এবারের বইমেলায় প্রকাশ হয়েছে ধ্রুব নীলের রক্তদ্বীপ । রোমাঞ্চ, অ্যাডভেঞ্চারের সঙ্গে সায়েন্স ফিকশনের ফ্লেভার আছে এ বইতে। পরতে পরতে বিপদের গন্ধ ও বুদ্ধি খাটিয়ে তা থেকে বাঁচতে হবে দুই রোমাঞ্চপাগল বন্ধুকে।
এ বইয়ের মধ্যে একইসঙ্গে জুলভার্ন, ম্যাকগাইভার ও মাসুদ রানাকে খুঁজে পাচ্ছেন পাঠকরা। লেখকও জানালেন, বেশ সময় নিয়েই তাকে এ টেকনো-থ্রিলার উপন্যাস দাঁড় করাতে হয়েছে।
এটি প্রকাশ করেছে প্রসিদ্ধ পাবলিশার্স। প্রচ্ছদ এঁকেছেন জনপ্রিয় শিল্পী ধ্রুব এষ।
এর আগে ধ্রুব নীলের অতিপ্রাকৃত গল্পের সংকলন ‘রক্তবন্দি’ বের করেছিল প্রকাশনাটি। সেটাও বেশ সাড়া ফেলে পাঠকমহলে।
ধ্রুব নীলের ‘রক্তদ্বীপ’ বাংলার জুলভার্ন-এর ছায়া খুঁজে পেয়েছেন পাঠক সজল সরকার। তিনি জানালেন, ‘পুরোটা এক নিঃশ্বাসে পড়ে ফেলার মতো। ইদানীংকার বর্ণনা ও আর একই ধরনের মানবিক টানাপড়েনের উপন্যাস দেখে দেখে আমরা ক্লান্ত। রক্তদ্বীপ যেন একটু দম নেওয়ার সুযোগ দিল।
গীতিকার খায়রুল আলম জানালেন, ‘রক্তদ্বীপ’ পড়ে মনে হলো হলিউডের দুর্দান্ত একটা সিনেমা দেখলাম চোখের সামনে।
সেবা প্রকাশনীর আগেকার দুর্দান্ত সব রহস্য উপন্যাসের স্বাদ পাওয়া গেছে এ উপন্যাসে। জানালেন নাফিসা তৃষা নামের আরেক গুণমুগ্ধ পাঠক।
তাহমিদ জানালেন, ধ্রুব নীল পাঠকদের হতাশ করেন না। আমি নিয়মিত কিশোর আলো ও রহস্য পত্রিকায় তার গল্পগুলো পড়ি। তিনি একইসঙ্গে তার লেখনী দিয়ে পাঠকদের মজা দেওয়ার চেষ্টা করেন, আবার তার গল্পের ‘গল্প’টাও থাকে।
‘রক্তদ্বীপ’ এখনও যারা পড়েননি তাদের জন্য একটাই পরামর্শ দিতে চেয়েছেন সাংবাদিক মাহাফুজুর রাহমান। তিনি বলেন, একটি বইয়ের বড়জোর ২৫০-৩০০ টাকা। এই টাকায় নিজে তো পড়বেন, পরবর্তী প্রজন্মের জন্যও যদি একটি জমজমাট আধুনিক থ্রিলার-সাই-ফাই উপন্যাস রেখে যেতে চান, তবে রক্তদ্বীপের বিকল্প নেই। ‘রক্তবন্দি’ও আমি পড়েছি। গল্পগুলো ভয়ের। তবে ভূতপ্রেত নেই। অতিপ্রাকৃত ভয়। যা আমরা উপভোগ করি আবার অবচেতনে এড়িয়েও চলতে চাই।
রক্তবন্দি ও রক্তদ্বীপ অর্ডার করুন প্রকাশকের লিংকে
রক্তদ্বীপের রমারির লিংক
রক্তবন্দির রকমারি লিংক
রক্তদ্বীপের কাহিনি সংকেত
বঙ্গোপসাগরের দক্ষিণ-পুবের একটি দ্বীপ। সবাই ডাকে কুসুমচর। অদ্ভুত সব ঘটনা ঘটে সেখানে। কিছু দিন পর পর অবধারিতভাবেই যেন প্রাণ দিতে হয় একজন দ্বীপবাসীকে। অজানা আতঙ্কে ছুটতে ছুটতে মারা যায় সেই হতভাগা। কেউ তাদের লাশও খুঁজে পায় না। ¯্রফে গায়েব হয়ে যায়।
ভুতুড়ে এ ঘটনার কথা জানতে পারে রোমাঞ্চপাগল মিলন। কুসুমচরে অ্যাডভেঞ্চারে তার সঙ্গী হয় শৈশবের বন্ধু বোটানিস্ট তুষার। উদ্ভিদবিজ্ঞানের তরুণ গবেষক তুষার। মিলন অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমী ব্যবসায়ী। একজন বিজ্ঞান বোঝে ভালো, আরেকজনের আছে উপস্থিত বুদ্ধি ও দারুণ সাহস।
কুসুমচরে পা রাখতেই অশুভ আলামত পেতে থাকে দুজন। তারা আসতে না আসতেই দেখে দ্বীপ ছাড়তে শুরু করেছে বাসিন্দারা। উটকো সব ঘটনা ঘটতে শুরু করেছে। বাড়তে থাকে বিপদের গন্ধ।
নিশির ডাকে আটকা পড়ে তুষার মিলন। দ্বীপের প্রাগৈতিহাসিক গাছপালা ও ঝোপঝাড়ে ওরা দেখতে শুরু করে অদ্ভুত সব দৃশ্য। ফিসফিস করে মাথার ভেতর কথা বলে কে যেন!
ঘটনার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দাঁড় করাতে গিয়েও মাঝে মাঝে হিমশিম খায় তুষার। অন্যদিকে মিলনের উপস্থিত বুদ্ধি জান বাঁচিয়ে দেয় দুজনের।
এক পর্যায়ে জনশূন্য হয়ে পড়ে কুসুমচর। আটকে পড়ে দুই বন্ধু। এমন সময় ঝামেলা হয়ে জুড়ে বসে একদল অস্ত্রধারী জলদস্যু।
দ্বীপের সঙ্গে বোঝাপড়া চালাতে গিয়ে টানাপড়েনে পড়ে যায় তুষার। জট খুলতে খুলতে ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসে আস্ত একটা বিপদের নেটওয়ার্ক। চেনা বিপদ নয় এগুলো। শত্রæও অদৃশ্য। আর ত্রাই বেঁচেবর্তে থাকার কৌশলটাও বদলাতে হয় দুই বন্ধুকে।
একদিকে দ্বীপের অদৃশ্য শত্রæ, অন্যদিকে জলদস্যু। বিপদ যখন চরমে তখনই যেন দ্বীপে বেড়াতে আসে আরো কয়েকজন তরুণ-তরুণী। উপায় না থাকলেও দায়িত্ববোধ বেড়ে যায় তুষার-মিলনের।
একই সঙ্গে বিজ্ঞান, টিকে থাকার কৌশল, রোমাঞ্চ, প্রাগৈতিহাসিক প্রকৃতি ও আধিভৌতিক সব ঘটনা নিয়েই রক্তদ্বীপের কাহিনি।