অকালে চুল পাকার কিছু কারণ
অনেক কারণে চুল পাকতে পারে। অনেক চর্মরোগ এর জন্য দায়ী।
এ ছাড়া জ্বর, ম্যালেরিয়া, ইনফ্লুয়েঞ্জা প্রভৃতি রোগ শরীরকে চুল পাকানোর দিকে ঠেলে দেয়। এ জাতীয় অন্যান্য কারণের মধ্যে রয়েছে— মারাত্মক আঘাত, কয়েক প্রকারের রেডিয়েশনের শিকার হওয়া, হাইপার-থাইরয়েডিজম, ডায়াবেটিস, পুষ্টিহীনতা, ক্ষত, ব্যথা ও রক্তহীনতা।
কীভাবে রাতারাতি চুল পেকে যায় তা বুঝতে হলে চুল বাড়ার স্বাভাবিক পদ্ধতি বুঝতে হবে। এটি তিন অবস্থার চক্রের মাধ্যমে আসে। প্রথমত, এনাজেনকাল বা চুল জন্মানোর সময় মাসে আধা ইঞ্চি হারে চুল বাড়তে থাকে।
এভাবে দুই থেকে ছয় বছর বাড়ার পর দ্বিতীয় অবস্থায় পৌঁছে। ক্যাটাজেন বা বিশ্রামকালে এটি কয়েক সপ্তাহের জন্য থামে। তৃতীয় ও শেষ ধাপ হলো— টেলোজেন কাল। চুল তখন পেপিলা থেকে আলাদা হয়। পরে এনাজেলকাল শুরু হলে নতুন গজানো চুল পুরনো চুলগুলোকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয়।
অতিরিক্ত শ্রম থেকে অ্যালোপেসিয়া নামক গোলযোগের উৎপত্তি হয়, যা কখনো কখনো এনাজেনকালে চুলের গোড়ায় আঘাত হানে। এতে এক সপ্তাহ বা ১০ দিন সময়ের মধ্যে পুরনো কালো চুল উঠিয়ে দিতে পারে। তখন রয়ে যাওয়া সাদা চুলের অনুপাত বেশি হয়। ফলে মাথার চুল পেকে যাচ্ছে বলে মনে হয়।
আসলে চুল হচ্ছে আঙ্গুলের নখের মতো কেরোটিন দ্বারা তৈরি বস্তু। প্রতিটি চুলের গোড়ায় থাকে বাল্ব বা ডারমিস, যা চর্মের দ্বিতীয় স্তর থেকে পুষ্টি আহরণ করে। এ বাল্বের মধ্যে পেপিলা ও ম্যাট্রিক্স টিস্যুর সূক্ষ্ম স্তম্ভ এক ধরনের মিশ্রণ তৈরি করে, যা থেকে চুল গজায়। চুল যখন গঠিত হতে থাকে তখন সূক্ষ্ম মেলানিনের হাজার হাজার কণা ভিতরে ঢোকে। মেলানোসাইট নামক কোষ দুই রকমের মৌলিক রং উৎপাদন ও মিশ্রণ করে।
ইউমিলানিন কণা চুলকে গাঢ় কালো থেকে অতি হালকা তামাটে পর্যন্ত রঙে রাঙিয়ে দেয়। অপর কণা ফিওমিলানিন চুলকে হালকা স্বর্ণাভ থেকে গভীর সোনালি, সোনালি তামাটে বা লাল পর্যন্ত রঙে রাঙায়।
২০ বছর বয়স অতিক্রান্ত হওয়ার পর মেলানোসাইটের উৎপাদন কমতে থাকে। তখন যেসব চুল গজায়, তাতে এই উপাদানটির পরিমাণ কমে যাওয়ায় চুল ধূসর বা সাদা হতে থাকে। আবহাওয়া ও জলবায়ুগত কারণ ছাড়াও চুল পাকার একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ নির্ধারণ করে বংশগত বৈশিষ্ট্য।
কিছু দিন আগেও ধারণা করা হতো, একবার চুল সাদা বা ধূসর হয়ে গেলে তা আর কখনো কালো হবে না। কিন্তু গবেষণায় দেখা গেছে, সুপ্ত মেলানো সাইটগুলোকে কার্যকর করে চুলকে আবার অস্বাভাবিক রঙে ফিরিয়ে আনা যেতে পারে।
কিছু ননস্টেরয়ডেল ও জ্বালা প্রতিরোধকারী বাহন চুলকে আবার কালো বা রঙিন করতে পারে। চুল ধূসর হয়ে যাওয়ার পর রক্তহীনতায় ভোগা রোগীদের মধ্যে ভিটামিন বি-১২ সেবনে চুলের প্রকৃত রং ফিরে আসতে দেখা গেছে।
https://www.youtube.com/watch?v=Geg0SPadJxM