রাজধানীর হাসপাতালগুলোতে উপচে পড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা । শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে প্রায় প্রতিদিন স্কয়ার হাসপাতাল,শহীদ সোহরাওয়াদী হাসপাতালএবং ডা.সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে র্ভতি হচ্ছেন তারা।
শহীদ সোহরাওয়াদী মেডিকেল কলেজে এ খোজ নিয়ে জানা যায় প্রতিদিন গড়ে ৪০ % ভাগ রোগী বিভিন্ন সিনড্রম নিয়ে হাসপাতালে আসলেও পরীক্ষা নিরীক্ষা করে ডেঙ্গু জানার পর চিকিৎসর জন্য ভর্তি। হাসপাতালে ডেঙ্গুতে ভর্তি আছে । হাসপাতালের জেনারেল ওয়ার্ডে গিয়ে কথা হয় ভর্তি রোগী নাজমা বেগমের সাথে। নাজমা বললেন, শরীর খুবই দুর্বল। জ্বর আজ আটদিন তবে ৩ দিন ধরে চলাফেরায় কষ্ট হচ্ছে। পেটে প্রচন্ড ব্যথা নিয়ে ভর্তি হলেও পরীক্ষা নিরিক্ষার পর ডেঙ্গু ধরা পরে তাই এখানে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
ডা.সিরাজুল ইসলাম মেডিকেলেও খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রায় প্রতিদিন গড়ে ৩৫ থেকে ৪০ জন রোগী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ডা. সিরাজুল ইসলাম মেডিকেলে হাসপাতালে আসছেন। গতকাল সকালে মুরসালীন নামের আট বছরের শিশু মারা গেছেন এমন চলতে থাকলে অচিরেই মহামারি আকার ধারন করবে ডেঙ্গু বলে জানালেন ডা. সিরাজুল ইসলাম মেডিকেলের হাসপাতালের চিকিৎসকরা।
এ বিষয়ে ডা.সিরাজুল ইসলাম মেডিকেলের সহযোগী অধ্যাপক সাবরিনা ইয়াসমিন বলেন, ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীরা ডেঙ্গু কো- ইনফেকশন বেশি ভুগছেন। এবারের রোগীদের রোগ ও জ্বরের ধরণ আগের থেকে সর্ম্পূণ আলাদা। সেন্ট্রাল হাসপাতালের অধ্যাপক আতীয়া রহমান জানান, জুন মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দৈনিক গড়ে ৫০ জন রোগী ভর্তি হয়। বর্তমানে এ সংখ্যা ৩৫ থেকে ৪০ এ দাঁড়িয়েছে। বেশিরভাগ রোগীই হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। বেশ কয়েকজন আইসিইউতে আছেন।
এখন পর্যন্ত এ হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে একজন নারী মারা গেছেন। এখানে চিকিৎসা নেয়া অধিকাংশ রোগীই দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠছেন। কিন্তু যাদের ডেঙ্গু সঙ্গে হার্ট, ফুসফুস কিংবা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থাকে তাদের সেরে উঠতে একটু সময় লেগে যায়। এখন পর্যন্ত চিকিৎসা নেয়া ২০ ভাগ রোগী গুরুতর তাদের আইসিইউতে রেখে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। তবে তাদের সবাই সেরে উঠেছেন। স্থাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালে বাংলাদেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন ২ হাজার ৭৬৯ জন। মারা গেছেন ৮ জন। তবে চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৪ হাজার ছাড়িয়েছে। সেন্ট্রাল হাসপাতালের অধিকাংশ ওয়ার্ড ঘুরে দেখা গেল, ভর্তি হওয়াদের মধ্যে অধিকাংশের বয়স ১০ বছরের নীচে এবং ৪০-৪৫ বছরের উপরে।
সেন্ট্রাল হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক ইনচার্জ অ্যান্ড কনসালটেন্ট ডা. সুজিত কুমার রায় বলেন, এখন পর্যন্ত চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। অধিকাংশই ছোট বাচ্চা এবং বয়স্কদের। এ ছাড়াও আক্রান্তরা অনেকেই অন্যান্য অসুখে ভুগছে। তাই তাদের সারতে একটু সময় লেগে যাচ্ছে। তবে শিশুদেও আক্রান্ত বা রোগী সংখ্যা বেশি।