class="post-template-default single single-post postid-19411 single-format-standard wp-custom-logo group-blog vl-boxed aa-prefix-matin-">
Shadow

বাচ্চাদের পেটে কৃমি হলে করণীয়

শিশুদের বাচ্চাদের পেটে কৃমি হলে

বাচ্চাদের পেটে কৃমি হলে করণীয়

 

বড়দের মতো নানা ধরনের কৃমি বাসা বাঁধে বাচ্চাদের পেটেও। পেট বলতে অন্ত্র, বিশেষ করে ক্ষুদ্রান্ত। সবচাইতে বেশি পাওয়া যায় কেঁচোকৃমি বা রাউন্ডওয়ার্ম। তারপরই রয়েছে হুকওয়ার্ম আর থ্রেডওয়ার্ম বা সুতোকৃমির জায়গা। এ ছাড়াও একটু বড় বাচ্চাদের পেটে বাসা বাঁধতে পারে টেপওয়ার্ম বা ফিতেকৃমি আর হুইপওয়ার্ম বা চারুককৃমি। ক্ষেত্রবিশেষে বড়দের মতো অন্য কয়েক ধরনের কৃমিও জায়গা করে নিতে পারে বাচ্চাদের পেটে।

পেটে কৃমির সংখ্যা বেড়ে গেলে, কৃমির ধরন যাই হোক না কেন, বাচ্চা আক্রান্ত হবে পেটের নানা সমস্যায়। পেট ফাঁপা, হজমের গোলমাল থেকে শুরু করে কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়রিয়া। কৃমির চাপ যত বাড়বে, বাচ্চার খাবারদাবার থেকে বাচ্চার শরীরে পুষ্টি যাবে তত কম, কৃমির বংশকে পুষতে খরচ হয়ে যাবে পুষ্টর একটি অংশ। কৃমির সমস্যা তাই সরাসরি বাচ্চার পুষ্টির সমস্যার সঙ্গে সম্পর্কিত। পেটে বেশি কৃমি হলে খাবারদাবার যতই স্বাভাবিক আর সুষম হোক না কেন, অপুষ্টি ঘটবেই, পুষ্টির অভাবে বিপরযস্ত হবে বাচ্চার শরীরমনের বিকাশ।

রাউন্ড বা কেঁচোকৃমি বাচ্চার পেটে ঢোকে দূষিত খাবার, কাঁচা সবজি বা জল থেকে। খাবার, জল বা কাঁচা সবজি, ফলে কৃমির পরিণত ডিম আসে পেটে কেঁচোকৃমি রয়েছে এমন মানুষ মাঠেঘাটে মলত্যাগ করায়। আক্রান্ত মানুষের মলের সঙ্গে বেরিয়ে আসা হুকওয়ার্মের ডিম বাচ্চার শরীরে ঢোকে পা দিয়ে। বিশেষ করে বর্ষাকালে গ্রামাঞ্চলে বা বস্তি অঞ্চলে এরকম হয়। থ্রেডওয়ার্ম বা সুতোকৃমির ডিম মলদ্বার দিয়ে বেরিয়ে আসে সন্নিহিত অংশের চামড়ায়। ওই অংশের ত্বক চুলকোতে চুলকোতে মুখে হাত দিয়ে বা ওই হাতে খাবার খেয়ে আক্রান্ত হয় বাচ্চা। কৃমির মধ্যে সবচাইতে মারাত্মক টেপওয়ার্ম বাচ্চার শরীরে ঢুকতে পারে, আক্রান্ত শুয়োর বা গরুর মাংস খাবার হিসেবে খেলে।

হুকওয়ার্ম ক্ষুদ্রান্ত্রে বাসা বেঁধে অন্ত্র থেকে রক্ত শুষে নিতে থাকে। ক্ষুদ্রান্ত থেকে রক্তশোষণ আর রক্ত শুষতে শুষতে তৈরি হওয়া ঘা থেকে অবিরাম রক্তক্ষরণ দ্রুতলয়ে অ্যানিমিয়ার কারণ হয়ে দাঁড়ায় আকারে ক্ষুদ্রাতিক এই কৃমি। অ্যানিমিয়া, অপুষ্টি, ক্ষুধামান্দ্য, অরুচি, পেটব্যথা, কখনও কোষ্ঠকাঠিন্য কখনও ডায়রিয়া-প্রথমদিকে হুকওয়ারম সংক্রামণের উপসর্গ এগুলোই।

কৃমি হলে কালমেঘ চিরতার জল বা ভাস্কর লবণ নয়, এর ওর কথায় বাজার থেকে ওষুধ কিনে খাওয়ানো নয়, ওষুধ খাওয়ান যোগ্য চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে। বাচ্চার পেটে গাদাগুচ্ছে কৃমি পুষে রেখে বাচ্চাকে ভালমন্দ খাওয়ানো আর ফুটো পাত্রে জল ঢালা একই ব্যাপার। ওষধ খাইয়ে কৃমির সমস্যা দূর হওয়ারমাত্র নজর দিতে হবে বাচ্চার খাওয়াদাওয়ার দিকে। বাচ্চার কৃমি হলে কিছু খাবারদাবার ও নিয়মকানুন মেনে চলুন।

১। ডাল, ভাত, মাছ, ডিম, শাকসবজি, খিচুড়ি, রুটি, দুধ,ফল-বাচ্চাকে খাওয়াতে হবে সবই, যথেষ্ট পরিমাণে। এরকম স্বাভাবিক খাবারদাবারেই কৃমিমুক্ত বাচ্চার অপুষ্টির সমস্যা কমাবে।

২। হুকওয়ার্ম জনিত অ্যানিমিয়া থাকলে অবশ্য খাবারদাবারে প্রাণীজ প্রোটিন মাছ, ডিম, বা মাংস দেওয়া দরকার একটু বেশি। অবশ্য কৃমি থেকে বাচ্চাকে মুক্ত করার পর।

৩। ওষুধ খাইয়ে কৃমির সমস্যা দূর করার সঙ্গে সঙ্গে নজর দিন বাচ্চার নূন্যতম স্বাস্থ বিধিগুলোর দিকে। বাচ্চাকে প্রত্যেকবার খাবার খাওয়াবার আগে ভালো করে হাত ধেইয়ে দিন। ওর হাতপায়ের নখ কেটে দিন সপ্তাহে অন্তত একবার।

৪। কাঁচা সবাজ বা ফল ভাল করে না ধুয়ে ভুলেও বাচ্চাকে খাওয়াবেন না। ওকে খালি পায়ে হাটতে দেবেন না রাস্তায়, মাঠেঘাটে, বিশেষ করে বর্ষাকালে।

৫। বন্ধ করতে হবে যেখানে সেখানে চুলকে ওই হাত মুখে দেবার অভ্যাস, অপরিচ্ছন্ন থাকার বা স্নান না করার অভ্যাস।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Please disable your adblocker or whitelist this site!