Thursday, April 10

Stories

জানাজার নামাজে মেয়েরা কেন যায় না?  তসলিমা নাসরিন

জানাজার নামাজে মেয়েরা কেন যায় না? তসলিমা নাসরিন

Cover Story, Stories
আমার মা’র অসুখের সময় সারাক্ষণ পাশে ছিলাম আমি আর আমার নানি। আমরা দু’জনই দিন রাত  মা’র যত্ন করেছি। পাশে অন্য কেউ আসেনি তেমন। বাড়ির পুরুষেরা ব্যস্ত ছিল নিজেদের নিয়ে। কিন্তু মা মারা যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মা’র মৃতদেহটি নিয়ে কী কী করতে হবে, তার সিদ্ধান্ত নিয়ে নিল পুরুষেরা। মা’কে খাটিয়ায় শুইয়ে নিয়ে গেলো জানাজায়, কবরস্থানে। আমি যেতে চাইলাম সঙ্গে, আমাকে বলা হলো, না জানাজায়- না কবরস্থানে— কোথাও মেয়েদের যাওয়ার অনুমতি নেই। পুরুষেরা মোটামুটি যা বললো, তা হলো, আমি আমার মা’র সন্তান হতে পারি, কিন্তু জানাজায় আমার মায়ের লাশের সঙ্গে হেঁটে যাওয়ার কোনও অধিকার নেই, জানাজা পড়ার কোনও অধিকার আমার নেই, মায়ের কবরে মাটি দেওয়ার অধিকার নেই, কবরস্থানে ঢোকার অধিকারই নেই। কেন নেই? নেই, কারণ আমি মেয়ে। ইসলাম ধর্ম মেয়েদের বারণ করেছে জানাজায় বা কবরস্থানে যেতে। বাংলাদেশে কোনও জানাজার নামাজে কোনও মেয়ের উপস্থিতি নেই। কিন্তু পাকিস্ত...
ধর্ষণ কি সংক্রামক? : তসলিমা নাসরিন

ধর্ষণ কি সংক্রামক? : তসলিমা নাসরিন

Cover Story, Stories
মানুষ শেখে। জন্ম থেকে শিখতে শুরু করে, মৃত্যু অবধি শেখে। কোথাও কেউ আত্মহত্যা করলে আশেপাশে অনেকেই আত্মহত্যা করে বসে। পরীক্ষার খারাপ ফলের কারণে একজন ছাত্র আত্মহত্যা করলে দেখা যায় আরও কয়েকজন একই কারণে আত্মহত্যা করে। জাপানের ফুজি পাহাড়ের তলায় ওকিগাহারা অরণ্যে কবে কে আত্মহত্যা করেছিল, তারপর থেকে আজও ওই অরণ্যে মানুষ যায় আত্মহত্যা করতে। প্রতিবছর বারো হাজার ভারতের কৃষক আত্মহত্যা করছে। সেই ১৯৯৫ থেকে শুরু। এখনও চলছে। শুধু আত্মহত্যা নয়, সন্ত্রাসী সব কাণ্ডও সংক্রামক। মানুষের ভিড়ের মধ্যে এক সন্ত্রাসী ট্রাক চালিয়ে দিয়েছিল ফ্রান্সের নিস শহরে, এরপর একই পদ্ধতিতে শুরু হয়ে গেলো অন্য শহরেও সন্ত্রাসী আক্রমণ। বার্লিনে, লন্ডনে, স্টকহোমে, বারসেলোনা, ভার্জিনিয়ায়। ধর্ষণও কি শেখে? প্রায় প্রতিদিন ধর্ষণ করছে পুরুষ। শিশু থেকে বৃদ্ধা কাউকে বাদ দিচ্ছে না। কিছুদিন আগে জাকিয়া সুলতানা রূপাকে চলন্ত বাসের মধ্যে গণধর্ষণ করার...
‘‌নিজের নাতনিকেও ছাড়েননি গান্ধী’ তসলিমা নাসরিনের স্ট্যাটাস থেকে

‘‌নিজের নাতনিকেও ছাড়েননি গান্ধী’ তসলিমা নাসরিনের স্ট্যাটাস থেকে

Cover Story, Stories
মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীকে মহাত্মা কেন বলা হয় আমি জানি না। মহাত্মা মানে মহান আত্মা। প্রথমত আত্মা বলে কিছু নেই। দ্বিতীয়ত আত্মা বলতে যা-ই বোঝানো হয়ে থাকুক, সেটি গান্ধীর বেলায় মহান নয়। তাঁর গুণের কথা আমরা আশি নব্বই বছর ধরে শুনছি। কিন্তু তাঁর দোষের কথা অতটা শুনিনা অথবা মোটেও শুনিনা। তিনি যে বউ পেটাতেন, বেশ্যালয়ে যেতেন, সতেরো -আঠারো বছর বয়সী মেয়েদের ন্যাংটো করিয়ে , নিজেও ন্যাংটো হয়ে এক বিছানায় ঘুমোতেন-- একদিন দুদিন নয়, বছরের পর বছর -- তাঁর এসব দোষ জেনেবুঝেই আড়াল করা হয়। মনুবেন তাঁর ডায়রিতে লিখেছেন কীভাবে তাঁকে ন্যাংটো করানো হতো যখন তিনি ন্যাংটো গান্ধীকে বাথটাবে স্নান করাতেন। কচি কচি উলঙ্গ মেয়ের সঙ্গে রাত কাটিয়ে কী নাকি ব্রহ্মচর্য পরীক্ষা করতেন গান্ধী। নিজের নাতনিকেও ছাড়েননি। গান্ধীর মৃত্যুর পর কংগ্রেস নেতারা নিরুদ্দেশে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন মনুবেন আর আভাবেনকে, জীবনের শেষ দিনেও ক্রাচ হিসেবে গান্ধী যাঁদ...
প্রাপ্তবয়স্কদের মনোদৈহিক গল্প : আলাপ

প্রাপ্তবয়স্কদের মনোদৈহিক গল্প : আলাপ

Cover Story, Stories
‘তোমরা বান্ধবীরা মিলে কোথাও ঘুরতেও তো যেতে পারো। চাকরি থেকে ছুটি নাও কদিনের।’ জানালার কপাট খুলে গোলগাল চাঁদটাকে দেখতে দেখতে বলল সুজন। রেনু চোখ বুঁজে আছে। ‘তোমার কারণেই তো যেতে পারি না।’ মৃদু অনুযোগ। তবে ভিত্তিহীন। ‘তোমার বান্ধবীরা তো বেশ ঘুরছে। একজন আছে না, কী যেন নাম তার।’ ‘মিথিলার কথা বলছো?’ ‘হুম।’ ‘ও তো দুর্ধর্ষ। পাহাড়পর্বতে চড়ে বেড়ায়। টাকার অভাব নেই।’ চাঁদের আলো মুখে মেখে নিচ্ছে সুজন। নড়ে উঠল রেনু। কাটিয়ে নিল আড়ষ্টতা। ‘হুমম। এ জন্যই এমন ফিগার ধরে রাখতে পেরেছে। তুমিও ওর সঙ্গে পাহাড়ে চড়তে শুরু করে দাও না কেন।’ ‘কেন? শায়লার ফিগার কি খারাপ নাকি! ও তো পাহাড়ের ধারে কাছেও যায় না।’ ‘খোঁজ নিয়ে দেখো, ঠিকই ইয়োগা করছে।’ বলতে বলতেই রেনুর আঙুলের ফাঁকে নিজের আঙুলগুলোর জায়গা করে নিল সুজন। আজকের চাঁদটা বেশ বড়। আকাশটাও বারবার ফুলেফেঁপে উঠছে, চাঁদের খাতিরে। ‘হুম। করতে পারে, তোমার ওই বন্ধুটার...
প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য মনোদৈহিক গল্প : নব্বই মিনিট

প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য মনোদৈহিক গল্প : নব্বই মিনিট

Stories
চলমান বর্ষা ও ফুটবলের মৌসুমে সারা দিনে একবার করে হলেও যে কথাটা সোহাগ দেওয়ান মনে মনে আওড়ায় সেটা হলো- আমাদের জীবনে ফুটবল খেলাটা একটা চক্রের মতো, চক্র গোল, বলও গোল, আর বল খেলাটাও শুরু হয় মধ্য রাতে, মানুষে মানুষে খেলা, আরে খেলাই তো! এরপর চিন্তাটা খেই হারিয়ে ফেলতে শুরু করলে সোহাগ দেওয়ান মনস্থির করে বিশ্বকাপ ফুটবল নিয়ে তার ২০ বছর আগের গল্পটা আবার নতুন করে বলার সময় হয়েছে, কারণ গত বিশ্বকাপের সময় গল্পটার বলার মতো ফুরসৎ তার হাতে ছিল না, আর এবারের মৌসুমে যে সকল নতুন বন্ধু যোগ হয়েছে, তারা আসলে বেশিরভাগই কলিগ এবং তাদের হাতে এ ধরনের গল্প শোনার মতো যথেষ্ট অবসর থাকে, ‘চুরানব্বইর বিশ্বকাপের পর আমার কাছে ফুটবল জিনিসটাই একেবারে অন্যরকম লাগে। ফুটবল আসলে একটা খেলা না, এইটার একটা হিসাব আছে, লেজার ব্যালেন্সের মতো দুই সাইডে মিল থাকতে হয়, নইলে নব্বই মিনিট কাটবে কেমনে?' সোহাগ দেওয়ান চেষ্টা করে গল্পে সাসপেন্স তৈরি ক...
প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য মনোদৈহিক গল্প : গন্ধবয়ান

প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য মনোদৈহিক গল্প : গন্ধবয়ান

Cover Story, Stories
‘আস্তা পাগল না হইলে কেউ এমুন করেনি! হালায় নেংটা হইয়া মাটিতে গড়ান দিতাসে। গ্যাদগ্যাদা প্যাঁকের মইদ্দে সে কি হাসন। আমি তো ডরে ডরে চাইয়া দেখি, ভুতে ধরলো নিহি! না তো! কাছে গিয়া দেখি আমারে দেইখা পুরাই শরমিন্দা। কইলাম, কিরে দলু তোর লুঙ্গি কোনহানে তুই কোনহানে। দলু কতা কয় না। কয় না তো কয়ই না। শ্যাষে আমি চইলা যাওনের ভান নিলাম। করই গাছের চিপাত্থন দেহি দলু প্যাঁকের মইদ্দে লুঙ্গি বিচরাইতেসে। মনে হইল যাইন, হবায় ক্ষেতের মইদ্যে কোনো মাইয়া লোকের লগে আকাম কইরা অহন পলাইবার লাগসে।’ ফুলতলা গ্রামের মানুষজন মাঝে সাঝে একটু বিভ্রান্তিতে পড়ে গেলেও এমনিতে তাদের সাধারণ দিনলিপিতে বিস্ময়ের স্থান বেশ সংকীর্ণ। জীবনের প্রতি চাওয়া ও চাওয়া পূরণের সঙ্গে তারা তাদের বিস্ময়বোধটাকে ব্যস্তানুপাতে মানিয়ে নিয়েছিল কয়েক পুরুষ আগে থেকেই। এর মধ্যে নতুন করে আবার অনিশ্চিত সময়কালের জন্য একটা বিভ্রান্তি ছড়িয়ে দিল দলু। দবিরউদ্দিন বা মফিজ ...
দুটি কৌতুক

দুটি কৌতুক

Stories
মাঠে একদিন তিন বালক কলাবাগান মাঠে বসে গুজগুজ করছে। দুজন স্কুলড্রেস পরা, বইয়ের বস্তা নিয়ে। অন্যজন হাফপ্যান্ট আর গেঞ্জি। জিজ্ঞেস করলাম, এখানে কী? একজন বলল, স্কুল থেকে পালাইছি। মিথ্যা কথা বলতে পারি না। বললাম, অন্যজন। সে বলল, ও-ও পলাইছে। যেটা সত্য সেটা বললে তো সমস্যা নেই। হাফপ্যান্টেরে জিগাইলাম, তোমার কী অবস্থা। সে দাঁত বের করে বলল, আমি অগোমতো না। আমি স্কুলেই যাই নাই।     ই-মেইল আইডি একটা ব্যাংকের কল সেন্টারে কল করে কিছুক্ষণ আজাইরা প্যাঁচাল শোনার পর কয়েক মিনিট ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করতে থাকলাম। অবশেষে আমার কল একজন প্রতিনিধির কাছে ট্রান্সফার করা হলো। সমস্যাটা ছিল ক্রেডিট কার্ডের স্টেটমেন্ট ই-মেইলে আসে না। বেশ কিছু ইনফরমেশন শেয়ার করার পর যেটা বুঝতে পারলাম, আমার ই-মেইলের একটা অক্ষর তাদের ডাটা বেইসে ভুল অ্যান্ট্রি দেওয়া আছে। কিন্তু আমার স্পষ্ট মনে আছে, আমি সঠিকট...
প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য মনোদৈহিক গল্প : দর্শক

প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য মনোদৈহিক গল্প : দর্শক

Cover Story, Stories
ঘণ্টাখানেক হলো বিছানায় বসে আছে বীনা। অস্বস্তি লাগলেও কাউকে ডাকতে পারছে না। লোকটারও দেখা নেই। বসতে বলে চলে গেছে। টেবিলে একটা মদের বোতল রাখা। তাতে অবশ্য মদ না, পানি। পাশে কোনো গ্লাস নেই। যাওয়ার সময় লোকটা বলে গেছে, চাইলে খেতে পারো। বীনার প্রচণ্ড তৃষ্ণা পেয়েছে। কিন্তু মদের বোতল থেকে পানি গিলতে ভয় পাচ্ছে। যদি কিছু মেশানো থাকে। দেখতে যত ভদ্র, তত রিস্ক বেশি। তা ছাড়া বীনা কিছু মানুষের কথা জানে। পতিতাদের ধরে নিয়ে খুন করে। লোকটার কথাবার্তা কেমন যেন। সুবিধার মনে হয়নি। অসুবিধার মনে হওয়ারও বিশেষ কারণ নেই। সাধাসিধা দেখতে। চশমা-পাঞ্জাবি পরা। ভদ্রলোক বলে চালিয়ে দেওয়া যায়। বিশাল বড়লোক। বাড়িটাও বিশাল। বীনার একবার মনে হলো লোকটা তাকে বসতে বলে হয়তো তার কথা ভুলে গেছে। অন্যদিনের মতো মুখে কড়া মেকআপ নেই বীনার। ক্লায়েন্টের ইচ্ছা, তাই মেকআপ ছাড়াই এসেছে। রুমে একটা আয়না আছে। বীনা দেখল নিজেকে। আসল চেহারা দেখতে কেমন যে...
সমাজ, আমি পুরুষ বলছি

সমাজ, আমি পুরুষ বলছি

Health and Lifestyle, Stories
নিজের জীবন থেকেই আসি। মা-বাবা দুজনের সঙ্গেই আমার খুবই কাছের সম্পর্ক। ব্যক্তিগত জীবনেও, পেশাগত জীবনেও। কাছের সম্পর্ক বলেই হয়তো মা-বাবার সঙ্গে ঝগড়াঝাঁটি-মতবিরোধ, এসব বিষয়ে আমি বেশ অভ্যস্ত। তারপরও আমি দেখেছি যে বিশেষ করে পেশাগতভাবে কোথায় যেন আমার নিজের সম্পর্কেই একধরনের বৈষম্য আছে। বাবা একটা কথা বললে আমি যত জলদি এবং যত সহজে মেনে নিই, মা বললে কিন্তু অত সহজে আমি সেটা মেনে নিই না। একটা কারণ হতে পারে যে বহু বছর ধরে বাবাই আমাদের প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্ব দিয়েছেন, তাই আমি বাবার কথা শোনার ব্যাপারে অভ্যস্ত হয়ে গেছি। এখন মা যদিও আমাদের প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্বে আছেন, ওনার নেতৃত্বের ধরনে আমি হয়তো এখনো অভ্যস্ত হতে পারিনি। তাই হয়তো আমার তাঁর কথাগুলো মেনে নিতে অথবা তাঁর আদেশ গ্রহণ করতে বেগ পেতে হয়। কিন্তু এটা কোনো ধরনেরই অজুহাত হতে পারে না। সামাজিকভাবে পুরুষ আধিপত্যের চাপ সত্ত্বেও নারীদের সমান জায়গা দেওয়ার ব্যাপার...
থ্রিলার গল্প : দেবদূত বক্সীর অপহরণ

থ্রিলার গল্প : দেবদূত বক্সীর অপহরণ

Stories
‘ব্লু হোয়েল’ বা ‘মোমো চ্যালেঞ্জ’-এর মতো মারাত্মক সাইবার গেম্স নয়, নিতান্তই একটা নিরীহ অ্যানড্রয়েড মোবাইল অ্যাপ যে শেষ পর্যন্ত আমার এরকম অবস্থা করে দেবে, স্বপ্নেও ভাবিনি। এই অ্যাপটা খুব একটা জনপ্রিয় না হলেও অনেকেই মজার ছলে ব্যবহার করে। অ্যাপটায় নিজের একটা ছবি আপলোড করতে হয়। তারপর অ্যাপ সেই ছবিটার উপর কারিকুরি প্রসেস করে বৃদ্ধ বয়সে সে কেমন দেখতে হব, দেখিয়ে দেয়। রাতে শুতে যাওয়ার আগে আমিও মজা করে আমার একটা ছবি আপলোড করেছিলাম। যথারীতি বৃদ্ধ বয়সে আমি কেমন দেখতে হব, অ্যাপ দেখিয়ে দিল। আধমাথা টাক, বাকি চুলগুলো সাদা হয়ে পাতলা। কপালে বলিরেখা। মুখের চামড়া কুঁচকে গিয়েছে। গালটা একটু তুবড়ে বসা। আমার রিমলেস চশমার জায়গায়, চোখে একটা ভারী মোটা কালো ফ্রেমের হাই পাওয়ারের চশমা। নিজের মনেই খুব হেসেছিলাম ছবিটা দেখে। অবশ্য ছবিটা যে আমারই খুঁটিয়ে দেখলে বুঝতে অসুবিধা হচ্ছিল না। অ্যাপে একটা অপশন ছিল, ছবিটাকে ফে...
গল্প : যে ঝড় থামে না

গল্প : যে ঝড় থামে না

Stories
‘কেমন আঁকে বললি?’ ‘ফাটাফাটি!’ ‘ছবির জন্য এটা কোনো বিশেষণ হতে পারে না।’ ‘তা হলে দুর্দান্ত!’ ‘এটাও হলো না। ছবির জন্য অন্য বিশেষণ দরকার, বা দরকারই নেই।’ বিথির মেজাজ গরম। বান্ধবীকে বোঝাতে পারছে না যে তার ডিপার্টমেন্টের তৃতীয় বর্ষের ছেলেটা, যে কিনা কারো সঙ্গেই তেমন কথা বলে না, সে কেমন ছবি আঁকে। রেনু বিবিএ-তে। আঁকাআঁকিতে ঝোঁক আছে। ঝোঁকটা শেষপর্যন্ত আর জোঁক হয়ে চেপে বসেনি। চারুকলায় বন্ধু-বান্ধব আছে অনেকে। ‘তুই তার এত বড় ভক্ত কবে থেকে? ওর সঙ্গেও প্রেম করার খায়েশ?’ ‘অবশ্যই! সে বললে একবাক্যে রাজি। নাইমকে বলে দিব, ও ভাই! তোমায় টা টা। আমি মিন্টুর সঙ্গে চললাম।’ ‘পোর্ট্রটে আঁকে? ‘হুম, সবই করে। পোর্ট্রেট বললে কম হয়ে যাবে। ও একটা জিনিয়াস।’ ‘তার মানে ও বললে একবাক্যে কাপড় খুলে দাঁড়িয়ে যাবি?’ ‘অবশ্যই যাব! ও আমার একটা ন্যুড করে দিলে সেটা আমি নিজের হাতে নাইমকে গিফট করবো দেখিস!’ নাইম বিথির প্রেমি...
হামহামের শীতল স্পর্শে

হামহামের শীতল স্পর্শে

Cover Story, Stories
শ্রীমঙ্গলে পৌঁছার পর অল্প সময়ের ভেতর সিলেট থেকে অন্যরাও হাজির হলো। সবাই একসঙ্গে ভালো করে নাশতা সেরে বেরিয়ে পড়ি। আপাতত গন্তব্য বিষামণি। সেখানকার এক কটেজে আমাদের জন্য অপেক্ষায় ছিল ঢাকা, চট্টগ্রাম আর খুলনা থেকে আসা ৯ জনের একটি দল। সেখানে ছোট্ট করে পরিচয় সেরে চড়ে বসি আমাদের জন্য অপেক্ষায় থাকা ঢাউস সাইজের জিপে। সামনের আসনে আমার সঙ্গে রেজা ভাই। চা বাগানের ভেতর হয়ে আঁকাবাঁকা পথ পেরিয়ে তারপর লাউয়াছড়া অরণ্য। জিপের চালক রূপকদা জানতে চাইলেন, নূরজাহান চা বাগান নাকি ভানুগাছ হয়ে যেতে চাই। চা বাগান হয়ে তুলনামূলক কম সময়ে হামহাম যাওয়া যাবে। পদ্মছড়া, মাধবপুর আর পাত্রখোলা চা বাগান পেছনে ফেলে জিপ এসে থামে কুরমা বাজারে। গ্রাম্য বাজারটিতে কয়েক মিনিটের বিরতির ফাঁকে কিছু শুকনো খাবার আর পানি ট্রাভেল ব্যাগে পুরে আবার রওনা হই। এগুলোই পরের ছয়-সাত ঘণ্টার একমাত্র সম্বল। কুরমা বাজার ছাড়ার পর চম্পারাই চা বাগানের কাছে এসে...
সত্যি হরর কাহিনী : মতি কাকুর ছায়াটা কি কোনো আত্মা ছিলো?

সত্যি হরর কাহিনী : মতি কাকুর ছায়াটা কি কোনো আত্মা ছিলো?

Stories
আমি ছোটবেলা থেকেই গ্রামে বড় হয়েছি। বিভিন্ন সময় গ্রামের মানুষকে ভূত, প্রেত, জিনে বা আত্মায় ধরার ঘটনা শুনেছি অনেক। তবে আমার সঙ্গেও যে ভূত-প্রেতের সাক্ষাৎ হয়নি, তা কিন্তু নয়। তাদের সঙ্গে বহুবারই আমার সাক্ষাৎ হয়েছে। যাদের সঙ্গে কোনো দিন ভূত-প্রেতের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়নি তারা হয়তো ভাবছেন আপনার বন্ধু-বান্ধবের মতোই তারা সাক্ষাৎ করে- তাই তো? কিন্তু না, ভূত-প্রেত বেশিরভাগ মানুষের সঙ্গেই ভয়াবহ ঘটনা নিয়ে হাজির হয়। আবার অনেকের সঙ্গে ভূত-প্রেত বা আত্মারা বহুসময় থাকলেও মানুষের কোনো প্রকার ক্ষতি তারা করে না- এটা অবশ্য আমারই অভিমত, অন্যরা সঙ্গে একমত না হতেই পারেন। আজ থেকে প্রায় সাত-আট বছর আগের কথা। ওইদিন সকাল শিফটে অফিস শেষ করে দুইটার দিকে অফিস থেকে বের হলাম গ্রামের বাড়ি বরগুনায় যাওয়ার জন্য। তবে বরগুনার কোন গ্রামে আমার বাড়ি সেটা একটা বিশেষ কারণে আমি বলতে পারবো না। প্রায় চার মাস পরে বাড়ি যাচ্ছি মায়ের কা...
মুক্তিযোদ্ধাদের গল্প -ফেরা: তন্ময় আলমগীর

মুক্তিযোদ্ধাদের গল্প -ফেরা: তন্ময় আলমগীর

Cover Story, Stories
মুক্তিযোদ্ধাদের গল্প -ফেরা: তন্ময় আলমগীর চারদিকে হই-চই পড়ে গেছে- বিজয় অতি সন্নিকটে চারদিকে হই-চই পড়ে গেছে- বিজয় অতি সন্নিকটে। জসিমরা বিভিন্ন এলাকা থেকে এমন গুঞ্জনই শুনছে কিছুদিন যাবত। রেডিওতেও  একই খবর- পাক-বাহিনী পিছু হাটতে শুরু করেছে। শহর-বন্দর ছাড়া বাকি সব ক্যাম্প সরিয়ে নিয়েছে পাক-বাহিনী। ক্রমাগত ফায়ার, বোমার শব্দ না শোনা যাওয়ায় স্বস্থি ফিরেছে সাধারন মানুষের মনে। জসিম যুদ্ধ করছে দু’নম্বর সেক্টর থেকে। অগণিত সফল অভিযানের নায়ক জসিম। কমান্ডার বলেছে- এ সপ্তাহে আর কোন অভিযান চালানোর আগেই দেশ স্বাধীন হয়ে যেতে পারে। কথাটা শুনে মনের অস্থিরতা খানিকটা প্রশমিত হল জসিমের। বন্ধু সোহেল তো আনন্দে লাফালাফি করতে লাগল। কতদিন পর বাড়ি ফিরবে স্বাধীন দেশের স্বাধীন পতাকা হাতে নিয়ে, এরচে মধুর দৃশ্য পৃথিবীতে আছে কী? সত্যিই দেশ স্বাধীন হয়ে গেল। দলে দলে বিজয়োল্লাস করে বাড়ি ফিরছে মুক্তিযোদ্ধারা। এ তো এমনি ...
ষোলই ডিসেম্বর : জনি হোসেন কাব্য

ষোলই ডিসেম্বর : জনি হোসেন কাব্য

Cover Story, Stories
ষোলই ডিসেম্বর : জনি হোসেন কাব্য ষোলই ডিসেম্বর বিজয় দিবস একাত্তরে গোলাগুলি হানাহানির ঝড়, নির্বিচারে মরলো মানুষ মরলো নারী-নর। ছাড়তে হলো প্রাণের ভিটা পুড়লো বাড়ি-ঘর, ভেসে এলো অগ্নিমাখা শেখ মুজিবের স্বর।   ন'মাস ধরে তিরিশ লাখ প্রাণ হারানোর পর, আমরা পেলাম বিজয় দিবস ষোলোই ডিসেম্বর।