ডা. আবু সাঈদের পরামর্শ : গরমে সুস্থ থাকতে করণীয়
গরমে এখন সবারই ত্রাহি অবস্থা। এ সময় সুস্থ থাকতে হলে শরীরের প্রতি বিশেষ যত্ন নিতে হবে। গরমে শরীর অল্পতে ক্লান্ত হয়ে পড়ে। কোনো কাজ করতে গেলে আমরা হাঁপিয়ে উঠি। মন-মেজাজও খিটখিটে হয়ে ওঠে। এ সময় প্রচুর পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি খেতে হবে।
ডাবের পানি কিংবা ফলের জুসও খেতে পারেন। স্যালাইন খেলেও ভালো।
এ সময় রোদ এড়িয়ে চলা দরকার। হাঁটার সময় ছায়াঘেরা স্থান দিয়ে হাঁটতে চেষ্টা করুন। পাতলা সুতির কাপড় পরিধান করুন। রোদে বের হলে মাথায় ক্যাপ পরুন। মেয়েরা রোদ প্রতিরোধের জন্য মাথায় শাড়ির আঁচল বা ওড়না দিতে পারেন। চোখে ভালো ব্র্যান্ডের সানগ্লাস ব্যবহার করুন। সানগ্লাস কেনার সময় ফ্যাশনের কথাই শুধু বিবেচনা করবেন না, তা দিয়ে যেন চোখসহ মুখের অনেকখানিই ঢাকে, সেদিকেও লক্ষ রাখুন। রোদে যাতে ত্বক পুড়ে না যায় সে জন্য সানস্ক্রিন ব্যবহার করা যেতে পারে।
৩০-এর বেশি এসপিএফযুক্ত (সান প্রোটেকটিং ফ্যাক্টর) সানস্ক্রিন মুখে ব্যবহার করা ভালো। গরমে ঘামাচি একটি সাধারণ সমস্যা। গরমের সময় বিভিন্ন কারণে ঘর্মগ্রন্থি বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
প্রচুর পরিমাণ ঘাম তৈরি হয় বলে ঘর্মগ্রন্থি ফুটো করে অনেক পরিমাণ ঘাম ত্বকের নিচে জমা হয়। এতে জ্বালাপোড়াও হয়। এভাবে ঘামাচি বাড়তে থাকে। তেল বা নিুমানের লোশন ব্যবহারেও ঘামাচি বাড়ে। ঘামাচির হাত থেকে বাঁচতে বিশেষ ধরনের ঘামাচি পাউডার ব্যবহার করা যেতে পারে। জ্বালাপোড়া বা চুলকানি হলে হাউড্রোকর্টিসন (১ শতাংশ) ব্যবহার করুন।
গরমে পেটের বিভিন্ন রোগ হয়। এর মধ্যে ডায়রিয়া, জন্ডিস, টাইফয়েড অন্যতম। এ থেকে বাঁচতে পানি অবশ্যই ফুটিয়ে পান করুন। পানি ও খাবার থেকে রোগ ছড়ায়।
রাস্তার ধারের খাবার ও ফাস্টফুড এড়িয়ে চলাই শ্রেয়। বাইরে খেলে থালা-গ্লাস পরিষ্কার আছে কি না এবং খাবারটা টাটকা আছে কি না সেদিকে লক্ষ রাখুন।
রাস্তার পাশের গাজর, শসা, লাচ্ছি, আখের রস ইত্যাদি খাওয়া উচিত নয়।যে পানি দিয়ে এসব ধোয়া হয় বা যেসব পাত্রে এসব পরিবেশন করা হয় তাতে জীবাণু থাকার আশংকা থাকে। এ গরমে শিশুদেরও যতœ নিতে হবে। এ সময় শিশুদের যথাসম্ভব ঠাণ্ডা স্থানে রাখুন। সুতি ও ঢিলেঢালা জামা পরান। বেশির ভাগ শিশুর প্রচুর ঘাম হয়, তাই তাকে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি খেতে দিন।
পানি খেতে না চাইলে ডাব বা বিভিন্ন ফলের জুস বানিয়ে দিন। শিশুদের নিয়মিত গোসল করাতে ভুলবেন না। একটু সতর্ক হলে গরমের এই খরতাপের সময়টাও ভালোভাবে এবং নীরোগ শরীরে আমরা কাটাতে পারি।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল