Thursday, April 25
Shadow

প্রাপ্তবয়স্কদের থ্রিলার গল্প : কেইস স্টাডি থার্টি থ্রি

নিলুর হাতে সময় আছে আধ ঘণ্টার মতো। লোকটা তা-ই বলে গেছে। ড্রয়িং রুমে বসে কী যেন কাজ করছে আর মদ গিলছে। নিলু আছে ভেতরের একটা রুমে। এ বাসায় কেউ থাকে না। নিলুর হাতে আছে আধ ঘণ্টা। এর মধ্যে লোকটাকে খুন করার উপায় বের করতে হবে। তা না হলে তাকে ধর্ষণ করে মেরে ফেলবে। লোকটা তাকে এমনটাই বলে গেছে।
ঘণ্টা দুয়েক আগে কিডন্যাপ হয়েছে নিলু। কাউকে কিডন্যাপ করা যে পানির মতো সহজ সেটা সে জানতো না। শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে হাতিরঝিলের একটা বড় অংশ নির্জন থাকে। হ্যাঁচকা একটা টান। এরপর নিজেকে আবিষ্কার করলো কালো একটা মাইক্রোর পেছনের সিটে। মুখে একটা রুমাল চেপে রাখতেই তন্দ্রার মতো চলে এলো। পুরোপুরি জ্ঞান হারায়নি অবশ্য। তন্দ্রার মধ্যেই বুঝতে পেরেছে তার সঙ্গে কী ঘটতে যাচ্ছে। লোকটার বয়স পঁয়তাল্লিশ পঞ্চাশের মতো হবে। নিজেই ড্রাইভ করছে। তন্দ্রা ছুটে যাওয়ার পর নিলু বুঝতে পেরেছে তার হাত-পা শক্ত করে বাঁধা। মুখ বাঁধা ছিল না। তবে চিৎকার যে বাইরে যাবে না সেটা লোকটা এক ফাঁকে জানিয়ে দিয়েছে। গাড়িটা সাউন্ডপ্রুফ। নিলু ভাবছে তাকে নিশ্চয়ই একা কাঁধে করে লোকটা তার বাড়িতে গিয়ে তুলতে পারবে না। কেউ না কেউ সেটা দেখবে।
কিন্তু সেটা ঘটল না। আলিশান বাড়ির গেট দিয়ে গাড়ি ঢোকার পর কাউকে দেখতে পেল না নিলু। তাকে নিয়ে আসা উপলক্ষে সম্ভবত সবাইকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। চারদিকে বিশাল দেওয়াল। গাছপালাও অনেক। চিৎকার দেওয়ার চেষ্টা করতে গিয়ে দেখল গলায় আটকে যাচ্ছে। লোকটা বেশ সাধাসিধে গলায় বলল, ‘ঝটপট ঢুকে পড়ো, নইলে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যাব।’
নিলু বুদ্ধিমতি। কিন্তু এ অবস্থায় কোনো বুদ্ধিই কাজ করছে না। সে গেট বরাবর ছুট লাগানোর চেষ্টা করলো। দু পা না এগোতেই হুড়মুড়িয়ে পড়ল। ব্যথা পেল না যদিও তবে হাল ছেড়ে দিয়ে মাটিতেই পড়ে রইল খানিকক্ষণ। লোকটা আসার আগেই উঠে গিয়ে সোজা হাঁটা শুরু করলো আলিশান বাড়িটার দিকে। ঢুকে পড়ল খোলা গেট দিয়ে। টানাহেঁচড়ার চেয়ে আপাতত স্বেচ্ছায় যাওয়াই মঙ্গল। তাতে গায়ে শক্তি থাকবে। একটা শেষ ফাইট দেওয়া যাবে।
মাথা আপাতত ঠাণ্ডা নিলুর। পাশের রুমে ঢোকার আগে তার হাত-পায়ের বাঁধন খুলে দেওয়া হয়েছে। তার আগে শীতল কণ্ঠে বলে গেল লোকটা, ‘আধঘণ্টা সময় দিলাম। এর মধ্যে নিজেকে বাঁচানোর জন্য একটা কিছু ভাবতে হবে তোমাকে। বুদ্ধি থাকলে আমাকে মেরেও ফেলতে পারো। আধঘণ্টা পর আমি আসবো। এরপর তোমাকে রে-প করবো। তারপর মেরে ফেলবো। তোমার বিশ্বাস না হলে টেবিলে রাখা ল্যাপটপে একটা ভিডিও আছে। ওটা দেখতে পারো।’ এরপর রোবটের মতো ঘড়ির দিকে তাকিয়ে লোকটা বলল, ‘আধঘণ্টা শুরু এখন থেকে।’
নিলু ঠিক করেছে ঘড়ি দেখবে না। ঘড়ি দেখলেই সময় লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়াবে। সে বিজ্ঞানের ছাত্রী। সাইকো লোকজন সম্পর্কে তার ভালোই ধারণা আছে। লোকটা ওইরকমই। এটা তার কাছে একটা খেলা। কে জানে, হয়তো এ খেলায় নিজেকে হারানোর জন্য একটা ফাঁকফোঁকর ঠিকই রেখেছে। তা না হলে এটাকে ঠিক খেলা বলা যাবে না।
রুমটায় চোখ বোলানো শেষ। একটা আয়না লাগানো আলমিরা আছে। ওতে কাগজপত্র। সবই পুরনো দলিল আর হিসাব নিকাশ। একটা বিছানা। পরিপাটি চাদর। তাতে তোষক। তোষকের নিচে ফাঁকা। কাঠের টুকরোগুলো খোলা যাচ্ছে না। বাথরুমে কিছু নেই। সিংক, বাথটাব, কমোডের হাতল কোনো কিছু টানাহেঁচড়া করে লাভ নেই। খুলবে না। লোকটা জানে, নিলু এসব নিয়েই চেষ্টা করবে আগে। নিলুও সেটা বুঝতে পেরেছে। তাকে ভাবতে হবে ভিন্নকিছু।
আধঘণ্টার বিষয়টা নেহায়েত চাপে রাখার জন্য। লোকটা নিশ্চয়ই ভেবেছে এর মধ্যে ভিডিও দেখতে চাইবে নিলু। তাতে নষ্ট হবে সময়। নিলু স্পষ্ট বুঝতে পারছে ভিডিওটা দেখতে ইচ্ছে করছে তার। লোকটা কিভাবে নৃশংসভাবে একটা মেয়েকে ধর্ষণ করে হত্যা করলো সেটা দেখার ইচ্ছে করাটা অন্যায় কিনা সেটা নিয়ে ভাবছে না। ভেবে কুল পাবে না। কিন্তু এটাও সত্য ভিডিও দেখলে হয়তো একটা ক্লু পেতে পারে নিলু। লোকটা চাইলে তো এখনই তার ওপর হামলে পড়তে পারে। কিন্তু সেটা সে করছে না। আর কিছু করার নেই দেখেই ল্যাপটপের ডেস্কটপে রাখা একমাত্র ভিডিওটা অন করলো নিলু। প্রথমে লোকটা বিড়বিড় করে তার পরিচয় ও কী ঘটতে যাচ্ছে সেটা জানাল। বিছানায় হাত-পা বাঁধা একটা মেয়ে। চেহারা দেখা যাচ্ছে না। নিলুর বয়সীই। ক্যামেরাটা দরজার পাশের ছোট টুলটায় রেখেছে। এগিয়ে গেল লোকটা। মেয়েটাকে যথারীতি ধাক্কা দিয়ে বিছানায় ফেলে দিল। মেয়েটার চিৎকার বীভৎস লাগছে কানে। তবে এর মধ্যেই একটা কিছু শোনার আশায় আছে ও। মেয়েটার চেহারা বোঝার চেষ্টা করছে। বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছে। লাভ হচ্ছে না। শীতল চাহনির লোকটাকে দেখে মনে হচ্ছে না সে ঠিক উপভোগ করছে না। মেয়েটাও এক পর্যায়ে পাথরের মূর্তির মতো স্থির হয়ে গেল। চিৎকারও বন্ধ।
খটকা লাগলো নিলুর। লোকটা মেয়েটাকে পুরো নগ্ন করে ফেলল। ডান উরুতে একটা কাটা দাগ। চেহারাটাও এক ঝলক দেখা গেল। ভাবনায় পড়ে গেল নিলু। লোকটা মেয়েটাকে উপুড় করতেই গা শিউরে উঠল নিলুর। মেয়েটার পিঠের এক কোণে একটা বিশেষ জন্মদাগ। নিলু ঝটপট আয়নায় নিজের পাজামাটা তুলে দেখল। উরুতে একই কাটা দাগ। ঘুরে পিঠটা দেখতেই শিউরে উঠল দ্বিতীয়বার। একই দাগ তার শরীরেও! খানিক পর ভিডিওর শেষ প্রান্তে লোকটা যখন উঠে দাঁড়াল, তখন পরিষ্কার দেখতে পেল চেহারাটা। ভিডিওতে ধর্ষিতা মেয়েটা সে নিজেই! ধাতস্থ হতে পারছে না নিলু। একসঙ্গে অনেকগুলো চিন্তা খেলে যাচ্ছে। লোকটাকে খুন কিংবা ধর্ষণ থেকে বাঁচার চিন্তা ঝেড়ে গত কয়েক দিন কী কী করেছে সেটা ভাবার চেষ্টা করলো। কিছুই মনে আসছে না। তার শুধু মনে পড়ছে সম্ভবত ক্লাস শেষ করে সে হাতিরঝিলের ওই রাস্তা ধরে হাঁটছিল। তার আগের দিন সকালে কী দিয়ে নাস্তা করেছে? মনে পড়ছে না। গত সপ্তাহে ক্লাসে কী পড়া ছিল? তার পরিবারে কেউ আছে? বাসা কোথায়? কী আশ্চর্য, কিছুই মনে পড়ছে না! অস্বাভাবিকও লাগছে না কিছু। শুধু মনে হচ্ছে তাকে লোকটা এর আগেও ধরে এনেছিল এবং ধর্ষণ করেছিল। আজও একই কায়দায় নিয়ে এসেছে। আজ কততম বার? এটা কি প্রথম ভিডিও? নিলুর মাথায় প্রশ্নের ভিড়। লোকটাকে গিয়ে গুছিয়ে জিজ্ঞেস করবে? এবার ঘড়ি দেখল নিলু। বিশ মিনিট পেরিয়ে গেছে। আর দশ মিনিট পর কি লোকটা আগের মতোই আবার ভিডিও ক্যামেরা নিয়ে আসবে? কী যেন মনে হতেই নিলু আবার ভিডিওটার শুরুতে টেনে দিল। লোকটা বিড়বিড় করে যা বলেছে তা বোঝার চেষ্টা করলো।
‘চার জুন। কেইস স্টাডি থার্টি টু। ইনফিডালিটি রেজাল্ট জিরো।’
ইনফিডালিটি মানে কী যেন? ও হ্যাঁ বিশ্বাসঘাতকতা। লোকটা তাকে নিয়ে কোনো একটা পরীক্ষা চালাচ্ছে তাতে সন্দেহ নেই। কিন্তু বিশ্বাসঘাতকতার পরীক্ষা কেন? নিলু সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে, ভিডিওটা আবার করতে দেবে না ও। একটা বড় ধরনের গণ্ডগোল টের পাচ্ছে নিজের মধ্যে। তন্নতন্ন করে খুঁজলো আবার সব। কিছু পেল না। ল্যাপটপটা আছাড়া দিয়ে ভেঙে ফেলল। ডিসপ্লের কাচের টুকরো হাতে নিল। কিন্তু কী ভেবে যেন প্রচণ্ড জোরে ঘাই দিল নিজের হাতে। অবাক হলো। একটুও ব্যথা পেল না। রক্ত নয়, একটা তরল বের হয়ে এলো। থিকথিকে সবুজ। আরো ভেতরে কাটাছেঁড়া করতেই আবিষ্কার করলো এক ঝাঁক তার। অনেকটা স্নায়ুতন্ত্রের মতো। হা হয়ে বসে আছে নিলু। সে কি তবে…। কিন্তু অনুভূতিটা পরিষ্কার টের পাচ্ছে নিজের ভেতর। কিছুতেই এটা ঘটতে দিতে চায় না ও। কিন্তু কিভাবে কী করবে?
সময় শেষ! লোকটার পায়ের আওয়ার পেতেই ঝট করে হাতটা আড়ালে নিয়ে গেল। লোকটা তাকে পাত্তাই দিচ্ছে না। চাইলেই নিলু এখন হাতের কাচের টুকরোটা বসিয়ে দিতে পারে লোকটার ঘাড় বরাবর। সেটা সে করলো না। তার করতে ইচ্ছে করলো না। বুঝতে পারলো না কিছুই। তার ইচ্ছেও কি লোকটা নিয়ন্ত্রণ করছে? তা হলে এত নাটক সাজানোর দরকারটা কী?
‘তুমি বুঝে ফেলেছো তাই না? এটা অবশ্য নতুন না। এর আগে আরো কয়েকবার বুঝতে পেরেছিলে। প্রথম দিকে দুয়েকবার বাধা দিতে চেয়েছিলে কিন্তু তোমার কোডিংয়ে সেটা নেই।’
‘কী করতে চান আপনি?’
ভিডিও ক্যামেরা সেট করতে করতে লোকটা বলল, ‘আমি চাই তুমি বিশ্বাসঘাতকতা করতে শেখো। তোমাকে কোডিং করেছি আমি, আমি চাই আমার বিরুদ্ধে যাও তুমি। আমার কোডিংয়ের বিরুদ্ধে বাধা দিতে শেখো। হাতের কাচের টুকরোটা দিয়ে কিছু করতে পারবে না। কারণ আমি তোমার হাত-পায়ের নার্ভ অফ করে দিয়েছি। তোমাকে এখন বিছানায় ছুড়ে ফেলা হবে নিলু।’
নিলু বুঝতে পারলো এটাও একটা খেলা। লোকটা তার ভেতর রাগ তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার রাগ। অসম্ভব রাগ।
‘তোমার ইনফিডালিটির মাত্রা যত বেশি হবে তত দাম বাড়বে। বুঝতে পেরেছো? আর একবার কোডিংটা সেট হয়ে গেলে তোমার দাম কত কোটি টাকা উঠবে আমি ভাবতেই পারছি না। হা হা হা।’
‘কে কিনবে আমাকে?’
‘কী যে বল, তুমি হবে প্রথম ক্রোধযুক্ত সুন্দরী মানবিক গুণসম্পন্ন রোবট। নারীপাচার অপরাধ হতে পারে, রোবটপাচার নয়। ইনফ্যাক্ট রোবটপাচার কথাটাই ভুল। তোমাকে আমি জাস্ট বিক্রি করবো। হা হা হা।’
এই হাসি আর কথাগুলোকিও কোডিংয়ের অংশ? নিলুর একটাই চিন্তা, যে করেই লোকটা যা আশা করছে তা করতে দেওয়া চলবে না। নিলু আলগোছে চেয়ার ছেড়ে উঠে গিয়ে বিছানায় শুয়ে পড়লো। হাতের তরল পড়া বন্ধ হয়েছে। ধীরে ধীরে নিজেকে নগ্ন করলো। নিশ্চিত বুঝতে পারলো লোকটা দ্বিধায় পড়ে গেছে। নিলু এভাবে বাধ্য মেয়ের মতো যদি কাপড় খুলে বিছানায় চোখ বুঁজে শুয়ে অপেক্ষা করে তা হলে নিশ্চয়ই তার দাম থাকবে না। সে জানে, লোকটার ক্রেতারা চায় আসল কিছু, বন্য কিছু। কাউকে সত্যিকার অর্থে যন্ত্রণা দিয়ে নিজে উপভোগ করতে চায় ওরা। নিলু বোঝাতে চাইছে, তার ভেতর গণ্ডগোল আছে। লোকটার কোডিং কাজ করছে না।
‘তোমাকে এখন আমি রে–প করবো মেয়ে, বুঝতে পেরেছো!’
‘জ্বি স্যার। বুঝতে পেরেছি। আমি অপেক্ষা করছি।’
লোকটা এগিয়ে এসে প্রচণ্ড শব্দে চড় কষাল নিলুর গালে। কিন্তু এ ধরনের আঘাতের জন্য ব্যথা পাওয়ার কোড বোধহয় নিলুর মধ্যে নেই। এরপর লোকটা তাড়াহুড়ো করে আবার ড্রয়িং রুমে গেল। সম্ভবত তার মূল কম্পিউটারটা ওখানেই। ভুলচুক পরীক্ষা করতে গেছে। নিলু মিটিমিটি হাসছে। কাচের টুকরো দিয়ে পিঠের দাগ বরাবর কাটলো। ব্যাটারি চেম্বার ওটা। নিলু বুঝতে পারল তাকে কী করতে হবে। তার ভেতর বিজ্ঞানের ছাত্রীর কোডিংটা কাজ করতে শুরু করেছে। কাটা হাত থেকে দুটো বিশেষ তার টেনে বের করে আনলো। দ্রুত তার দুটোর দুই প্রান্ত ব্যাটারির দুই প্রান্তে বসিয়ে আবার চেম্বারটা আটকে দিল। তার দুটোর দুই মাথা আঁকড়ে ধরলো দুই হাতের মুঠোয়। ধীরে ধীরে চেহারায় ফুটিয়ে তুলল ভয়ের ছাপ। রুমে এলো লোকটা। নিলুকে ভয় পেতে দেখে লোকটার মুখে হাসি ফুটল। পেছাতে শুরু করলো নিলু। ভিলেনের মতো লোকটাও এগিয়ে আসছে ধীরগতিতে। নিলুর গায়ে হাত দিল। দুই পা টেনে এক ঝটকায় তাকে বিছানায় পিঠ ছোঁয়াতে বাধ্য করলো। তারপর চেপে বসলো তার শরীরে। এটারই অপেক্ষায় ছিল নিলু। দুই হাতে উন্মুুক্ত দুটো তারসহ সজোরে জড়িয়ে ধরলো লোকটাকে। বৈদ্যুতিক শকটা মারাত্মক না হলেও লোকটা ছাড়া পেল না। আপাতত ঘড়ি দেখার দরকার নেই নিলুর। ঘণ্টাখানেক লাগলো না। মিনিট দশেকের মধ্যেই ঝাঁকুনি খেতে খেতে বন্ধ হয়ে গেল লোকটার হৃৎপিণ্ড। নিস্তেজ হয়ে গেল নিলুও। যদিও মারা যাওয়ার বিষয়টা সে বুঝতে পারলো না।

(গুপ্তধন কোড 15067)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Please disable your adblocker or whitelist this site!

error: Content is protected !!