নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাজধানীর আদাবরের বাসিন্দা দারাজে (বাংলাদেশ) একটি পণ্য অর্ডার করেছেন। অর্ডার করেছেন ৬ জুন দুপুরে। আর সেদিন বিকালেই তার কাছে ফোন করে সেলার। মানে, যিনি পণ্যটা সরবরাহ করবে তিনি। সাধারণত ক্রেতার কাছে সেলারের সরাসরি এভাবে ফোন করার কথাই নয়। সেই সেলার ক্রেতাকে বলেন, ‘দারাজে অর্ডার দিলে অনেক ঝামেলা দেরি-টেরি হয়। আপনি বরং অর্ডারটা ক্যানসেল করে দিন। আমরা কালকেই আপনাকে পাঠিয়ে দিব। ওয়েবসাইটে যে টাকাটা আসবে সেটাই আমাদের ডেলিভারি ম্যানকে পে করে দিলেই হবে।’
এরপর নিজের বিশ্বস্ততা প্রমাণের জন্য ওই বিক্রেতা তার নম্বর (01916-751850) থেকে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে ক্রেতার ডেলিভারি ঠিকানা, ফোন নম্বর সব শেয়ার করেন। তিনি বোঝাতে চান যে, তিনি আসলে দারাজেরই সেলার। তার কাছে ক্রেতার সমস্ত তথ্য আছে।
ওই ক্রেতা ভদ্রলোক জানতে চাইলেন, পণ্যে সমস্যা থাকলে দারাজে তো সাত দিনের মধ্যে রিফান্ড পাওয়া যায়। উত্তরে বিক্রেতা বললেন, ও নিয়ে ভাববেন না। আপনি আমাদের ডেলিভারিম্যানের সামনেই পণ্য চেক-টেক করে নেবেন।
ক্রেতার প্রশ্ন—কিন্তু আপনার কাছে আমার সমস্ত তথ্য গেল কী করে? বিক্রেতা এ প্রশ্ন পাশ কাটিয়ে বারবার তাগাদা দিতে থাকেন, তিনি পণ্যটি কিনতে চান কিনা। ক্রেতা প্রথম দিকে রাজি হলেও পরে সিদ্ধান্ত নেন বিষয়টি দারাজের কাছে জানাবেন।
এ নিয়ে দারাজ কাস্টমার কেয়ারে ওই ক্রেতার কথায় হয় ৬ জুন বিকালেই। কাস্টমার কেয়ার তাকে জানায়, অনেক সময় পণ্যের দ্রুত ডেলিভারি নিশ্চিত করতে নাকি বিক্রেতাকে ক্রেতার যাবতীয় তথ্য দেওয়া হয়। ব্যাপারটার ব্যাখ্যা অবশ্য দারাজ দিতে পারেনি। পরে দারাজ থেকে ফোন করে ওই ক্রেতাকে জানানো হয় তারা ওই বিক্রেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এবং তিনি যদি দারাজ মারফত ওই বিক্রেতার কাছ থেকে পণ্যটি পেয়ে থাকেন সেটা যেন আনবক্সিং ভিডিও করে রাখেন। মানে বিক্রেতা যদি আবার রেগে গিয়ে খারাপ পণ্য দিয়ে থাকে সে জন্য।
দারাজের এমন অপেশাদার ব্যবস্থার নিন্দা জানিয়েছেন অনেকেই। মাসুম নামের এক ছাত্র জানালেন, দারাজের রিফান্ড পলিসি ভালো। তবে ইদানীং দারাজ যেভাবে ক্রেতার ব্যক্তিগত তথ্য বিক্রেতার কাছে দিয়ে দিচ্ছে, সেটা খারাপ। এতে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লংঘন হচ্ছে।
এ বিষয়ে দারাজের কাস্টমার কেয়ারে কয়েকবার জিজ্ঞেস করেও সদুত্তর পাওয়া যায়নি। তারা এটাকে ‘পলিসি’ হিসেবেই জানাচ্ছে।