জীবন মানুষকে অনেক কিছুই শেখায়। নানা ধরনের অভিজ্ঞতা, অভিযোগ ও পরিস্থিতির মাধ্যমে একজন মানুষ বেড়ে ওঠে। ভালো-খারাপ আচরণবিধি, মানুষকে সম্মান করা, সত্য কথা বলার শিক্ষাও লাভ করে সমাজের প্রত্যহ জীবন থেকে।
প্রত্যেক মানুষের জীবনের ভালো-মন্দ দিক আছে। যেকোনো বা যেমন পরিস্থিতি হোক না কেন, কখনোই হতাশ হবেন না। ভেঙে না পড়ে সেই পরিস্থিতি থেকে বের হতে সমস্যার উৎপত্তির কারণ এবং সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করুন। দেখবেন রাতের অন্ধকারের শেষের ভোরের আলো সূর্যের ন্যায় আপনার জীবন আলোকিত হবে।
সামাজিক যোগাযোগের সঠিক ব্যবহার
মানুষ সামাজিক জীব। একতরফা জায়গায় মানুষ কখনো একা বসবাস করবে তা অসম্ভব। কিন্তু বর্তমানে ইন্টারনেটের গতি, প্রযুক্তি নানা ডিজিটাল সংস্করণ সেই সামাজিক সমাজ নানা রকমের বিপর্যয় নেমে এসেছে। মিডিয়া, টিকটক, ফেসবুক ইত্যাদি অনৈতিক ব্যবহারের ফলে সামাজিক নৈতিকতার ভিত্তি ক্ষয় হচ্ছে। ওয়েবসাইটে নানা রকমের ভুয়া বা মিথ্যা প্রচার, প্রতারণার মাধ্যমে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। সরকারের উচিত এই বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি রোধ করা এবং সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া। আমাদেরকেও উচিত এর সঠিক ব্যবহার করা।
হতাশ নয়, উঠে দাঁড়ান
সব ফলাফলের সফলতা-ব্যর্থতা রয়েছে। আপনার আশেপাশের সবাই সমতা ক্ষমতা নেই। কেউ ব্যর্থ, কেউ সফল। এই দুই পাল্লায় মানুষ তার ভবিষ্যৎ গড়ে তোলে।
আপনি জীবনে সফলতা হেরেছেন বলে হতাশার মধ্যে দিন কাটিয়ে দেবেন না। হতাশা শয়তানের জাদুকাঠি। হতাশা ছাড়ুন এবং পুনরায় শুরু করুন। সামনের দিকে এগিয়ে যান। অতীত বা পিছে ফেলে আসা সব ত্যাগ করে এগিয়ে যান দেখবেন সফলতা আপনার হাতের মুঠোয়।
আমেরিকান প্রখ্যাত কমেডিয়ান মিল্টন বার্লে বলেছেন, ‘তুমি যদি জীবনের সঠিক রাস্তাতেই থাকো, কিন্তু কাজকর্ম না করেই মাঝরাস্তায় বসে থাকলে; গাড়িচাপায় পড়ে মৃত্যু নিশ্চিত।’
ভালো-খারাপের পার্থক্য বুঝতে শিখুন
ভাল দুই অক্ষরের একটি ছোট শব্দ। ভাল এই শব্দটি সবার কাছে খুবই প্রিয় তার কোনো সন্দেহ নেই। এর কার্যকারিতা কেউ পছন্দ করেন না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া খুবই বিরল।
তবু ও বলতে হচ্ছে সব ভালো সবসময় ভাল নয়। আমাদের আশেপাশে অনেক মানুষ ও জিনিস আছে হরেক রকমের।
আপনার সাথে অপরিচিত বা পরিচিত তাদের অপস্বার্থে আপনার উপকার বা ভালো ব্যবহার করছে। আপনার বিশ্বাস অর্জন করে । পরবর্তীতে আপনার সবচেয়ে বড় ক্ষতি তাঁরাই করে থাকে । পর্দার আড়ালে ভালো মানুষির কুৎসিত চেহারা মানুষের কাছ থেকে দূরে থাকুন সবসময়।
কিন্তু আমরা প্রায় সময় তাদের অবহেলা করি যারা আমাদের ভালো ছাড়া ক্ষতি কখনোই কাম্য করে না।
যেমন আমাদের বাবা মা। তাদের উপদেশ তিক্ত মনে হলেও, সেটা মেনে চললে আপনি অবশ্যই সফল হবেন।
তাই খারাপ লোকদের কাছ থেকে দূরে থাকুন।
পড়াশোনায় সাময়িক বিরতি দিন
পড়াশোনা ছাড়া জ্ঞান অর্জন সম্ভব নয়। যে যত পড়ালেখা করবে , তার মেধা ততই শানিত হবে। তবে সব কিছুতে একটা সীমিত পর্যায় আছে। কোনো কিছুতেই বাড়াবাড়ি ঠিক নয়। বেশি অথবা ওভারটাইম জেগে পড়াশোনা করলে মস্তিষ্কের প্রতি চাপ প্রয়োগ হয়। যতোই পড়া হোক না কেন তা পরবর্তীতে মনে থাকবে না। তাই নিজেকে সাময়িক বিরতি দিন।
প্রত্যক টপিক পড়া শেষে ১০ মিনিট অবসর নিন।
প্রাণ খুলে বাঁচুন
অনেক ধরনের মানুষ আমাদের আশেপাশে আছে। কেউ প্রাণবন্ত, হাসিখুশি, চুপচাপ ইত্যাদি। পরিস্থিতি সাপেক্ষে মানুষের জীবনে প্রভাব পড়ে। অনেকের মধ্যে চাপা কষ্ট, সত্য কথা বলতে দ্বিধা, মিথ্যে মায়া ইত্যাদি অনুভূতি মানুষকে কঠিন করে তোলে। অবশেষে তারা সামাজিক জৈবকতা হাড়িয়ে ফেলে। একা থাকতে পছন্দ করে।
তাই এসব বাদ দিয়ে, যেসব জিনিসে ভয় তা কাটিয়ে তুলুন। যেকোনো প্রতিকূলতাকে কাটিয়ে তুলতে সেইসব সমস্যার সম্মুখীন হোন। প্রানখুলে বাঁচতে চাইলে এসব প্রতিকুলতা পিছে ফেলে আসুন।
প্রত্যেকের অনুভূতির সম্মান করুন
প্রেমে অনুভূতি এটাতে কখনোই বাধ্যবাধকতা নিয়ম নেই। কখন কার প্রতি প্রেমে পড়ে যায় তা কখনো বলা যায় না। বেশিরভাগ সময়ে মানুষ অনকাঙ্ক্ষিত মানুষের প্রতি অনুভূতি জাগ্ৰত হয় যা প্রায়শই একতরফা।
প্রেমে ব্যর্থ হয়ে প্রায় ছেলেরা অনেক কিছুই মনে করে, যেমন তার দুনিয়া থমকে গেছে, বেঁচে থাকা অর্থহীন ইত্যাদি। অনেকে তো আবার অনেক ভয়ংকর পদক্ষেপ নেয়।
এসব অনৈতিকতা বাদ দিয়ে , তা আপনার নয় তার প্রতি অনুভূতি আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে রাখলেও লাভ হবে না। বিশেষ করে ছেলেরা প্রেমে ব্যর্থ হয়ে, যেমন এসিড মারা, ভয় দেখানো ইত্যাদি।
তবে প্রত্যেক অনুভূতিকে সম্মান করতে শিখুন। সামনে এগিয়ে যান।
আত্মহত্যা করা চিন্তা বর্জন করুন
আমাদের আশেপাশে অনেক ডিপ্রেসড মানুষ বর্তমানে অনাকাঙ্ক্ষিত। হয়তো কেউ প্রেমে ব্যর্থ, কেউ সফল হয়নি লক্ষ্যে ইত্যাদি। এসবের পরিপ্রেক্ষিতে অনেকে এই দুনিয়ায় বেঁচে লাভ নেই বলে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়।
আত্মহত্যা সবকিছু সমাধান বলে মেনে নিলে তা হবে দুনিয়ার সবথেকে বোকামি। আত্মহত্যার মানুষদের আখিরাতেও শাস্তি ও ভয়াবহ।
কখনো কি ভেবেছেন, নিজেকে শেষ করে দেওয়ার মুহূর্তে। আপনার পরিবারের কথা একবার ও ভেবেছিলেন।
যে মা আপনাকে জন্ম দিয়েছে, যে বাবা আপনাকে লালন পালন করানোর জন্য মাথার ঘাম পায়ে ফেলে এত কষ্ট করেছেন। তাদেরকে ছেড়ে যেতে একবার ও বুক কাঁপবে না। আপনি মারা গেলে আপনার মা আপনার জন্য কাঁদবে , বাবা কষ্ট পাবে। যার বা যাদের জন্য নিজেকে শেষ করবেন তারা কোনো দিন আপনার জন্য কষ্ট পাবে না।
মহানবী (সা) বলেছেন, ‘পরিস্থিতি যেমনি হোক না কেন, নিজের মৃত্যু কথা কখনো ভাববেন না। ‘
স্বাস্থ্যের প্রতি খেয়াল করুন
স্বাস্থ্য সকল সুখের মূল-এই প্রবাদটি হয়তো সবার কাছে অজানা নয়। আমরা প্রত্যেকদিন নানা ধরনের খাবার খেয়ে থাকি। পুষ্টিকর বা অপুষ্টিকর ।
জাঙ্ক ফুড তালিকায় বার্গার, পিজ্জা, পাস্তা, স্যান্ডউইচ ইত্যাদি । এসব খাবার যেমন সুস্বাদু তেমনি এর বেশি গ্ৰহন স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
অতিরিক্ত এই জাতীয় খাবার খেলে মেদ জমে, রক্তনালীতে মেদ জমে গিয়ে রক্তপ্রবাহে অক্সিজেনের পরিবহনে ব্যাঘাত সৃষ্টি, হার্টের ধমনী ব্লক ইত্যাদি নানা ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হয়। ধূমপান অনেকে সেবন করে থাকে। ধুমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর, এই কথাটি সিগারেটের প্যাকেটে ও লেখা থাকে। তারপর তোয়াক্কা না করে প্রতিনিয়ত তা সেবন করে যাচ্ছে।
ধূমপানের ধোঁয়া ফুসফুসের ক্যান্সারের সৃষ্টি জন্য অন্যতম। তাছাড়া ধূমপান সেবনে স্বাস্থ্যের পাশাপাশি পরিবেশের বায়ুমণ্ডলের ক্ষতি করে।
যদি সুস্থ সুন্দর জীবন যাপনে প্রত্যাশিত হলে অবশ্যই ধূমপান সেবন বন্ধ করুন।
স্বাস্থ্য ঠিক ও ফিট রাখতে হলে নিয়মিত ব্যায়াম, পুষ্টিকর খাবার ও পানি পান করা আবশ্যক।
নিয়মিত ব্যায়াম করলে শরীর ফিট থাকবে। সুস্বাস্থ্য খাবারে শরীরের বিভিন্ন পুষ্টি জোগিয়ে দেহকে সুগঠিত করবে। পানি পান করলে আপনার শরীরের প্রোটোপ্লাজমে পানির চাহিদা মেটাবে। কারন প্রোটোপ্লাজম কাজ করা বন্ধ করলে ডিহাইড্রেশনে মারা পরবেন। তাছাড়া শরীরের বিভিন্ন জৈবিক কাজের পানি পান করা আবশ্যক।
লিখেছেন ইসরাত জাহান স্বর্ণা।