এই সংস্থার সদর দফতর ওয়াশিংটন ডিসিতে গভর্নিং বোর্ডে শীঘ্রই তিনি যোগ দেবেন বলে ১৬ নভেম্বর প্রাপ্ত সংবাদে জানা গেছে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজের মেধাবি ছাত্র ড. আহসান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও মেডিসিনে স্বর্ণপদক লাভ করেছিলেন। ইংল্যান্ড থেকে কৃতিত্বের সাথে এমআরসিপি এবং পিএইচডি করার পর যুক্তরাষ্ট্রের ফিলাডেলফিয়ায় মেডিসিন এবং কার্ডিওলজিতে ট্রেনিং এবং ডিগ্রী নিয়ে নিউইয়র্কের মাউন্ট সাইনাই থেকে কার্ডিওলজির উপর বিশেষ ট্রেনিং নেন ড. আহসান। এরপর প্রথমে ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়াতে সহযোগী অধ্যাপক এবং ডিরেক্টর অব কার্ডিয়াক ক্যাথ ল্যাব হিসেবে কাজ শুরু করেন। সেখান থেকে লাসভেগাসে ইউনিভার্সিটি অব নেভাদাতে তিনি অত্যন্ত সাফল্যের সাথে এগিয়ে যান। স্বল্প সময়ে এবং অত্যন্ত তরুণ বয়েসে তিনি পূর্ণাঙ্গ অধ্যাপক হবার কৃতিত্ব লাভ করেন। সেখানে তিনি কার্ডিওলজি প্রোগ্রাম এর ডিরেক্টর হিসেবে সেই প্রোগ্রামকে অত্যন্ত সমৃদ্ধ করে ভূয়সী প্রশাংসা লাভ করেন। তারই স্বীকৃতি হিসেবে ২০১৭ সালে ‘লাসভেগাস হিলস এওয়ার্ড’ পান এবং ‘আলফা ওমেগা আলফা মেডিকেল অনর সোসাইটি’র ফ্যাকাল্টি মেম্বারের সন্মান অর্জন করেন।
তিনি শুধু ভালো ছাত্র এবং একাডেমিক হিসেবেই থেমে থাকেননি। জীবনের প্রথম থেকেই তিনি মানুষ, দেশ এবং সংগঠনের উন্নতির জন্য নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজে অধ্যয়নকালে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী “সন্ধানী”র দেশব্যাপী সম্প্রসারণ এবং সন্ধানী মরণোত্তর চক্ষুদান সমিতি প্রতিষ্ঠায় মূল ভূমিকায় ছিলেন ড. আহসান। তিনি ‘উত্তর আমেরিকা বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন’র কার্যক্রমকে সেবামুখী করতেও সচেষ্ট রয়েছেন সব সময়। তার চেষ্টায় গঠিত হয় ক্যালিফোর্নিয়া চ্যাপ্টার এবং এই চ্যাপ্টারকে শক্তিশালী ভিতের ওপর দাঁড় করাতেও ভূমিকা রাখেন। লাসভেগাসে উত্তর আমেরিকা বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের জাতীয় কনভেনশনের আহ্বায়ক হিসিবে তিনি এই সংগঠনকে একটি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে যান।
উল্লেখ্য, নেভাদা চ্যাপ্টারও তার নেতৃত্বেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। পরবর্তী পর্যায়ে তিনি উত্তর আমেরিকা বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের সভাপতি নির্বাচিত হন এবং এই সংগঠনকে একটি অরাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান এবং পূর্ণ পেশাদারি সংগঠন হিসাবে গড়ে তোলার জন্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করেন।
আমেরিকাতে পেশাগত ব্যস্ততায় থেকেও তিনি বাংলাদেশের উন্নতির জন্য বিশেষ ভূমিকা রেখে চলেছেন। নিজ উদ্যোগে বছরে দু’বার বাংলাদেশ গিয়ে তিনি বারডেম এর ইব্রাহিম কার্ডিয়াক সেন্টারকে একটি উন্নতমানের হাসপাতাল হিসাবে গড়ে তুলতে সবিশেষ ভূমিকা রাখেন। ইব্রাহিম কার্ডিয়াক সেন্টারে তিনি ক্যালিফোর্নিয়ার বাংলাদেশি দাতা সিতারা খান এবং খান ফাউন্ডেশনের সহায়তায় প্রায় কোয়ার্টার মিলিয়ন ডলার ব্যয়ে ইমদাদ খান ভাস্কুলার ল্যাব প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি বহুবার নিজ উদ্যোগে তার আমেরিকান কার্ডিওলজি টিম নিয়ে ঢাকায় বারডেম, হার্ট ফাউন্ডেশন, এবং অন্যান্য স্থানে চিকিৎসা এবং ডাক্তারদের কার্ডিওলজি ট্রেনিং, ছাত্রদের শিক্ষা এবং হার্টের উপর মেডিকেল রিসার্চ করেছেন।
বাংলাদেশি আমেরিকান হিসেবে তিনি এখানে মূলধারা রাজনীতির সাথেও সক্রিয়। তার স্ত্রী ডাঃ সেলিনা পারভীন, একজন নিউরোলজিস্ট এবং তাদের দুই ছেলে এখনও পড়াশুনায় ব্যাস্ত। চিকিৎসা ক্ষেত্রে তার অর্জন এবং সেবার উদাহরণ অন্যান্য পেশাজীবী মানুষ এবং প্রজন্মরা উৎসাহিত হবে নিঃসন্দেহে।