গত মাসেই বঙ্গোপসাগর হয়ে ভারত এবং বাংলাদেশের একাংশের ওপর দিয়ে বয়ে গেল ঘুর্ণিঝড় তিতলি। এবার এই পথ দিয়ে আসছে আরেক ঘূর্ণিঝড় ‘গাজা’। ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশের দিকে ধেয়ে আসছে। গভীর নিম্নচাপটি আরও শক্তি সঞ্চয় করে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। ফলে দেশের সমুদ্রবন্দর সমূহকে ২ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলেছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতর।
রোববার (১১ নভেম্বর) আবহাওয়া অধিদফতর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, গভীর নিম্নচাপটি ঘণীভূত হয়ে পূর্বমধ্য বঙ্গোপসাগর ও কাছাকাছি পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর এবং দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় ঘূর্ণিঝড় ‘গাজা’য় পরিণত হয়েছে। এটি রোববার সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ২০ কি.মি. দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৯৪৫ কি.মি. দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ৫ কি.মি. দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৯৬০ কি.মি. দক্ষিণে অবস্থান করছিল। এটি আরও ঘণীভূত হয়ে উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে।
তবে বাংলাদেশ ও ভারতের আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড়টির বাংলাদেশে উপকূলে আঘাত হানার সম্ভাবনা নেই। বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার আঞ্চলিক কমিটি এ ঘূর্ণিঝড়টির নাম দিয়েছে ‘গাজা’। নামটি দেয়া থাইল্যান্ডের।
আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান জানান, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘন্টায় ৬২ কি.মি. যা দমকা বা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কি.মি. পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটে সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে।
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সঙ্কেত নামিয়ে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সঙ্কেত দেখাতে বলা হয়েছে বলেও জানান হাফিজুর রহমান।
উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে তাদের গভীর সাগরে বিচরণ না করতেও বলেছে আবহাওয়া অধিদফতর।
২ নম্বর দূরবর্তী হুশিয়ারি সঙ্কেতের অর্থ হলো, দূরে গভীর সাগরে একটি ঝড় সৃষ্টি হয়েছে। সেখানে বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ থেকে ৮৮ কিলোমিটার। বন্দর এখনই ঝড়ে কবলিত হবে না, তবে বন্দর ত্যাগকারী জাহাজ পথিমথ্যে বিপদে পড়তে পারে।
ভারতের আবহাওয়া অধিদফতর রোববার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৮টায় বুলেটিনে জানিয়েছে, ‘গাজা’ আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। এরপর এটি ভারতের উত্তর তামিল নাড়ু-দক্ষিণ অন্ধ্র প্রদেশ উপকূলের দিকে এগিয়ে যেতে যেতে কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়বে। এটি ঘূর্ণিঝড় অবস্থায় আগামী ১৫ নভেম্বর বিকেল নাগাদ উত্তর তামিল নাড়ু-দক্ষিণ অন্ধ্র প্রদেশ উপকূলে আঘাত হানতে পারে।