class="post-template-default single single-post postid-19270 single-format-standard wp-custom-logo group-blog vl-boxed aa-prefix-matin-">
Shadow

মুরগীর রোগ পরিচিতি, লক্ষণ ‍ও চিকিৎসা : রানীক্ষেত রোগ

মুরগীর রোগ রানীক্ষেত রোগ

বাংলাদেশের পোল্ট্রী শিল্পে রানীক্ষেত রোগ পরিচিত একটি নাম । রানীক্ষেত অত্যন্ত একটি সংক্রমক , মারাত্বক রোগ। এটি একটি ভাইরাসজনিত রোগ । প্রতি বছর এই দেশের কোটি কোটি টাকা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে এই রোগের জন্য । বাংলাদেশের প্রতিটি জেলায় এই রোগের বিস্তার দেখা যায় । এই পবে আমি রানীক্ষেত রোগ সম্পকে বিস্তারিত তুলে ধরছি ———–

রানিক্ষেত রোগের ইতিহাস

রানীক্ষেত রোগের অপর নাম নিউ ক্যাসল ডিজিজ , এই রোগ ১৯২৬ সালে প্রথম পাওয়া যায় জাভা, ইন্দোনেশিয়া, এবং ইংল্যান্ডের নিউ ক্যাসল আপন টাইনে নামক স্থানে। উপমহাদেশে বিশেষত বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্থানে এই রোগকে রানীক্ষেত নামেই পরিচিত, তবে বিশ্বের অন্যত্র এই রোগ কে নিউ ক্যাসল ডিজিজ বলে ।

রানীক্ষেত রোগ সম্পকে কিছু তথ্যঃ

রানিক্ষেত রোগ এভিয়ান প্যারামিক্সোভাইরাস ১ এর জন্য হয়ে থাকে। এই ভাইরাস single stranded RNA virus ।

Family : Paramyxovirus

Genus : Rubilavirus

নিউ ক্যাসল ডিজিজ এর সেরোটাইপ মাত্র একটি , কিন্তু এগুলোকে কয়েকটি গ্রুপে ভাগ করা যায় । এগুলো হল —–

১। ভেলোজেনিক – এরা খুব তীব্র রোগ সৃষ্টি ক্ষমতা সম্পন্ন ।

২।মেসোজেনিক- কম তীব্র

৩। লেন্টোজেনিক – এরা কম মাত্রার এই রোগ হলে মুরগীর শ্বাসনালী,অন্ত্রনালী, স্নায়ুতন্ত্র আক্রান্ত হয়ে পড়ে, ফলে এর অপর নাম এভিয়ান নিউমো এনসেফালাইটিস ।

রানীক্ষেত রোগ কিভাবে ছড়ায়ঃ

১। আক্রান্ত মুরগীর মাধ্যমে ছড়ায়।

২।মুরগীর লালা, হাচি, ইত্যাদির মাধ্যমে ছড়ায়।

৩।মৃত মুরগী যেখানে সেখানে ফেলে রাখলে বিভিন্ন পাখি যেমন কাক, শকুন, চিল, এবং শিয়াল ,কুকুরের মাধ্যমে ছড়ায়।

৪। আক্রান্ত খামারের কমীদের পোশাক , জুতা, স্যান্ডেল,বিভিন্ন যন্ত্রপাতির মাধ্যমে ছড়ায়।

৫।এছাড়া ভাইরাস খামারের পরিবেশে থাকে , ফলে বাতাসের মাধ্যমেও ছড়ায় ।

রানীক্ষেত রোগের লক্ষণঃ

এই রোগ যে কোন বয়সের মুরগীর হতে পারে । কিছু লক্ষন দেখে সহজেই বোঝা যায়। লক্ষন গুলো নিম্নরুপ—-

১।ডায়রিয়া

২। চোখ বন্ধ করে ঝিমাতে থাকে ।

৩।সবুজ পায়খানা করে।

৪।মুরগীর ডানা ঝুলে পড়ে।

৫।শ্বাসনালী ও খাদ্যনালীর মিলনস্থল অবস হয়ে যায়, ফলে খাবার গ্রহন কমিয়ে দেয়।

৬।আ্ক্রান্ত মুরগী পানি শুন্যতায় ভোগে, এবং ল্যাংড়া হয়ে যেতে পারে।

৭। লেয়ার মুরগী ডিম পাড়া কমিয়ে দেয়।

৮। মলাশয় ফুলে বড় হয়ে যায়, ফলে চুনে পায়খানা আটকে থাকে।

৯।সদি কাশি থাকতে পারে।

১০। শ্বাস কষ্ট দেখা যাবে, ফলে মুরগী হা করে নিশ্বাস নেয়।

১১। কোন কোন সময় মাথা ঘুরাতে থাকে ,ঘাড় বেকে যায়।

পোস্ট মটেম লক্ষণ / ময়না তদন্ত ফলাফল

খালি চোখে যা যা দেখা যায়ঃ

১।মুরগীর প্রভেন্টিকুলাসে  ও গিলার উপরে যে আবরন থাকে তার নিচে স্পষ্ট রক্ত বিন্দু পাওয়া যাবে।

২।ক্ষুদ্রান্তে এবং সিকাল টন্সিলে বোতামের মত ক্ষত পাওয়া যাবে।

৩।মুরগীর প্লীহাতে অসংখ্য সাদা স্পট পাওয়া যাবে।

৪।শ্বাস নালীতে জমাট রক্ত পাওয়া যাবে।

৫। ফুসফুসে রক্তবিন্দু পাওয়া যাবে।

৬।ওভারিয়ান ফলিকল নরম এবং ভাংগা ভাংগা হবে।

চিকিৎসাঃ

১। রানিক্ষেত রোগ একটি ভাইরাস জনিত , ভাইরাসের বিরুদ্ধে তেমন কাযকারী কোন ব্যবস্থা নাই। তবে secondary infection এর হাত থেকে বাচার জন্য যে কোন একটি এন্টিবায়োটিক দিলে ভাল কাজ করে।

২। এছাড়া মুরগী পাতলা পায়খানা করলে ইলেক্ট্রোলাইট দিতে হবে।

৩। এই রোগ হলে মুরগী দুবল হয়ে পড়ে, ফলে পানিতে দ্রবনীয় ভিটামিন দিলে ভালো কাজ করে। এছাড়া টিমসেন প্রতিদিন খামারের চারপাশে স্প্রে করতে হবে।

কিভাবে রানীক্ষেত রোগের আক্রমন কমানো যায়ঃ

১।ভ্যাক্সিনেশন

বাচ্চার বয়স ৩-৫ দিনে ভ্যাক্সিন দিতে হবে।

এর পর ১৪-১৭ দিনে বুস্টার ডোজ দিতে হবে।

এছাড়া ৬০-৬৫ দিনে কিল্ড ভ্যাক্সিন দিতে হবে।

এবং ১৩০ দিনে ২য় বার দিতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Please disable your adblocker or whitelist this site!