সেলফি তুলে জ়ুম করে খুঁটিয়ে দেখা, পছন্দসই না হওয়া পর্যন্ত বারবার তুলে যাওয়া। কিংবা ছবি তুলে ফটো ফিল্টারে এডিট করে নিজেকে দারুণ সুন্দর করে তোলা। তারপর সোশ্যাল মিডিয়ায় সে ছবি পোস্ট করে লাইকের বন্যায় ভেসে যাওয়া। এ অভ্যাস কি আপনারও আছে? তাহলে আপনি স্ন্যাপচ্যাট ডিসমরফিয়ার শিকার! অবাক হচ্ছেন? ভাবছেন স্ন্যাপচ্যাট ডিসমরফিয়া আবার কী?

চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন এটা এক ধরনের মানসিক অসুখ। যাঁদের আত্মবিশ্বাস কম,  সাধারণত তাঁদের মধ্যেই এই অসুখ দেখা যায়। কৃত্রিম ভাবে নিজেদের সুন্দর করে তুলে তাঁরা সেই আত্মবিশ্বাসটাই ফিরে পেতে চান।

প্ল্যাস্টিক সার্জন লোকেশ কুমার জানান, আগে দেখা যেত অনেকেই কোনও সেলিব্রিটির ছবি নিয়ে এসে তাঁর মতো চোখ বা নাক বা ঠোঁট পেতে চাইছেন। কিন্তু এখন প্রযুক্তির সাহায্যে নিজেদের ছবিই এডিট করে প্ল্যাস্টিক সার্জারির জন্য চিকিৎসকের কাছে চলে আসছেন তাঁরা। মেয়ে বা ছেলে উভয়ের মধ্যেই এই মানসিক রোগ দেখা যায়। যার অনুপাত ৭:৩। অর্থাৎ ১০০ জনের মধ্যে ৭০ জন মহিলা এবং ৩০ জন পুরুষ এই রোগের শিকার। তবে দেখা গিয়েছে, মহিলাদের ওই ৭০ জনের মধ্যে বেশিরভাগই প্রফেশনাল কারণে নিজেদের মুখ বদলাতে চাইছেন। তাঁরা এই মানসিক রোগের শিকার নন। কিন্তু পুরুষদের ক্ষেত্রে সাধারণত ওই ৩০ জনই স্ন্যাপচ্যাট ডিসমরফিয়া আক্রান্ত।

মনোরোগ বিশেষজ্ঞ হিরণ্ময় সাহা বলেন, ‘‘এটা একটা মানসিক অসুখ। যাঁরা খুব অবসাদে ভোগেন, অনেক সময় তাঁরা নিজেদের মানসিক তৃপ্তির জন্য এ রকম করে থাকেন। সেলফি তুলে ফটোফিল্টার কাজে লাগিয়ে ফেস বিউটি বাড়িয়ে দেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে প্রচুর ভাল কমেন্ট এবং লাইক পেতে চান তাঁরা।’’

 

এর প্রতিকার কী?

মনোবিদ হিরণ্ময়বাবু বলেন, ‘‘এর জন্য সে ভাবে কোনও ওষুধ নেই। কাউন্সেলিং করানো হয়ে থাকে রোগীকে। অনেক ক্ষেত্রে অবসাদ কমানোর ওষুধ দেওয়া হয় রোগীকে।’’