class="post-template-default single single-post postid-17470 single-format-standard wp-custom-logo group-blog vl-boxed aa-prefix-matin-">
Shadow

মেডিসিন ও হরমোন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার রাজিবুল ইসলামের পরামর্শ : মাইগ্রেন সমস্যায় করণীয়

মাইগ্রেন সমস্যায়

মাইগ্রেন সমস্যায় করণীয়

ডা. রাজিবুল ইসলাম

মাথা ব্যথায় ভোগা লোকের সংখ্যা অনেক। তবে সব মাথা ব্যথাই কিন্তু মাইগ্রেন নয়। দৃষ্টিস্বল্পতা, মস্তিষ্কের টিউমার, মাথায় অন্য সমস্যার কারণেও মাথা ব্যথা হতে পারে।

 

লক্ষণ

মাথা ধরার নানা কারণ ও প্রকারভেদ রয়েছে। তবে মাইগ্রেনজনিত মাথা ব্যথার কিছু প্রাথমিক লক্ষণ থাকে। যেমন—

♦ মাইগ্রেনজনিত মাথা ব্যথা চোখের পেছনে, ঘাড়ে, মাথার পেছনে হতে পারে।

♦ হঠাৎ করেই শুরু হয়। অনেকে আগে থেকেও টের পান।

♦ প্রথম দিকে ব্যথার মাত্রা কম থাকলেও আস্তে আস্তে তীব্র হয় এবং তা চলতে পারে একটানা ৬ থেকে ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত।

♦ সাধারণত ১০ বছর বয়স থেকে শুরু হয়। ৪৫ বছর বয়স পর্যন্ত বেশি হয়।

♦ পুরুষের চেয়ে নারীদের বেশি হয়।

♦ গা ম্যাজম্যাজ করে। বমি বমি ভাব হতে পারে।

♦ মাথা টন টন করে, অনেক সময় সেটা মাথার এক দিকে হয়।

♦ আলোর দিকে তাকাতে অসুবিধা হয়।

♦ চোখে ঝাপসা বা ব্যথা অনুভূত হতে পারে। মনে হতে পারে, চোখে তারা ঘুরে বেড়াচ্ছে ইত্যাদি।

♦ এসব উপসর্গের সঙ্গে ক্লান্তি, ঘন ঘন প্রস্রাব, ঘামা, কথা বলতে অসুবিধা, খিদে কমে যাওয়া ইত্যাদি উপসর্গ থাকতে পারে।

♦ মাইগ্রেন চলে যাওয়ার পরও ঘারে ব্যথা, ঘুম ঘুম ভাব, মাথা জ্যাম হয়ে থাকা ইত্যাদি উপসর্গ থাকে।

 

কারণ

ঠিক কী কারণে মাইগ্রেন হয়, তা এখনো অজানাই রয়ে গেছে। তবে মস্তিষ্ক থেকেই এ জাতীয় মাথা ব্যথার উদ্ভব হয় এবং পরে ছড়িয়ে পড়ে স্নায়ুপথে। অনেক সময় রক্ত চলাচলেও প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে।

আবার অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়ায়, মদ্যপানে, তীব্র আলো চোখে পড়লে, বিশেষ কোনো গন্ধ নাকে এলে, বিকট শব্দ শুনলে, ধোঁয়ার গন্ধ পেলে, শারীরিক ও মানসিক নানা উত্তেজনায়, ঘুমের ব্যাঘাত ঘটলে, চকোলেট, দুগ্ধজাত খাবার, কলা, কমলাজাতীয় ফল, বাদাম, পেঁয়াজ ইত্যাদি খেলেও মাইগ্রেন শুরু হতে পারে। বংশগত কারণও থাকে। আবার উত্তেজনা, বিশেষ কোনো খাবার খাওয়া বা পারিপার্শ্বিক অবস্থার দরুন মস্তিষ্কে কোনো অস্বাভাবিক প্রক্রিয়া শুরু হলেও মাইগ্রেনের সূত্রপাত হয়।

মাইগ্রেন সমস্যায় চিকিৎসা

মাইগ্রেনের তেমন কোনো চিকিৎসা নেই। চিকিৎসকরা অনেক সময় বমির ভাব কমানোর জন্য, ঘুমের জন্য বা অন্য কিছু সহায়ক চিকিৎসা দেন। অল্পস্বল্প মাইগ্রেনজনিত সমস্যা উপশমের জন্য অ্যাসিটামিনফিন, আইবুপ্রোফেন বা অ্যাসপিরিনজাতীয় ওষুধগুলো বেশ কাজ দেয়। তীব্র মাইগ্রেন হলে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।

 

প্রতিরোধে করণীয়

সবার আগে জোর দেওয়া উচিত মাইগ্রেন প্রতিরোধের বিষয়টিতে। কিছু নিয়ম মেনে চললে মাইগ্রেনকে কিছুটা হলেও প্রতিরোধ করা যায়। যেমন—

♦ যেসব কারণ বা অবস্থা থেকে সাধারণত মাইগ্রেনের উদ্রেক হয়, সেগুলো না করা বা পরিহার করা।

♦ মাইগ্রেনের আগে কী ঘটেছিল, সেগুলো লিখে রাখা এবং ভবিষ্যতে সেই পরিস্থিতি এড়িয়ে চলা।

♦ মাইগ্রেন শুরু হয়ে গেলে প্রচুর পানি পান করা, বিশেষ করে বমি হয়ে থাকলে।

♦ অন্ধকার ঘরে বিশ্রাম নেওয়া বা সম্ভব হলে হালকা ঘুম দেওয়া।

♦ মাথায় ঠাণ্ডা কাপড় জড়িয়ে রাখলে ভালো ফল পাওয়া যায়।

♦ প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যাওয়া এবং ওঠার অভ্যাস করা।

♦ তীব্র আলো অথবা কম আলোতে কাজ না করা।

♦ তীব্র সূর্যরশ্মি বা অতিরিক্ত শীতল পরিবেশ এড়িয়ে চলা।

♦ উচ্চশব্দ ও কোলাহলপূর্ণ পরিবেশে বেশিক্ষণ না থাকা।

♦ বেশি সময় ধরে সেলফোন, পিসি বা টিভির সামনে না থাকা।

 

মাইগ্রেন সমস্যায়

লেখক : মেডিসিন ও হরমোন বিশেষজ্ঞ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Please disable your adblocker or whitelist this site!