রোমান্টিক থ্রিলার ঘরানার বইটি মধ্যবয়সী পুরুষ তৈয়ব আখন্দকে ঘিরে। জীবন সংসারের প্রতি খানিকটা উন্নাসিক কিন্তু বুদ্ধিমান এ মানুষটা পালিয়ে বেড়াতে চায়। কিন্তু আচমকা টাঙন নদী ঘেঁষা গ্রাম পদ্মলতায় এসে সে আটকা পড়ে চাঁদের আলোয় ঝুলতে থাকা একটা লাশ আর লাবনীর জালে। তৈয়ব নিজেকে বের করে আনার চেষ্টা করে। চলতে থাকে জড়িয়ে পড়া ও ছাড়িয়ে আনার মাঝে টানাপড়েন।
রোমান্টিক থ্রিলার প্রেমের গল্প ও একই সঙ্গে থ্রিলার স্বাদের উপন্যাস ছায়া এসে পড়ে । লেখক ধ্রুব নীল
কুরিয়ারে হার্ড কপি পেতে এই পেইজে অর্ডার করুন
প্রথম পর্ব
১
‘তৈয়ব সাহেব, জলদি নিন। সময় নেই।’
খামটা টেবিলে রেখে হেলান দিয়ে চোখ বুঁজলেন ম্যানেজার। তৈয়ব আখন্দের বলতে ইচ্ছে করলো, সময় কারওরই থাকে না। আপনার মতো ম্যানেজারেরও না, আবার বদরুল চোরেরও না। চুরির দায়ে কিছুদিন আগে চাকরি যায় অফিসের পিয়ন বদরুলের। তবে বসের চোখ বন্ধ করা দেখে মনে হচ্ছে তিনি কিছুটা লজ্জিত। তৈয়বের দিকে তাকাতে চাচ্ছে না। তৈয়ব জানে খামে কী আছে। অবাক হওয়ার ভান করলো না। তার ধারণা সে ভানটান সে করতে পারে না।
তৈয়ব চিঠি নিয়ে বসলো নিজের ডেস্কে।ম্যানেজারকে যাই বা আসি কিছু বললো না। এখন আর তিনি তৈয়বের বস না। তৈয়বের কাছে মোড়ের দোকানদার যা, এই ম্যানেজারও তা।
ফিক ফিক করে কাঁদে কে? নাবিলারও কি চাকরি নেই?
‘তৈয়ব ভাই, খাম পেয়েছেন? হারামজাদাকে ঘুষি মারলেন না? কথা নাই বার্তা নাই চাকরি খেয়ে দেবে! বলে কিনা বেতন কি পকেট দেবো? হারামজাদা তুই কোম্পানির মালিক, তোর পকেট থেকেই তো দিবি।’
তৈয়ব জবাব দিল না। খামটা টেবিলে রেখে দিল। চশমাটা বুক পকেটে কিছুক্ষণ ডলাডলি করে আবার পরলো।চিঠি খুলে দেখার দরকার নেই। অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার মানুষ আগ্রহ নিয়ে পড়ে। ছাঁটাইপত্রে পড়ার কিছু নেই। তাছাড়া চাকরি চলে যাওয়ার মতো কাজটা ইচ্ছে করেই করেছে। একজন ক্লায়েন্টকে সরাসরি বলে দিয়েছে, এই ফ্ø্যাটে ঝামেলা আছে। একই ফ্ল্যাট এর আগে আরও দুজনকে বিক্রি করা হয়েছে।ল্যাচকা কিসিমের ক্লায়েন্ট। তৈয়ব জানে সে আবার তার ম্যানেজারকে ফোন করে বিষয়টা বলবে। এ কারণেই চাকরি নেই। নাবিলার কেন গেল তা বলতে পারছে না।
ডেস্কে তেমন কিছু নেই। ড্রয়ারে দুয়েকটা ডায়েরি। ক্লায়েন্টদের নাম ঠিকানা লেখা। ওটা নিয়ে কাজ নেই। তৈয়ব এখন বেকার। তাকে আর ফ্ল্যাট-জমি বেচার জন্য ঘুর ঘুর করতে হবে না।
রোমান্টিক থ্রিলার উপন্যাস
স্ট্যান্ডে আসতেই বাস পেয়ে গেলো। পকেটে টাকা আছে কিছু। আপাতত আর বুথ থেকে তোলার দরকার নেই।টিকিট কেটে উঠে পড়লো। বহুদিন পর গ্রামের বাড়ি যাচ্ছে।
আগে বাড়ি যাওয়ার সময় ফলটল একটা কিছু নিতো। এখন নিতে হয় না। বাড়িতে কেউ নেই। মা-বাবা নেই। বাড়িতে কেউ থাকেও না। চাচারাও সব মরে গেছে।বাড়িতে তালা দেওয়া থাকতে পারে। ‘ঝামেলা হলো দেখছি। বাড়ির চাবি তো নেই।’
গাড়ি ছাড়তেই মনে পড়লো মিনুর কথা।পাঁচ বছর বয়সী একমাত্র মেয়ে। মনটা খারাপ হয়ে গেলো তৈয়বের। পকেটে হাত রেখেই বুঝলো আরেক অনর্থ ঘটে গেছে। অফিসের ড্রয়ারেফোনটা ফেলে এসেছে।
মিনু সকালে বলেছিল ‘বাবা, মুড়ি নিয়ে আসবে।’ চকোলেট চিপস খাবে না। মুড়ির জন্য পাগল। যত না খায়, তারচেয়ে বেশি ছিটায়। রেবেকা নিশ্চয়ই মিনুর জন্য মুড়ি কিনতে যাবে না। সে বিরাট ধনীর মেয়ে। মুড়ি তার কাছে অতি তুচ্ছ। মিনু কান্নাকাটি করলে দামি একটা চকোলেট ধরিয়ে দিতে পারে বড়জোর।
গাড়ি ছেড়ে দিয়েছে। মুড়ি না কেনায় মনটা খচখচ করছে। শেষে নামার ইচ্ছেটা বাদ দিলো। বয়স চল্লিশ পার হয়েছে। দৌড়ঝাঁপ করতে ভালো লাগে না ইদানীং।
বাড়ি যাওয়ার বিষয়টা রেবেকাকে জানানোর দরকার নেই। তৈয়ব জানে তার স্ত্রীর এতে বিশেষ আগ্রহ নেই। রেবেকাকে বললে সে বলবে, ঠিক আছে যাও।
চাকরি গেছে এটাও বলা যাবে না। তৈয়ব এমনিতেই রেবেকার গলার কাঁটা হয়ে ঝুলে আছে। বেকার হয়ে গেছে শুনলে রেবেকার মেজাজ চড়ে যেতে পারে। বেকার স্বামী সারাক্ষণ বাসায় বসে থাকলে তার মহাবিপদ। প্রেমিকের সঙ্গে যখন তখন দেখা করতে পারবে না।
একদিক দিয়ে সুবিধা হয়েছে। তৈয়ব অফিসে গেলে মিনুকে সেমরিয়মের কাছে রেখে যেত। এখন প্রেমিককেই বলবে, বাসায় আসো, আপদ বিদেয় হয়েছে।
তৈয়ব যে এসব জানে, রেবেকা সেটা জানে না। তৈয়বের পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা অনেকটা শার্লক হোমসের মতো। সে অনেক কিছু চট করে ধরে ফেলে। প্রকাশ করে না। এসব জানালেই কী, আর না জানালেই কী।
রেবেকার নতুন প্রেমের বিষয়টা বছরখানেক আগের। তৈয়বের এ নিয়ে সামান্য উসখুস ছিল। নিজ থেকে ডিভোর্সের কথা তুলতে পারছিল না। কারণ, বিচ্ছেদ হয়ে গেলে মিনুর সঙ্গে তার দেখা হওয়ার চান্স শূন্যের কাছাকাছি। রেবেকা মেয়েসহ অন্য কোথাও চলে যাবে। তৈয়ব দেখা করতে চাইলে রেবেকার বাবা তাকে খুন টুন করে ফেলতে পারেন। দুচারটা মার্ডার করানো তার ইশারার ব্যাপার মাত্র।
রেবেকার সঙ্গে কবে প্রেম হয়েছিল, কীভাবে কাউকে না জানিয়ে বিয়ে করেছিল এসব ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পড়ল তৈয়ব। স্বপ্নও দেখলো। একটা মুড়ি বানানোর মেশিন কিনেছে। মেশিনের একপাশে মুড়ি ঢালছে, অন্যপাশ দিয়ে মুড়িই বের হচ্ছে। স্বপ্ন মানেই বিচিত্র ব্যাপার স্যাপার।মুড়ি বানানোর মেশিন দেখে বিশাল এক হলঘরেখুশিতে চিৎকার করছে আরউড়ে বেড়াচ্ছে ডানাওয়ালা মিনু।
রোমান্টিক থ্রিলার উপন্যাস
দরজা খোলা। বাইরে থেকে কেবল ছিটকিনি লাগানো ছিল। টেনশন হওয়ার কথা। তবে তৈয়ব খুশিই হলো। পদ্মলতা গ্রামে রাত বিরাতে চাবিওয়ালা খুঁজে পেতো কই।
কপাট খুলতেই মনে হলো বাড়িতে কেউ রেগুলার আসা যাওয়া করে। পুরনো বাড়ির ঝুলপড়া গন্ধ নেই। ঝকঝকে একটা ভাব।
দেয়াল হাতড়ে বাতি জ্বালালো। ফিলামেন্টের ষাট পাওয়ারের বাতি। আহা, এ বাতিতেও কতো স্মৃতি। এখনকার এলইডি বাতিতে…। নাহ স্মৃতিকাতর হওয়া যাবে না ঠিক করলো তৈয়ব। বাস থেকে নেমে একটা ভাতের হোটেলে পুঁটির চচ্চড়ি দিয়ে ভরপেট খেয়ে এসেছে। এককাপ চা পেলে ভালো হতো।
‘কিডারে? তৈয়বনি? এতো রাইতে? হাতমুখ ধুইয়া আয় ভাত খাবি।’
শরবানু চাচীর গলা চিনতে পারলো তৈয়ব।
‘চাচী তুমি জেগে আছো?’
‘আমি তো চোখে দেখি না। হিসাবে তো ঘুমাইয়াই থাকি।’
চাচী গটগট করে এগিয়ে এলেন ভেতরের দিকে। গভীর রাতে চাচীর চোখের দিকে তাকালে যে কেউ হার্টফেল করবে। ধবধবে সাদা চোখ। তৈয়ব ভয় পেলো না। অনেক আগ থেকেই এই অন্ধ চাচীকে দেখে আসছে। চাচীর হাঁটার স্টাইল আর ঘরবাড়ির গোছানোর ধরন দেখে চট করে ধরা যায় না যে তিনি অন্ধ।
চাচীর গলা শুনে মনে হলো হুট করে বিশ বছর অতীতে চলে গেছে তৈয়ব। ভার্সিটি থেকে গ্রামে আসলে এই চাচী তাকে জড়িয়ে ধরে চুমু টুমু খেয়ে একাকার করতেন। চাচীর পানের শাদা পাতার গন্ধ এখনও পায় তৈয়ব।
শরবানু তৈয়বের বাবার ফুপাতো বোন। মাঝে মাঝে ভাইয়ের বাড়িতে থাকেন। ভাইয়ের স্ত্রী মনে হয় কথাটথা শোনায়। তখন এখানে চলে আসেন।
‘দরজা খোলা রেখে ঘুমাও নাকি?’
‘কী করমু, চোরাব্যাডাও আহে না। তুই আইলি কদ্দিন বাদে। বৌ কই, নাতনি কই।’
‘সব ছেড়ে এসেছি চাচী। গ্রামে কিছু করবো। কিছু না পারলে বসে বসে খাবো। তুমি খাওয়াবে।’
চাচী বিশেষ খুশি হতে পারলেন না। তিনি আবার তার নিজের নাতনিদের প্রসঙ্গে চলে গেলেন এবং যথারীতি বিলাপ করতে করতে ভেতরে চলে গেলেন।
‘চাচী তোমার কান্না শেষ হলে চা দিও। ভাত লাগবে না। ভাত খেয়েছি।’
ব্যাগ খুলে ওষুধ খেয়ে নিল তৈয়ব। প্যানিক ডিপ্রেশন জাতীয় ওষুধ। ঘুম না আসলেও বেশ ঝিমুনি ধরে। মাথা হালকা হয়ে যায়। বিষয়টা সুবিধার নয় জেনেও খায়। এই বয়সে একা মানুষ, একটু আধটু নেশাই না হয় হলো।
চায়ের কাপ হাতে বাড়ির পেছনে পা রাখতেই তৈয়বের মনে হলো সে ঢাকা টু ঠাকুরগাঁও এক্সপ্রেস বাসে চড়ে আসেনি। একটা টাইম মেশিনে এসেছে। মেশিনটা তাকে অতীতের এক ভরা পূর্ণিমার রাতে এনে ছেড়ে দিয়েছে।
রাত একটা। চাঁদেরও ঘুম নাই। তৈয়বজোনাকি দেখছে। চায়ের কাপটা রেখে দিল পাশের হাউসের ওপর। হাউস মানে সিমেন্টের একটা গামলা জাতীয় বস্তু। আগে কী কাজে ব্যবহার হতো তৈয়ব বুঝতে পারছে না। এখন শুকিয়ে খটখটে।
বৈশাখের মাঝামাঝি। ঝড় বাদলা হতে পারে যেকোনও সময়। মিনুকে নিয়ে আসতে পারলে দারুণ হতো। মেয়েটা বোধহয় এখনও জোনাকি দেখেনি। জোনাকি দেখে সে কী বলবে? বাবা, এগুলো ব্যাটারি লাগানো পোকা? মেয়েটার বুদ্ধি অনেক। ভেবে তৃপ্তি পায় তৈয়ব। বুদ্ধিমান মেয়েরা সহজে কষ্ট পায় না। তার নিজেরও বেজায় বুদ্ধি। কিন্তু তার বুকে কষ্ট চেপে ধরে রেখেছে। মুড়ি না কেনার কষ্ট।
চাঁদের আলোয় স্থির দাঁড়িয়ে থাকা গাছগুলোকে এখন আর ভীতিকর মনে হচ্ছে না। মনে হচ্ছে ওরা তৈয়বের ওপর কিঞ্চিৎ রেগে আছে। রেগে গিয়ে বলার চেষ্টা করছে, ‘তুমি মিয়া একটা ছাগল। তোমার যে বুদ্ধি তাতে রেবেকা আর তার বাপরে ঘোল খাওয়াইতে পারতা। তা না কইরা নিজে পলাইয়া বেড়াইতাসো। মাইয়াটারে নিয়া আসলে সে এখন জোনাকির পিছনে কেমুন দৌড়ানিটা দিত।’
পাশে ওটা কে? মনে হয় নিমগাছ। চিরল পাতা। সেও মিনমিন করে বলল, ‘ছোটকালে পোলামাইয়াদের গ্রামে নিয়া আসা ভালো। গাছগাছালি চেনার দরকার আছে। পরে বড় হইয়া লিচু আর কাঁঠাল এক কইরা ফেলবো।’
তৈয়ব হাঁটছে। দূরে টাঙন নদীতে বাতাসের শব্দ। চাঁদের আলোয় নদী ভেসে যাচ্ছে নিশ্চয়ই। সেদিকেই যাবে? পেছনে জংলা আর একটা ডোবার পাশে চিকন পায়ে হাঁটা পথ। তারপর হালকা একটা জঙ্গল। আগে শিয়ালের বাসা ছিল। এখন নেই। ওটা পার হলে ধানক্ষেত। আশপাশে দুয়েকটা ভিটাবাড়ি আছে। ইট সিমেন্টের বাড়িও আছে। ইদানীং আর আগের মতো দ্বীপের মতো বিচ্ছিন্ন বাড়ি দেখা যায় না। গ্রামগুলোও শহরের মতো সারি সারি হয়ে যাচ্ছে।মজার বিষয় হলো কিছু বিল্ডিংয়ের সামনে খড়ের গাদা দেখা যায়। গ্রামকে গ্রাম হতে গেলে বাড়িতে গরু-ছাগল কিছু থাকতেই হবে।
দমকা বাতাস শুরু হয়েছে। চাঁদটা ঘন ঘন ঢাকা পড়ছে মেঘে। তৈয়বের ফিরে যাওয়ার তাগাদা নেই। ঝড় এলে গাছের তলায় বসে থাকবে। ডোবাটার পাড়ে লম্বা লম্বা গাছ। বজ্রপাত হলে হবে। এক সেকেন্ডে পগারপার। পগার মানে দুই জমির মাঝের খাল। পৃথিবী এক জমি। মৃত্যুর পর আরেক জমি।
এত ঘন ঘন মরার কথা ভাবার কারণটা বুঝতে পারলো। আলো-আঁধারিতে একটা অবয়ব চোখে পড়েছে তৈয়বের। গাছের ডালে ঝুলে বাতাসে দোল খাচ্ছে।
বাতাসের কারণে মনে হচ্ছে মধ্যবয়সী লোকটা হাত-পা ছড়িয়ে দুলছে ছোট শিশুর মতো। তৈয়ব আগে কোনোদিন ফাঁস দেওয়া লাশ দেখেনি। সরাসরি দেখা আর ছবিতে দেখার মাঝে বিস্তর ফারাক।
ঝুলন্ত লাশটার সামনে দাঁড়ালো। নিশ্চিত হলো লোকটা আত্মহত্যা করেনি। কেউ তাকে জোর করে ঝুলিয়ে দিয়ে গেছে। লোকটার পরনে পরিপাটি ইস্ত্রি করা শার্ট। সেটার বোতাম আবার এলোমেলো করে লাগানো। তাড়াহুড়ো করে বের হয়েছে রাতে। ভুর ভুর করে একটা বিশেষ পারফিউমের ঘ্রাণও আসছে জামা থেকে। এতো রাতে এ সুগন্ধী মেখে কেউ সুইসাইড করবে?সাধারণ সুগন্ধী মেখে করতে পারে। এটা সাধারণ পারফিউম নয়। অপঘাতে মারা যাওয়া লাশের দাফন হতে দেরি হয়। ততক্ষণে লাশের শরীর থেকে গন্ধ বের হতে পারে। এই লোকটা এতকিছু ভেবে শরীরে আতর মাখবে তা মনে হয় না। তৈয়ব এ সুগন্ধীটা চেনে।এর একটা বিশেষত্ব আছে।
লোকটার পায়ের নিচে একটা কাত হয়ে পড়ে থাকা টুল থাকার কথা। সেটা নেই। গলায় দড়ি লাগিয়ে গাছ থেকে লাফ দেবে? মনে হয় না।
হুড়মুড়িয়ে শুরু হলো ঝড়। প্রচণ্ড বাতাসে পড়ে গেল তৈয়বের চমশা। সঙ্গে টর্চ না এনে বিরাট ভুল করেছে। যে গাছের ডালে লাশ ঝুলছে, সেটার গোড়ায় গিয়ে বসলো। ঝাপটা থেকে বাঁচা যাচ্ছে না। চশমা না থাকায় সব ঝাপসা দেখছে।
পথ চিনে বাড়ি যাবে কী করে। গরমের মধ্যেও শীতে কেঁপে উঠলো তৈয়ব। এদিকে ঝিমুনিও ধরেছে সময়মতো। এখন জ্বর এলে ষোলো ষোলো বত্রিশ কলা হবে। উল্টোপাল্টাও দেখতে পারে। মিনুর খিলখিল হাসি শুনতে পাবে একটু পর। মিনু সঙ্গে থাকলে তাকে নিয়েই বের হতো তৈয়ব?ওকে গ্রামে না এনে ভালোই হয়েছে। ভয়াবহ এ দৃশ্য আজীবনের জন্য মাথায় ঢুকে যেত মেয়েটার।
ভাবতে ভাবতে গা এলিয়ে দিলো গাছের গোড়ায়। তৈয়বের মনে হচ্ছে, প্রকৃতির সঙ্গে মিশে একেবারে কাদামাটি হয়ে গেছে।
রোমান্টিক থ্রিলার উপন্যাস
(পর্ব-২ আসছে । সাইটটি “Accept” বাটনে ক্লিক করে সাবসক্রাইব করে রাখুন)
(ডোনেশন পাঠানোর জন্য বিকাশ নম্বর: 01976-324725)
ছায়া এসে পড়ে পর্ব -২ এর লিংক
ছায়া এসে পড়ে পর্ব -৩ এর লিংক
ছায়া এসে পড়ে পর্ব -৪ এর লিংক
ছায়া এসে পড়ে পর্ব -৫ এর লিংক