচ) নামে এক ধরনের কারসিনোজেন (ক্যান্সার সৃষ্টিকারী উপাদান) রয়েছে প্রচুর পরিমাণে। শুধু নিঃশ্বাসের সঙ্গে নয়, ত্বকের মধ্য দিয়ে এমনকি গ্রিলড খাবারের মাধ্যমেও মানবদেহে প্রবেশ করতে পারে বারবিকিউ ধোঁয়াসৃষ্ট পিএএইচ। হয়ে উঠতে পারে ঘাতক ব্যাধি ক্যান্সারের কারণ।

ক্যান্সার সৃষ্টিকারী যেকোনো রেডিয়েশনই কারসিনোজেন নামে পরিচিত। ধারণা করা হয়, দেহকোষের বিপাকীয় কার্যক্রম ব্যাহত করা বা জিনোমকে ক্ষতিগ্রস্ত করার মাধ্যমে ক্যান্সার সৃষ্টি করে কারসিনোজেন। আমাদের চোখের সামনে দৃশ্যমান কারসিনোজেনের উদাহরণগুলো হলো— অ্যাসবেস্টস, বিষাক্ত গ্যাস বা তামাকের ধোঁয়া। কারসিনোজেনের বিষক্রিয়া তাত্ক্ষণিক নাও হতে পারে। সেক্ষেত্রে তা ধীরে ধীরে অনেক সময় নিয়েও বিষক্রিয়া ঘটাতে পারে।

দেখা গেছে, বারবিকিউর ধোঁয়ায় পিএএইচ থাকে অত্যন্ত উচ্চমাত্রায়। দেহকোষের ডিএনএতে রীতিমতো মিউটেশন ঘটিয়ে দেয়ার সক্ষমতা রয়েছে উপাদানটির। একই সঙ্গে হয়ে উঠতে পারে শ্বাসনালির রোগব্যাধি, এমনকি ফুসফুসের ক্যান্সারের কারণও। কারসিনোজেন বা ক্যান্সার সৃষ্টিকারী উপাদান হিসেবে এরই মধ্যে বেশ বদনাম কুড়িয়েছে পিএএইচ।

সচেতন অনেককেই তাই এখন বারবিকিউর ধোঁয়ার পাশে মাস্ক পরে বসে থাকতে দেখা যায়। কিন্তু তাতে কোনো লাভ নেই। কারণ চীনা বিশেষজ্ঞদের সাম্প্রতিক এক গবেষণায় উঠে এসেছে, পিএএইচ নামের কারসিনোজেনটি শুধু নিঃশ্বাসের সঙ্গে নয়, ত্বকের মধ্য দিয়েও মানবদেহে উচ্চমাত্রায় প্রবেশ করে। শুধু নিঃশ্বাসের সঙ্গে বা ত্বকের মধ্য দিয়ে নয়, গ্রিলড খাবার খাওয়ার মাধ্যমেও দেহে প্রবেশ করতে পারে পিএএইচ।

তবে ত্বকের মাধ্যমে দেহে পিএএইচ প্রবেশের বিষয়টি অত্যন্ত আশঙ্কাজনক। বিষাক্ত বা দূষিত বায়ু নিঃশ্বাসের সঙ্গে প্রবেশ করে কীভাবে স্বাস্থ্য ও প্রাণহানির কারণ হয়ে উঠছে, তা নিয়ে গবেষণা হয়েছে অনেক। কিন্তু দেহে কীভাবে ত্বকের মধ্য দিয়ে কারসিনোজেন প্রবেশ করে, সে বিষয়ে বিদগ্ধজনের মাথাব্যথা কম।

বিষয়টি নিয়ে চীনের জিনান বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক এডি ওয়াই জেংয়ের নেতৃত্বে একদল গবেষক সম্প্রতি এ নিয়ে এক গবেষণা চালান, যার ফল প্রকাশ হয়েছে এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি শীর্ষক জার্নালে। মেডিকেল নিউজ টুডে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *