উষ্ণায়নের দৌলতে জলবায়ু পরিবর্তনের জোর ধাক্কা লাগছে আমাদের হৃদয়ে! আমাদের শরীরের নিম্নাংশেও! বিপদঘণ্টা বাজিয়ে দিচ্ছে হার্ট, কিডনিতে।
অস্বাভাবিক ভাবে দ্রুত জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে উত্তরোত্তর চাপ বাড়ছে আমাদের হৃদযন্ত্রে (হার্ট)। বিগড়ে যাচ্ছে আমাদের দু’টি কি়ডনিও। যা মৃত্যু বা পঙ্গুত্বকে আরও এগিয়ে আনছে। ভারতের মতো দেশে তা শ্রমিক, কর্মচারীদের কাজ করার শক্তি কমিয়ে দিচ্ছে।
চিকিৎসা-সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক জার্নাল ‘দ্য ল্যানসেট’-এর হালের সংখ্যায় প্রকাশিত একটি কাউন্টডাউন রিপোর্ট এই তথ্য দিয়েছে। ওই রিপোর্ট বলছে, দ্রুত অস্বাভাবিক ভাবে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে পৃথিবীর ‘জ্বর’ (তাপমাত্রা) বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। তার জেরে বাড়ছে তীব্র তাপপ্রবাহের ঘটনা। আর সেই তাপপ্রবাহের প্রাবল্যও। সেই তীব্র তাপপ্রবাহের জন্য বিভিন্ন রোগ ও মৃত্যুর সংখ্যা উদ্বেগজনক ভাবে বাড়ছে।
আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ২৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিশিষ্ট অধ্যাপক, গবেষকদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই তৈরি করা হয়েছে ওই কাউন্টডাউন রিপোর্ট।
ওই রিপোর্ট জানিয়েছে, দ্রুত জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ১৯০১ থেকে ২০০৭ পর্যন্ত গত ১০৬ বছরে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের গড় তাপমাত্রা বেড়েছে ০.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসেরও বেশি। তার ফলে, ৬৫ বছরেরও বেশি বয়সী যাঁদের ডায়াবেটিস, শ্বাসকষ্ট বা হার্টের অসুখ রয়েছে, তাঁরা আরও বেশি করে হার্ট ও কিডনির জটিল সমস্যায় ডুবে যাচ্ছেন। হার্ট ও কিডনির সমস্যায় পরে আক্রান্ত হয়েছেন, এমন ১৫ কোটি ৭০ লক্ষেরও বেশি ভারতীয় তাপপ্রবাহের ধকল সয়েছিলেন শুধু ২০১৭ সালেই। যা তার আগের বছরের চেয়ে ছিল প্রায় ১৮ কোটি বেশি।
‘ল্যানসেট’-এ প্রকাশিত ওই কাউন্টডাউন রিপোর্ট বলছে, তাপপ্রবাহ ভারতে শ্রমিক, কর্মচারীদের কাজের উৎসাহও কমিয়ে দিচ্ছে। তার ফলে, নষ্ট হচ্ছে অনেক শ্রম ঘণ্টা। শুধু ২০১৭ সালেই এই ভাবে নষ্ট হয়েছে ১৫ হাজার ৩০০ কোটি শ্রম ঘণ্টা। যা ২০০০ সালের চেয়ে ৬ হাজার ২০০ কোটি শ্রম ঘণ্টা বেশি। আর সেই শ্রম ঘণ্টা সবচেয়ে বেশি নষ্ট হয়েছে কৃষিক্ষেত্রে। ৮০ শতাংশ।