class="post-template-default single single-post postid-17458 single-format-standard wp-custom-logo group-blog vl-boxed aa-prefix-matin-">
Shadow

ন্যাশনাল হাসপাতালের ডাক্তার মিজানুর রহমান কল্লোলের পরামর্শ ফ্রোজেন শোল্ডার হলে করণীয়

ফ্রোজেন শোল্ডার

ফ্রোজেন শোল্ডার বা অ্যাডহেসিভ ক্যাপসুলাইটিস হলো কাঁধ শক্ত হয়ে যাওয়া, ব্যথা হওয়া ও কাঁধের নড়াচড়া সীমিত হয়ে পড়া। ইনজুরির কারণে, কাঁধের বেশি ব্যবহারের কারণে কিংবা কোনো রোগ, যেমন ডায়াবেটিস বা স্ট্রোক থেকে এটি হতে পারে। এর ফলে অস্থিসন্ধির চারপাশের টিস্যু শক্ত হয়ে যায়, স্কার টিস্যু গঠিত হয় এবং কাঁধের নড়াচড়া কঠিন ও যন্ত্রণাদায়ক হয়ে পড়ে। এ অবস্থা সাধারণত ধীরে ধীরে হয়, এরপর প্রায় বছরখানেক পর অথবা আরো পরে সমস্যাটি ধীরে ধীরে চলে গেলেও কিছু করণীয় ও চিকিৎসা রয়েছে।

 

কারণ

সাধারণত কাঁধে ব্যথা, আঘাত ও দীর্ঘস্থায়ী স্বাস্থ্য সমস্যা, যেমন ডায়াবেটিস বা স্ট্রোকের কারণে অস্থিসন্ধির ব্যবহার বন্ধ করে দিলে ফ্রোজেন শোল্ডার হতে পারে। কাঁধের যেকোনো সমস্যা থেকেই ফ্রোজেন শোল্ডার দেখা দিতে পারে, যদি কাঁধ পুরো মাত্রায় নাড়াচড়া করানো না হয়। বেশির ভাগ ৪০ থেকে ৭০ বছর বয়সী লোকেদের হয়। পুরুষদের তুলনায় নারীদের, বিশেষ করে মেনোপজ-পরবর্তী নারীদের বেশি হয়। ফ্রোজেন শোল্ডার ঘটে আর যে কারণে তা হলো—

►   কাঁধে অপারেশনের পরে কিংবা কাঁধে কোনো আঘাত পেলে।

►   দীর্ঘস্থায়ী রোগে আক্রান্ত বেশির ভাগ লোকের এ সমস্যা দেখা দিতে পারে।

 

পরীক্ষা-নিরীক্ষা

কাঁধের পরীক্ষা করে চিকিৎসক কাঁধের নড়াচড়া সীমিত দেখলে, তিনি সেটাকে ফ্রোজেন শোল্ডার হিসেবে সন্দেহ করতে পারেন। এ সময় একটি এক্স-রে করে দেখা হয় যে কাঁধের উপসর্গ অন্য কোনো সমস্যা থেকে উদ্ভূত হয়ছে কি না, যেমন আর্থ্রাইটিস কিংবা ভেঙে যাওয়া হাড়।

 

চিকিৎসা

সাধারণত ব্যথানাশক ওষুধ দিয়ে ফ্রোজেন শোল্ডারের চিকিৎসা শুরু করা হয়। এ ক্ষেত্রে এনএসএআইডি ব্যবহার করা হয়। আক্রান্ত স্থানে গরম সেঁক দেওয়া হয়, হালকাভাবে স্ট্রেচিং করা হয়। ব্যথা ও ফোলা কমানোর জন্য বরফ দেওয়া হয়, কর্টিকো স্টেরয়েড ইনজেকশন দেওয়া হয়। কাঁধের নড়াচড়ার পরিধি বাড়ানোর জন্য ফিজিক্যাল থেরাপির সাহায্য নিতে পারেন। ফ্রোজেন শোল্ডার ভালো হতে এক বছর বা তার বেশি সময় নিতে পারে।

যদি চিকিৎসায় কাজ না হয়, তাহলে কখনো কখনো সার্জারি করার প্রয়োজন হয়। এ ক্ষেত্রে কাঁধের চারপাশের শক্ত টিস্যুগুলো ঢিলা করে দেওয়া হয়। সচরাচর দুই ধরনের সার্জারি করা হয়ে থাকে। একটি হলো, রোগীকে অ্যানেস্থেশিয়া দিয়ে হাত দিয়ে কাঁধ ঠিক করা। এ ক্ষেত্রে রোগীকে ঘুম পাড়িয়ে বাহু টেনে ঠিক জায়গায় আনা হয়। শক্ত টিস্যুগুলো টেনে ঢিলা করা হয়। অন্য সার্জারিটি হলো, আর্থ্রোস্কোপ ব্যবহার করে শক্ত ও স্কার টিস্যুগুলো কেটে ফেলা। এসব সার্জারি একই সময়ে করা যেতে পারে।

 

প্রতিরোধে করণীয়

কাঁধে অপারেশন বা আঘাতের পরে হালকা ব্যায়াম ও স্ট্রেচিংয়ের মাধ্যমে ফ্রোজেন শোল্ডার প্রতিরোধ করা যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে ধৈর্য ধরতে হেবে এবং চিকিৎসকের উপদেশ মেনে চলতে হবে। মনে রাখতে হবে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ফ্রোজেন শোল্ডার ক্রমেই ভালো হতে থাকে।

 

 লেখক : সহযোগী অধ্যাপক

অর্থোপেডিকস ও ট্রমাটোলজি বিভাগ

ঢাকা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Please disable your adblocker or whitelist this site!