Monday, December 23
Shadow

মস্তিষ্কের অ্যানিউরিজম ও তার চিকিৎসা

মস্তিষ্কের রোগ

মাথায় রক্তের চাপ বেঁধে রক্তক্ষরণ ঘটলে রোগীর প্রাণসংশয় দেখা দেয়, তাই রোগী ও ডাক্তাররা অপারেশনের ঝুঁকি নেন: ব্রেন অপারেশন, ক্যাথিটার দিয়ে, কিংবা সরাসরি মাথায়৷ ঝুঁকি তো বটেই, আবার নিরাময় হবার পথও বটে৷

  চল্লিশ বছর বয়সের আনকে কাম্প শোনালেন সে কাহিনি: ‘‘গত বছরের নভেম্বর মাস থেকে রোজ আমার শরীর খারাপ হতো৷ তখন আমার একটা ভাইরাল ইনফেকশন নির্ণয় করা হয়, যা ছয় থেকে আট সপ্তাহের মধ্যে সেরে যাওয়া কথা৷ সেরেও গেল – কিন্তু শরীর খারাপের ভাবটা গেল না, কাজেই আরো পরীক্ষা চলল৷ এমআরআই থেকে মাথায় একটা অ্যানিউরিজম ধরা পড়ল৷ আপাতত তারই চিকিৎসা চলেছে৷’’

মস্তিষ্কের অ্যানিউরিজম মানে মগজের কোনো ধমনিতে রক্ত চাপ বেঁধে একটি জায়গা ফুলে ওঠা৷ এ ধরনের অ্যানিউরিজম প্রায়শ মাত্র কয়েক মিলিমিটার পুরু হয় ও তার কোনো উপসর্গ থাকে না৷ অ্যানিউরিজম যতক্ষণ পর্যন্ত ফেটে না যাচ্ছে, ততক্ষণ আশঙ্কার কিছু নেই৷ কিন্তু ফেটে গেলে ভয়ংকর: অর্ধেক রোগী সঙ্গে সঙ্গে কিংবা কিছুক্ষণের মধ্যে মারা যান৷

ড্যুসেলডর্ফ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউরোসার্জন প্রো. ড. ডানিয়েল হেংকি বললেন, ‘‘এ ধরনের একটি অ্যানিউরিজম ফাটবে কি ফাটবে না, তা বলার জন্য আমাদের হাতে বিশেষ পন্থা নেই৷ অ্যানিউরিজমের সাইজ, কী ধরনের অ্যানিউরিজম আর ঠিক কোথায়, এ সবের ওপর নির্ভর করবে – সেই সঙ্গে থাকবে রোগীর ব্যক্তিগত অবস্থা৷ চিকিৎসা ও চিকিৎসাজনিত জটিলতার যে ঝুঁকি, তার সঙ্গে রোগীর অবস্থাকে মিলিয়ে একটা বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্তে আসতে হবে৷’’

অস্ত্রোপচার

মাথায় রক্তক্ষরণের বিপদ শুধুমাত্র অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে দূর করা সম্ভব৷ একটি পন্থা হল পেশেন্টের কুঁচকি দিয়ে ক্যাথিটার ঢুকিয়ে মগজের সংশ্লিষ্ট ধমনি পর্যন্ত চলে যাওয়া৷

ওই ক্যাথিটার দিয়েই অ্যানিউরিজমে প্ল্যাটিনামের অতি সূক্ষ্ম প্যাঁচানো তার ঢোকানো হয়, যার ফলে ফোলা জায়গাটাতে আর কোনো রক্ত ঢুকতে পারে না৷ অ্যানিউরিজমটিকে মস্তিষ্কের রক্তচলাচল থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়, তার ভেতরের রক্তও আর জমাট থাকে না, বরং তরল হয়ে আসে৷ মস্তিষ্কের

অন্য উপায়টি হল সরাসরি মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার৷ সেজন্য সবচেয়ে কাছ দিয়ে অ্যানিউরিজম অবধি পৌঁছানো দরকার৷ অতি সাবধানে কাজ করতে হয় – অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে অ্যানিউরিজমটায় টাইটানের তৈরি ক্লিপ লাগাতে হয়৷

চাপ বাঁধা জায়গাটার ঠিক তলায় ক্লিপ বসিয়ে ফোলা জায়গাটাতে আর যাতে রক্ত না ঢোকে, তার ব্যবস্থা করা হয় – কাজেই ফেটে যাওয়ার আর কোনো ভয় থাকে না৷ চিকিৎসকদের কাছে এ সবই নিত্যনৈমিত্তিক কাজ হলেও – ঝুঁকিটা কম নয়৷

প্রফেসর হেংকি বললেন, ‘‘মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার বা ক্যাথিটার ঢুকিয়ে অস্ত্রোপচার, দু’টোই ব্রেনের ওপর সরাসরি অপারেশন, যা থেকে জটিলতা ঘটার ঝুঁকি থেকে যায়৷ কাজেই আমাদের এমন একটা পদ্ধতি দরকার, যা আমাদের বলে দেবে, কোন অ্যানিউরিজমটা ফাটতে পারে আর কোন অ্যানিউরিজমটার ফাটার সম্ভাবনা কম৷’’

সব ঝুঁকি সত্ত্বেও আনকে কাম্প অপারেশনের পথটাই বেছে নেন৷ অপারেশনে কাজ হয়েছে৷ আনকে কাম্প আজ পুরোপুরি সুস্থ৷

https://www.youtube.com/watch?v=AoO_iZhlnGs&t=14s

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Please disable your adblocker or whitelist this site!