এক গবেষণায় বলা হয়, অর্ধেকের বেশি নারী এমনটা করেন। সঙ্গীর সঙ্গে রোমান্টিক সেক্সের পরও তারা পরম সুখে হাসেন না। বরং দুই চোখে অঝোর ঝারায় অশ্রু ঝরে। যৌনতার পর তারা নিজেদের দুর্দশাগ্রস্ত মনে করেন। ‘সেক্সুয়াল মেডিসিন’ জার্নালে প্রকাশিত এ গবেষণাপত্রে বলা হয়, এটা একটা মানসিক অবস্থা যাবে বলে ‘পোস্ট-সেক্স ব্লুস’। টেলিগ্রাফের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এই মানসিক অবস্থার কথা।
চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় একে ‘পোস্টু কইটাল ডিসফোরিয়া বা পিসিডি’ বলা হয়। সেক্সের পর চোখে পানি, বিষণ্নতাবোধ, আগ্রাসী মনোভাবের শিকার বলে মনে হওয়া এবং উৎকণ্ঠা বোধ হওয়া এ সমস্যার লক্ষণ।
এ গবেষণায় আমেরিকায় ২৩০ জন নারীর ওপর জরিপ চালানো হয়। এদের ৫ শতাংশ জানান, বিগত মাসগুলোতে বেশ কয়েকবার তাদের এ সমস্যা হয়েছে।
সেক্সের পর কান্না, নারী-পুরুষের কিসের লক্ষণ?
২০১১ সালে ‘ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব সেক্সুয়াল হেলথ’-এ প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, এক-তৃতীয়াংশ নারী তৃপ্তিদায়ক যৌনকর্মের পরও বিষণ্নতায় ভোগেন। তারা কাঁন্নার পেছনে বেশ সশয় ব্যয় করেন।
এমনকি সেক্সের আগেও অনেক নারী আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। ২৮ বছর বয়সী লরা নামের এক নারী জানান যে, সঙ্গী তাকে জড়িয়ে ধরার পরই তিনি কেঁদে ফেলেছিলেন। অনেক সময় এ অবস্থা কয়েক ঘণ্টা ধরে স্থায়ী হতে পারে। অনেক সময় সেক্সের পর রাতে ঘুমিয়ে সকালে ওঠার পরও মনে হয়, মনটা খারাপ হয়ে আছে।
আরো পড়ুন :স্তন ক্যান্সার শনাক্তকারী বক্ষবন্ধনী আবিষ্কার
২৫ বছর বয়সী সোফি জানান, সেক্সের পর প্রায়ই আমি কাঁদি। আমার কাছে মনে হয়, হয়তো এ অবস্থা কাটিয়ে ওঠার জন্যে দেহে অনেক বেশি হরমোনের প্রয়োজন।
বিশেষজ্ঞ ড. পেট্রা বয়নটন জানান, যৌনতার পর দুঃখবোধ হওয়া বা বিষণ্ন হয়ে পড়ার বিষয়টি অনেকগুলো কারণের ওপর নির্ভর করতে পারে। নানা ধরনের আবেগ নানাভাবে প্রভাবশালী হয়ে ওঠে।
এমনকি ছেলেরাও কাঁদতে পারেন। ৩১ বছর বয়সী চার্লি জানান, জীবনে প্রথমবার সেক্স করার পর প্রচুর কেঁদেছি। আমি ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম।
সম্পর্ক বিষয়ক বিশেষজ্ঞ জেন ডে বলেন, নানা স্বাদ ও গন্ধ হয়ে জীবনে আসে সেক্স। খুব আবেগের সঙ্গে, ধীর লয়ে ও গভীর অনুভূতি নিয়ে যৌনতার পর এমনিতেই মনটা ভার হয়ে থাকতে পারে। এ বিষয়ের সঙ্গে সবাই অভ্যস্ত না হয়ে উঠলে ভুল ব্যাখ্যা আসতে পারে। পরবর্তী প্রতিক্রিয়ায় আশঙ্কা, দুশ্চিন্তা এবং ভালো না লাগার অনুভূতি চলে আসতে পারে।
তবে ড. বয়নটনের মতে, এ সমস্যা কিন্তু দুজনকে মানসিকভাবে আরো কাছে আনতে পারে। আবার সেক্সের ধরনের ওপরও আবেগে নানাভাবে নাড়া লাগতে পারে।
আরো পড়ুন : প্রেগন্যান্সিতে কি মধু খাওয়া যাবে?
মূলত সেক্সুয়াল মেডিসিন সঙ্গী-সঙ্গিনীর মাঝের এ সমস্যা নিয়ে তেমন মাথা ঘামায় না। সেক্স সব সময়ই প্রগাঢ় অনুভূতি দেয়। তাই স্বাভাবিক কর্মের ক্ষেত্রেও মনের ওপর চাপ পড়ে। তবে যদি মনে হয়, এটা কোনো সিনড্রোম হয়ে দেখা দিয়েছে, তবে একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।