Sunday, December 22
Shadow

পরকীয়া অপরাধ নয়, স্বামী প্রভু হতে পারেন না স্ত্রীর, রায় ভারতের সুপ্রিম কোর্টের

পরকীয়া ফৌজদারি অপরাধ নয়। ইংরেজ শাসনকালে তৈরি এই আইনের ৪৯৭ ধারা অসাংবিধানিক। রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রর নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, এই আইন স্বেচ্ছাচারিতার নামান্তর। মহিলাদের স্বাতন্ত্র্য খর্ব করে। স্বামী কখনই স্ত্রীর প্রভু বা মালিক হতে পারেন না। ব্রিটিশদের তৈরি করা ১৮৬০ সালের আইনকে চ্যালেঞ্জ করে একটি মামলার প্রেক্ষিতেই বৃহস্পতিবার শীর্ষ আদালতের এই রায়। রায়ের পর আবেদনকারীর আইনজীবী রাজ কালিশ্বরম বলেন, ‘‘এই রায় ঐতিহাসিক। আমি খুশি।’’

১৮৬০ সালে তৈরি ওই আইনের ৪৯৭ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, কোনও ব্যক্তি কোনও মহিলার সঙ্গে যৌন সম্পর্ক করলে এবং ওই মহিলার স্বামীর অনুমতি না থাকলে পাঁচ বছর পর্যন্ত জেল এবং জরিমানা বা উভয়ই হতে পারে। এই আইনের সাংবিধানিক বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০১৭ সালে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করেন জনৈক যোশেফ শাইন।

৪৯৭ ধারাকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করে রায়দানের সময় প্রধান বিচারপতি মন্তব্য করেন, ‘‘এই আইন জোর করে চাপিয়ে দেওয়া এবং স্বেচ্ছাচারিতার সমান। এখন এটা বলার সময় হয়েছে যে, কোনও মহিলার স্বামী তাঁর প্রভু বা মালিক হতে পারেন না।’’ কোনও নারী কখনওই স্বামী বা কারও সম্পত্তি হতে পারেন না বলেও পর্যবেক্ষণ সাংবিধানিক বেঞ্চের।

রায়ে আরও বলা হয়েছে, কারও যৌনতার অধিকারকে আইনি পরিসরে বেঁধে দেওয়া ঠিক নয়। কাউকে সমাজের ইচ্ছানুযায়ী ভাবতে এবং কাজ করতে বাধ্য করার অর্থ তাঁর স্বাধীনতা খর্ব করা। এটা মহিলাদের অধিকার রক্ষা এবং সমানাধিকারের পরিপন্থী।

মামলার প্রেক্ষিতে পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ গঠিত হয়। প্রধান বিচারপতি ছাড়াও বেঞ্চে ছিলেন বিচারপতি রোহিংটন ফলি নরিম্যান, বিচারপতি এ এম খানউলকর, বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় এবং বিচারপতি ইন্দু মলহোত্র। গত পয়লা অগস্ট শুনানি শুরু হয়। সরকার পক্ষের আইনজীবী ছিলেন অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল পিঙ্কি আনন্দ। মামলাকারীর পক্ষে সওয়াল করেন আইনজীবী রাজ কালিশ্বরম এবং সুবধত এমএস। গত পয়লা অগস্ট মামলার শুনানি শুরু হয়। শেষ হয় আট অগস্ট। ওই দিনই ২৭ সেপ্টেম্বর রায়দানের দিন নির্ধারিত করে দেয় প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Please disable your adblocker or whitelist this site!