class="post-template-default single single-post postid-2381 single-format-standard wp-custom-logo group-blog vl-boxed aa-prefix-matin-">
Shadow

গ্যাস্ট্রিক নিয়ে চলে যাক ভুল ধারণা

গ্যাস্ট্রিকআশির দশকের দিকে গ্যাস্ট্রাইটিস তথা অম্বল তথা গ্যাস্ট্রিক রোগের খাওয়া দাওয়া নিয়ে অনেক প্রচলিত ধারণা ছিল, যা পরে ভুল প্রমাণ হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতমটি হলো অম্বল রোগ তথা পাকস্থলীতে এসিডের নিঃসরণ বেড়ে গেলে ঘন ঘন কম করে খেতে হবে বা ঘন ঘণ ঠাণ্ডা দুধ খেতে হবে। এটা পুরোটাই ভ্রান্ত ধারণা। পেপটিক আলসার বা এসিডের তীব্র সমস্যায় আক্রান্তদের খেতে হবে দিনে চার কি পাঁচবার। গবেষণায় এও দেখা গেছে, বারবার অল্প পরিমাণে খাবার খেলে যে পরিমাণ এসিডের নিঃসরণ হয়, তার চেয়ে পেটভরে চারবার খেলে এসিড নিঃসরণ কম হয়।

যেকোনও খাবারই অম্লনাশক তথা এসিডের পরিমাণ কমাতে সক্ষম। খালিপেটে এসিডের নিঃসরণ ঘটলে বুক জ্বালাপোড়া করবে। তখন কিছু খাবার খেলেই সেই সমস্যা ধীরে ধীরে প্রশমিত হতে থাকবে। এক্ষেত্রে ভাত, রুটি, মুড়ি, বিস্কুট, ডিমসেদ্ধ বা কলা সমানভাবে কাজ করবে। এক্ষেত্রে বিশেষ কোনও খাবারের আলাদা কার্যকারিতা প্রমাণিত হয়নি।

যে দুধকে দীর্ঘকাল বিশেষ সমাদর করা হতো অম্বল বা আলসারের রোগীদের খাদ্য হিসেবে, সেই দুধ কোনওভাবেই অম্লানশক নয়, আলসার সারাতে দুধের কোনও ভূমিকাই নেই, তা এখন প্রমাণিত সত্য (কোন অসুখে কী খাবেন, ডা. শ্যামল চক্রবর্তী)। বরং বলা হচ্ছে অম্বল বা আলসারের রোগীদের বেশি দুধ খাওয়ার অভ্যাস ক্ষতিকর হতে পারে। কারণ দুধে থাকা ক্যালসিয়াম আর প্রোটিন পাকস্থলীর কোষ থেকে হাইড্রোক্লোরিক এসিডের নিঃসরণ বাড়ায়।

গ্যাস্ট্রিক বা আলসার হলে পরিমিত তেলমশলা দেওয়া খাবার, যেমন রোজ আমরা খাই, তেমন খাওয়াটাই আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানের পরামর্শ। তবে ঝাল কম খাওয়াই ভালো, কেননা এতে এসিডের নিঃসরণ বাড়ে।

ধূমপান ছাড়তে পারলে ভালো। কারণ নিকোটিনও পাকস্থলীতে অহেতুক এসিডের নিঃসরণ ঘটায়।

মুড়িমুড়কির মতো যারা অ্যান্টাসিড ট্যাবলেট বা তরল খান, তাদের জেনে রাখা ভালো যে এ ধরনের ওষুধ বা তরল অ্যান্টাসিডের কার্যকারিতা মাত্র মিনিট বিশেক থাকে। এরপরই তা পাকস্থলী থেকে চলে যায়। তখন আবার এসিডের নিঃসরণ বাড়ে। আর এ সত্যটা আপনি খুব কমই জানবেন কারণ এই এসিডিটি আর আলসারের ওষুধ বাণিজ্য এতটাই রমরমা যে কেউ আপনাকে ওষুধ এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেবে না সহসা।

অন্যদিকে নিয়মিত অ্যান্টাসিড সেবনে রক্তে ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম বা অ্যালুমিনিয়ামের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। বেশিরভাগ অ্যান্টাসিডে থাকা অ্যালুমিনিয়াম যৌগ শরীরের অন্ত্রে বেশি গেলে অন্ত্রে ফসফেটের শোষণ কমে গিয়ে নানা বিপত্তি দেখা দিতে পারে। অ্যান্টাসিড বেশ কিছু ওষুধের আন্ত্রিক শোষণ কমিয়ে দেয়। এটি হার্টের রোগী বা উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন, এমন মানুষের জন্য বেশ ক্ষতিকর।

অনেকেই তাৎক্ষণিকভাবে এসিডিটি কমাতে কোমল পানীয়র দ্বারস্থ হন। এটাও ভুল। এতে সাময়িক আরাম মিললেও পরে এসিডের নিঃসরণ আরও বাড়ে।

তো, এর মানে হচ্ছে গ্যাস্ট্রিকে (অম্বল) আক্রান্ত হলে খাওয়া নিয়ে বেশ চিন্তায় পড়তে হবে এমন কোনও কারণ নেই। একটু ঝাল মশলা এড়িয়ে চার পাঁচ বেলা পেট ভরে খেতে থাকলে ধীরে ধীরে পাকস্থলীটা আবার অল্প এসিডে অভ্যস্থ হয়ে যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Please disable your adblocker or whitelist this site!