Sunday, May 5
Shadow

দাঁত ভেঙে গেলে কী করবেন?

দাঁতবিভিন্ন দুর্ঘটনায় দাঁত ভেঙে যেতে পারে। যেমন টিউবওয়েলের হাতলের আঘাতে, খেলাধুলার সময় আঘাত পেয়ে অথবা সংঘর্ষ অর্থাৎ মারামারি, ঘুষাঘুষি করলে। আবার অনেক সময় দেখা যায় যে শক্ত কিছু দাঁত দিয়ে চিবোলেও দাঁত ভেঙে যেতে পারে। আবার বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দাঁতের বাহ্যিক ও মধ্য স্তরের ভঙ্গুরতা বাড়ে, তাই দাঁত ভাঙার আশঙ্কা বেড়ে যায়। দাঁতে বড় আকারে ফিলিং থাকলে, দাঁতের ক্ষয়রোগ থাকলে, দাঁত কিরমির করলে, দীর্ঘদিন সঠিক নিয়মে দাঁত ব্রাশ না করলে, কোনো কিছু দাঁত দিয়ে শক্ত করে কামড়ে ধরলেও দাঁত ভেঙে যেতে পারে।

দাঁত ভেঙে যাওয়ার কারণ ভিন্ন ভিন্ন এবং ভেঙে যাওয়ার ধরনও থাকে ভিন্ন। যেমন আংশিক ভাঙতে পারে, আবার সম্পূর্ণ ভেঙে পড়ে যেতে পারে।

দাঁতে সূক্ষ্ম ভাঙা থাকতে পারে, যা খালি চোখে সহজে বোঝা যায় না। সে ক্ষেত্রে বিভিন্ন পরীক্ষার মাধ্যমে তা নির্ণয় করতে হয়। ভাঙার পরিমাণটা কতখানি অথবা বাইরে যে অংশটুকু ভেঙে আছে, মাড়ির ভেতরে শিকড়ে কোনো ভাঙা বা ফাটল আছে কি না। যদি শিকড়ে ফাটল বা ভাঙা দেখা যায়, তবে হয়তোবা দাঁতটিকে শেষ রক্ষা করা যায় না।

লক্ষণ

  • কোনো কিছুতে কামড় দিলে ব্যথা লাগলে, ঠান্ডা বা গরমের দীর্ঘনুভূতি হলে
  • দাঁতে ক্যারিজ বা ক্ষয় না থাকা সত্ত্বেও উক্ত লক্ষণ দেখা দিলে বুঝতে হবে যে দাঁতে ভাঙা আছে

ভাঙা দাঁতের মুখে কী কী সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে?

ভাঙা দাঁতের ভেতরে অবস্থিত দন্তমজ্জায় পচন ধরে ধীরে ধীরে সংক্রমণ হতে পারে। ফলে পাশের দাঁতেরও সমস্যা হতে পারে। ভাঙা দাঁতের গর্তে বা ফাঁকা স্থানে ঢুকে থাকা খাদ্যকণা মুখে দুর্গন্ধ সৃষ্টি করে। ভাঙা দাঁতের ধারালো অংশের ঘর্ষণে জিহ্বার বা গালের নরম অংশে ঘা হতে পারে। এই ঘা কিছুদিন পর ভালো হয়, আবার আঘাতের ফলে সেই ঘা আবার জেগে ওঠে। সেখান থেকে এমনকি ক্যানসারও হতে পারে।

দাঁত চিকিৎসা

দাঁত ভেঙে যাওয়া ধরন অনুযায়ী চিকিৎসাও ভিন্ন ভিন্ন। আবার দাঁত ভেঙে গেলেই যে তুলে ফেলতে হবে, ব্যাপারটি এমন নয়। কারণ, আধুনিক দন্তচিকিৎসা এখন খুবই উন্নত। এক একটি ভাঙা দাঁতকে রাখার জন্য রুট ক্যানেল করে গোরসেলিন বা মেটালিক ক্যাপ করে সংরক্ষণ করা সম্ভব। তাই দুশ্চিন্তার কিছু নেই। সময়মতো বিশেষজ্ঞ ডেন্টাল সার্জনের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে পারে আপনার সুন্দর হাসি। আর অন্যথা হলে ভালোর চেয়ে ক্ষতিই হতে পারে।

প্রতিরোধ

  • দাঁতে ছোট ক্যারিজ থাকতেই তার চিকিৎসা করানো উচিত
  • সঠিক নিয়মে দাঁত ব্রাশের অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে
  • মাংসের বড় হাড় বা শক্ত কিছু দাঁত দিয়ে চিবোনো বা খোলা পরিহার করুন
  • মানসিক চাপ পরিহার করা, সময়মতো দাঁত ফিলিং করা, সঠিক জায়গায় অর্থাৎ হাতুড়ে চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা নেওয়া পরিহার করা উচিত।

লেখক: ঢাকা ডেন্টাল কলেজ হাসপাতাল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Please disable your adblocker or whitelist this site!

error: Content is protected !!