class="post-template-default single single-post postid-23230 single-format-standard wp-custom-logo group-blog vl-boxed aa-prefix-matin-">
Shadow

বাড়ির ছাদে করে ফেলুন শখের বাগান

শখের বাগানশহরে যে সারি সারি উঁচু দালানবাড়ি, সবুজের দেখা মেলে না সহজে। ছোট্ট ফ্ল্যাটের ব্যালকনিতে কিংবা বাড়ির ছাদে করতে পারেন শখের বাগান । গ্রামের মতো ঘন সবুজ বাগান হয়তো হবে না, তবে টুকিটাকি অনেক গাছই লাগাতে পারবেন। তাতে করে প্রাণের ক্ষুধা যেমন মিটবে, মিটবে পেটের ক্ষুধাও।

বাড়ির ছাদে কিন্তু সবজি আর ফলের চাষ করা যায় সহজেই। ব্যালকনিতে যেমন জায়গার অভাব, পর্যাপ্ত আলো-বাতাসের চলাচল না থাকা ইত্যাদি সমস্যা থাকে, ছাদে তা নয়। উপযুক্ত মাটি আর যত্ন পেলেই গাছ বেড়ে উঠবে তড়তড়িয়ে। এখন ভেজালের ভিড়ে খাঁটি জিনিস খুঁজে পাওয়াই মুশকিল। সেক্ষেত্রে নিজের হাতে লাগানো গাছের ফল বা সবজি হলে সেই চিন্তা আর থাকবে না। প্রতিদিন ভেজালমুক্ত খাবারই পাতে তুলতে পারবেন।

সাধারণ মাটিতে আর বাড়ির ছাদে গাছ লাগানো কিন্তু একই কথা নয়। ছাদে গাছ লাগানোর ক্ষেত্রে নিতে হয় বাড়তি কিছু যত্ন। আপনি কী গাছ লাগাতে চাইছেন তার ওপর নির্ভর করছে কতটুকু জায়গায় কিভাবে লাগাবেন। বড় গাছ হলে গাছ লাগানোর পাত্রটিও বড় হতে হবে।
টবে গাছ লাগানোর সুবিধা হল খুব সহজে এগুলো স্থানান্তারিত করা যায়। সাধারণত যে আকারের টব বাসাবাড়িতে থাকে, তার থেকে বড় মাপের টবে গাছ লাগান। তাহলে ফলন ভালো হবে। এক্ষেত্রে সিমেন্টের তৈরি টব ব্যবহার করতে পারেন। ব্যবহার করতে হবে পর্যাপ্ত জৈব সার। ১৬-১৮ ইঞ্চি মাপের একটি টবের জন্য জৈব সারের পাশাপাশি ১০০ গ্রাম টিএসপি এবং ৫০ গ্রাম এমওপি সার ভালোভাবে মিশিয়ে ১০-১২ দিন রেখে দিতে হবে। এর আগে কিন্তু টব ভরাট করা যাবে না।

ছাদে গাছ লাগানোর জনপ্রিয় একটি পদ্ধতি হল হাফড্রাম। এক্ষেত্রে হাফড্রামের নিচে ছিদ্র করে সেখানে এক ইঞ্চি পরিমাণ উচ্চতায় ইটের টুকরো বসাতে হয়। তার উপরে এক ইঞ্চি পরিমাণ জৈব সার বা পচা গোবর দিতে হবে। ফলে গাছের গোড়ায় অতিরিক্ত পানি জমে থাকবে না কখনই। জৈব সারের পাশাপাশি প্রতিটি ড্রামে ২০০ গ্রাম টিএসপি, ১০০ গ্রাম এমওপি ব্যবহার করতে পারেন। শাক-সবজি বা ফুলের ক্ষেত্রে ছোট বা মাঝারি টব হলেও চলে তবে ফলের গাছ হলে পাত্র বড় হলেই সুবিধা বেশি।

ছাদের চারদিকে ২ ফুট প্রস্থের দুই পাশে ১.৫ ফুট উঁচু দেয়াল ৩ ইঞ্চি গাঁথুনির নেট ফিনিশিং ঢালাই দিয়ে তৈরি করে তার মাঝের জায়গায় প্রথমে এক ইঞ্চি ইটের সুড়কি বা খোয়া, পরের এক ইঞ্চি গোবর সার দেয়ার পর বাকি অংশ দুই ভাগ মাটি ও এক ভাগ গোবরের মিশ্রণ দিয়ে ভরাট করে স্থায়ী বেড তৈরি করা হয়। এখানে মোটামুটি বড় আকারের ফলের গাছ থেকে শুরু করে সবরকম গাছই লাগানো যায়।

খুব বেশি বড় আকারের গাছ ছাদে লাগাবেন না। গাছ থেকে বেশি ফল পেতে হাইব্রিড জাতের ফলদ গাছ লাগাতে পারেন। আম্রপালি ও মলি­কা জাতের আম, পেয়ারা, আপেল কুল, আতা, আমড়া, লেবু, ডালিম, পেঁপে, জলপাই, করমচা, শরিফা ইত্যাদি গাছ লাগাতে পারেন। ভালো মানের গাছ না হলে কিন্তু ফলও ভালো হবে না। তাই গাছ কেনার আগে দেখেশুনে তবেই কিনতে হবে। বিভিন্ন ফলের গুটি কলম, চোখ কলম ও জোড়া কলম পাওয়া যায় নার্সারিতে। ছাদে লাগানোর জন্য এরকম কলমের চারা সংগ্রহ করতে পারেন। সবজি ও ফুলের ক্ষেত্রে যা কিছু পছন্দ, তাই চাষ করতে পারেন।

ছাদে গাছ লাগানোর পরে নিয়মিত যত্নও নেয়া চাই। কারণ গাছে সঠিকভাবে পুষ্টি না পৌঁছালে ফলন ভালো হবে না। এমনকি গাছ মরেও যেতে পারে। জানতে হবে সার দেয়ার সঠিক সময় ও পরিমাণ। পানি নিষ্কাশনের পথও রাখতে হবে। নয়তো গোড়ায় পানি জমে গাছ মরে যেতে পারে। নিয়মিত গাছ পরিষ্কারও করতে হবে। আপনি যতটা যত্ন নেবেন, গাছও ততটাই সুন্দর হয়ে উঠবে। চোখের ও মনের প্রশান্তির জন্য এতটুকু আপনি করতেই পারেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Please disable your adblocker or whitelist this site!