class="post-template-default single single-post postid-12847 single-format-standard wp-custom-logo group-blog vl-boxed aa-prefix-matin-">
Shadow

মেজাজি , বদরাগী বলে বদনাম আছে? এ সব উপায়ে বাগে আনুন রাগ

ভয়ানক রাগে মুখের উপর বলে দেন যা মনে আসে তা-ই। হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হতেও সময় লাগে না। এ সব বিষয় বদ মেজাজি মানুষের স্বাভাবিক লক্ষণ। কিন্তু রাগেরও নানা প্রকতারভেদ আছে বইকি! আচমকা রেগে গিয়ে সহজেই রাগ পড়ে গিয়ে আফসোস করেন অনেকে। কেউ বা ভিতরে ভিতরে গজরান, কী করবেন ভেবে পান না। রাগ সামলানোর উপায় জানেন? হয়তো তা জানেন না বলেই এত সহজে রাগ পেয়ে বসে!

আপনি বা আপনার কোনও প্রিয় জন কি এমন রাগের প্রকোপে প্রায়ই পড়েন? রাগের প্রভাবে সম্পর্ক নষ্ট থেকে শুরু করে প্রেশার-সুগার বৃদ্ধি— কোনওটাই কিন্তু অস্বাভাবিক নয়। চিকিৎসকরাও বলেছেন রাগ না সামলালে হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা বেড়ে যাচ্ছে প্রায় কয়েক গুণ!
তবে চিন্তা নেই৷ রাগ হলে কী করবেন, রাগ ঠেকাতে কী করবেন, মনোবিদদের মতে এ সবেরই রাস্তা আছে৷ সে সব মেনে চললে আপনার সমস্যারও সমাধান সম্ভব। সহজে রাগ কমানোর উপায় নিয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন মনোচিকিৎসক শিলাদিত্য মুখোপাধ্যায়৷ মেজাজি

• প্রথমেই মুখে কুলুপ৷ বা কম কথার রাস্তায় হাঁটুন। প্রথম যে কথাটা মাথায় আসে সেটা কিছুতেই বলবেন না৷ বলতেই যদি হয়, ভাল করে ভেবে দেখুন কোন কথা বললে সবচেয়ে কম ক্ষতি৷
• রাগের মাথায় সিদ্ধান্ত নেবেন না বা প্রতিজ্ঞা করবেন না৷ অশান্তির জায়গা থেকে সরে যেতে পারলে সবচেয়ে ভাল৷
• জোরে জোরে হাঁটলে, ব্যায়াম করলে, বন্ধু–বান্ধবকে মনের কথা খুলে বললে বা কারও সঙ্গে অন্য বিষয়ে কথা শুরু করলে ১০–১৫ মিনিটে রাগের প্রথম ধাক্কা কাটে।
• এ সব না করা গেলে হাতিয়ার সুইচ অন, সুইচ অফ এবং ভিজ্যুয়াল ইমেজারি৷ মন থেকে ঠিক করুন, ঘটনাটা নিয়ে ভাববেন না৷ অর্থাৎ বিষয়টা সুইচ অফ করুন৷ এ বার প্রিয় কোনও বিষয় নিয়ে গভীর ভাবে ভাবতে শুরু করুন৷ এতটাই গভীর ভাবে যাতে ঘটনাটা চোখের সামনে ভেসে ওঠে৷ একে বলে ভিজ্যুয়াল ইমেজারি৷
• রাগের প্রথম ধাক্কা কাটল, কিন্তু ঘটনাটা মুছে ফেলতে পারছেন না, এ রকম হলে একটাই রাস্তা, ক্ষমা করে দিন৷ মনে রাখবেন, ক্ষমা করা মানে কিন্তু পরাজয় স্বীকার করা নয়৷ বুদ্ধিকে কাজে লাগিয়ে নিজের শরীর এবং মনকে নানা ক্ষতির হাত থেকে বাঁচানো। তা ছাড়া রাগ সত্ত্বেও শান্ত ভাবে সরে যাওয়ার অর্থ, আপনার মানসিক জোর আর পাঁচ জনের চেয়ে বেশি৷

• রাগের কারণ যে মানুষ প্রয়োজনে তাঁকে সূক্ষ্ম ভাবে অবহেলা করুন৷ জানবেন, অবহেলার আঘাত সবচেয়ে বেশি৷
পারছেন না? মনে হচ্ছে দু’কথা শোনাতে না পারলে মন ঠান্ডা হবে না? তারও রাস্তা আছে৷ মেনে দেখুন, ম্যাজিকের মতো কাজ হবে৷
• দু’টো চেয়ার মুখোমুখি রেখে একটায় বসুন৷ কল্পনা করে নিন সামনের চেয়ারে বসেছেন আপনার শত্রু৷ এবার তাঁকে যা খুশি বলুন৷ যত অপমান করতে পারেন করুন৷ খানিক বাদেই দেখবেন রাগ কমছে৷ পুরো কমে গেলে চেষ্টা করুন ব্যাপারটা ভুলে যেতে৷ এবং নিজের শান্তির কথা ভেবে তাঁকে ক্ষমা করে দিন৷
• অপমান করে চিঠি বা মেল লিখে সেভ করে রাখুন৷ ঘটনাটা ভুলে যাওয়ার পর নষ্ট করে ফেলুন৷ এবং মানুষটির মুখোমুখি হন স্বাভাবিক ভাবে৷

রাগ ঠেকাতে
কোন কোন ঘটনায় রেগে যান তা ভাল করে বুঝে নিন৷ সেরকম পরিস্থিতি যাতে না হয় সে চেষ্টা করুন৷ ধরুন, কারও সঙ্গে কথা বলছেন, কথা কোন রাস্তায় গেলে সমস্যা হতে পারে তা বুঝে সেই রাস্তা এড়িয়ে চলুন৷ তার জন্য যদি নত হতে হয় সেও ভাল৷
নত হতে হয়েছে বলে যদি খারাপ লাগে, ভেবে দেখুন এর বিনিময়ে আপনার শরীর, মানসিক শান্তি, সম্পর্ক সবই কিন্তু রক্ষা পেল৷ অতিরিক্ত পাওনা আত্মবিশ্বাস৷ নিজেকে সংযত রাখতে পেরেছেন৷ কিছুতেই অস্থির হবেন না৷ মনে রাখবেন, অন্য সব ইমোশনের মতো রাগও খানিকক্ষণের মধ্যে কমতে শুরু করবে৷ ধৈর্য ধরুন৷
রাগ বেশি হলে ডিপ বেলি ব্রিদিং করুন৷ খুব গভীর থেকে লম্বা শ্বাস টানুন৷ ছাড়ুন ধীরে ধীরে৷ শ্বাস–প্রশ্বাসের সময় পেটের মাংসপেশী ওঠানামা করবে৷ প্রতি দিন দশ মিনিট করে করুন৷ টানা না পারলে সকালে পাঁচ মিনিট, বিকেলে পাঁচ মিনিট৷ এ ছাড়া নিয়মিত যোগাসন করুন৷ এতে শরীর–মন ঠান্ডা থাকে৷
অতিরিক্ত রাগ হলে ভাল থেরাপিস্টের তত্ত্বাবধানে কগনিটিভ বিহেভিয়ার থেরাপি করাতে পারেন৷ অর্থাৎ কেন রেগে যান তা বুঝে নিজেকে বদলানোর চেষ্টা করা৷ যার প্রথম ধাপ নিজের মনকে ভাল করে বুঝে নেওয়া৷ যেমন:

১) আপনার কি চাহিদা খুব বেশি?
২) আপনার কি ইগো খুব বেশি? হতাশা বা দুঃখ এলে তা মানতে পারেন না? তাকে রাগ দিয়ে ঢ়েকে রাখেন?
৩) জীবনে যা ঘটছে তাকে সহজ ভাবে মেনে নিতে পারেন না?
৪) সমস্যা সমাধান করতে না পারলে রাগ হয়ে যায়?
এই চারটি প্রশ্নের মধ্যেই লুকোনো আছে রাগের কারণ৷ এই সমস্যাগুলির মধ্যে কোনটা আপনার আছে ভেবে দেখুন৷ খুঁজে পেলে একটু ভাবনা–চিন্তা করে তাদের সামলাতে হবে৷ যেমন—

• কোন চাহিদা থাকা উচিত আর কোনটা নয়, তা বোঝা জরুরি৷ উচিত চাহিদাও যে সবসময় মেটে না— সে ব্যাপারে ওয়াকিবহাল থাকতে হবে এবং সে রকম ঘটনা ঘটলে তাকে খোলা মনে মেনে নিতে হবে৷
• হতাশা, দুঃখ এবং রাগ তিনটে আলাদা আবেগ৷ রাগ দিয়ে দুঃখ বা হতাশাকে ঢেকে রাখলে তারা তো কমেই না বরং বেড়ে যায়৷
• সমস্যা এলে ভেবে দেখুন কোন কোন রাস্তায় সমাধান সম্ভব৷ প্রতিটি রাস্তা বিচার করুন৷ যে রাস্তায় গেলে সুবিধার পাল্লা ভারী, সে রাস্তায় যান৷ সঙ্গে কিছু অসুবিধাও থাকবে৷ সেগুলো মেনে নিন৷ এ ভাবে ধাপে ধাপে এগোলে দেখবেন অনেক সমস্যার সমাধান হয়তো আছে, কিন্তু তা করে কোনও লাভ হবে না৷ সে ক্ষেত্রে মেনে নেওয়া ছাড়া আর যখন রাস্তা নেই মাথা গরম করা বোকামি নয় কি? মেজাজি মেজাজি মেজাজি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Please disable your adblocker or whitelist this site!