বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স বহরে যুক্ত হচ্ছে বোয়িং ৭৮৭। সর্বাধুনিক এই এয়ারক্রাফটটিকে ডাকা হয় ‘ড্রিমলাইনার’ নামে। আমেরিকার সিয়াটলের বোয়িং ম্যানুফ্যাকচারিং ইউনিট থেকে এখন এয়ারক্রাফটটিকে প্রয়োজনীয় পেইন্টিংয়ের কাজ করার জন্য নেওয়া হয়েছে।
আগস্টের শেষ নাগাদ এটি যুক্ত হবে বিমান বহরে। দ্বিতীয় ড্রিমলাইনার আসছে নভেম্বরে।
বিমান সূত্রে জানা গেছে, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের জন্য তৈরি করা প্রথম ড্রিমলাইনারটি রোববার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সিয়াটলে অবস্থিত বোয়িং ফ্যাক্টরি থেকে পেইন্টিং হ্যাঙ্গারে পাঠানো হয়েছে। সোমবার বিমানের জেনারেল ম্যানেজার (পিআর) শাকিল মেরাজ এ সংক্রান্ত একটি ছবি তার ফেসবুকে শেয়ার করেন। ছবিতে দেখা যাচ্ছে- ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজটিতে পেইন্টিং করার উদ্দেশ্যে ট্যাক্সিওয়ে দিয়ে পেইন্টিং হ্যাঙ্গারে যাচ্ছে। এর মাধ্যমে উড়োজাহাজ ট্যাক্সি টেস্টও করা হয়েছে।
শাকিল মেরাজ বার্তা২৪.কমকে বলেন, প্রথম ড্রিমলাইনারটি তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। এখন এটি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের নাম লোগোসহ পেইন্টিং করা হবে। এজন্য এটি বোয়িংয়ের পেইন্টিং হ্যাঙ্গারে যাচ্ছে।
বিমান সূত্রে জানা গেছে, পেইন্টিং করতে সপ্তাহখানেক সময় লাগবে। এরপর রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষের হাতে এটি হস্তান্তর করতে সকল প্রক্রিয়া শুরু হবে।
সমূদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৪৩ হাজার ফুট ওফর দিয়ে উড়তে সক্ষম দুই ইঞ্জিনবিশিষ্ট এই উড়োজাহাজ বিশ্বের যে প্রান্তে থাকুক না কেন ঢাকায় নিয়ন্ত্রণ কক্ষের সময় সময় এর যোগাযোগ থাকবে। এটি বোয়িং ৭৬৭ উড়োজাহাজের চেয়ে ২০ শতাংশ কম জ্বালানি লাগে। উড়োজাহাজটিতে মোট আসন রয়েছে ২৭১টি। এর মধ্যে বিজনেস ক্লাসের আসন ২৪টি।
বিমান সূত্রে জানা গেছে, জ্বালানি সাশ্রয়ী ড্রিমলাইনারে বসেই যাত্রীরা পাবে ওয়াই-ফাই সুবিধা। এমনকি যাত্রীরা বিশেষ এক ধরনের ফোনসেটের মাধ্যমে আকাশে ভ্রমনকালীণ সময়েই ফোনে প্রিয়জনদের সঙ্গে কথা বলতে পারবেন। ফোনে কথা বলা ছাড়াও রিয়াল টাইম লাইভ দেখা যাবে জনপ্রিয় নয়টি টেলিভিশন চ্যানেলের। এতে রয়েছে বিশ্বের আধুনিক সব বিনোদনের ব্যবস্থা। ড্রিমলাইনারের ইন-ফ্লাইট এন্টারটেইনমেন্ট সিস্টেমের মাধ্যমে দেখা যাবে ব্লকবাস্টার মুভি। শোনা যাবে গান, থাকছে ভিডিও গেমস। ড্রিমলাইনারের রাতের ফ্লাইটের পরিবেশ হবে নির্জন ও শান্ত। ফ্লাইটের ভেতরের পরিবেশ অনুযায়ী স্বয়ংক্রিয়ভাবে জ্বলবে আলো।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই চারটি উড়োজাহাজের নাম দিয়েছেন। নামগুলো হচ্ছে; আকাশবীণা, হংসবলাকা, গাঙচিল ও রাজহংস। ড্রিমলাইনার টানা ১৬ ঘন্টা ফ্লাই্ করতে পারে।
২০০৮ সালে বিমান চারটি ড্রিমলাইনারসহ মোট ১০টি বোয়িং উড়োজাহাজ কেনার চুক্তি করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক উড়োজাহাজ নির্মাতা কোম্পানি বোয়িং এর সঙ্গে। চুক্তি অনুযায়ী এরই মধ্যে তারা বোয়িং ৭৭৭ ৩০০ ইআর এর চারটি এবং বোয়িং ৭৩৭-৮০০ এর দুটি সহ মোট ৬টি উড়োজাহাজ বিমানকে সরবরাহ করেছে। ড্রিমলাইনারের দ্বিতীয় উড়োজাহাজটি নভেম্বরে এবং বাকি দুটি আসবে আগামী বছরের (২০১৯) নভেম্বরে।