ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান: কিডনি-লিভারের ক্ষতি করে সব অ্যান্টিবায়োটিকের একটি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে। কিছু আছে কিডনির ক্ষতি করে, কিছু লিভারের ক্ষতি করে। তাই অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়ার সময় এগুলো আমাদের দেখে দিতে হয়, এগুলোর সমস্যা আছে কি না। তার পর আমাদের ড্রাগ রেজিস্টেন্স ডেভেলপের বিষয়টি দেখতে হয়। গ্রামগঞ্জে প্রায় দেখা যায়, ড্রাগ রেজিস্টেন্স ডেভেলপড করছে।
মনে করলাম অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়ার দরকার আছে। রোগীর দরকার ৩ দিন, দিলাম ৭ দিন, তখন যদি পরবর্তী সময়ে আবার দেওয়ার দরকার হয় তখন ওই ওষুধটা আর কাজ করবে না। তার রেজিস্টেন্স ডেভেলপড করবে। তার দরকার ৭ দিন যদি দেওয়া হয় ১৪ দিন তাহলে সাইড ইফেক্ট দেখা দেবে। আর একটা ব্যাপার হচ্ছে, রোগীর আদৌ দরকার আছে কি না। সবকিছু ভেবেচিন্তে অ্যান্টিবায়োটিক দিতে হবে। গ্রামে ফার্মেসিতে প্রেসক্রিপশন ছাড়া এমনিতেই অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়।
রোগীর অ্যান্টিবায়োটিক দরকার নেই তারপরও দেওয়া হচ্ছে তাহলে সাইড ইফেক্ট হবে। কিছু আছে যেগুলো খেলে কিছু সময়ের জন্য সূর্যের আলোয় যাওয়া ঠিক হবে না, ক্ষতি হবে, সেগুলো রাতে খেতে হবে। সেগুলো যদি আমরা সকালে খাই তাহলে আমাদের ক্ষতি হতে পারে। এগুলো ফার্মেসিতে বা গ্রাম্য ডাক্তার বা যারা নিজে কিনে খেলে সাইড ইফেক্ট করতে পারে। তা ছাড়া ড্রাগ ইন্টারঅ্যাকশ যেমন- অন্য বিভিন্ন ওষুধের সঙ্গে এটার একটি প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে।
শিশুদের ক্ষেত্রে ঝুঁকিটা আরও বেশি। জ্বর বা কাশি হলেই অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার করা ঠিক নয়। অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারে শিশুদের ক্ষেত্রে আরও বেশি সতর্ক হতে হবে। কেননা, শিশুদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কম।
শিশুদের ক্ষেত্রে যদি একবার ড্রাগ রেজিস্টার্ড করে তাহলে এ ক্ষতিটা তাদের সারা জীবন বইতে হবে। অ্যান্টিবায়োটিক কম মাত্রায় বা বেশি মাত্রায় যেভাবেই দেওয়া হোক শিশুদের ক্ষেত্রে রেজিস্টেন্স ডেভেলপ করতে পারে।
কিছু ওষুধ আছে যা খেলে শিশুদের গ্রোথ কমিয়ে দেয়, তাই শিশুদের ওষুধ দেওয়ার ক্ষেত্রেও অনেক ভেবেচিন্তে ওষুধ দিতে হয়। রেজিস্টেন্স বেশি প্রমাণিত টিবির ওষুধের ক্ষেত্রে।
এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো নীতিমালা নেই, কিন্তু একটি নীতিমালা অবশ্যই দরকার আছে। সাধারণ মানুষ যেন ডাক্তারের (কমপক্ষে এমবিবিএস) প্রেসক্রিপশন ছাড়া ওষুধ কিনতে না পারে এবং যেন কোর্স শেষ করে। অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের ক্ষেত্রে অব্যশই নিয়ম মানতে হবে।