সম্প্রতি বিশ্ব জুড়ে চালানো সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, মেয়েদের মধ্যে ডায়াবেটিসের প্রবণতা মারাত্মক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সমীক্ষা থেকে জানা গিয়েছে, বর্তমানে বিশ্বে প্রায় ২০ কোটি মহিলা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। ভারতেও প্রায় ৭ কোটি মানুষ টাইপ-টু ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ, যা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের অসুস্থতা বাড়িয়ে তোলে।
রক্তে সুগারের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার ফলে শরীরে ঠিক কী ধরণের সমস্যা হয় তা সম্পর্কে আমরা কমবেশি সকলেই অবগত। নানা বিধি-নিষেধ মেনে চলার পরও সামান্য এদিক থেকে ওদিক হলেই চড়চড় করে বাড়তে থাকে রক্তে সুগারের মাত্রা! একবার ডায়াবেটিস ধরা পড়লে পছন্দের প্রায় সব খাবারই বাদ পড়ে খাদ্য তালিকা থেকে। বিশেষ করে মিষ্টি বা মিষ্টি জাতীয় খাবার। তবে শুধু মিষ্টি নয়, রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে আরও বেশ কিছু খাবার-দাবার এড়িয়ে চলা অত্যন্ত জরুরি। আসুন জেনে নেওয়া যাক রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে মিষ্টি ছাড়া আর কোন কোন খাবার এড়িয়ে চলা জরুরি…
১) দৈনন্দিন কর্মব্যস্ততার চাপে রান্নার সময় বাঁচাতে ফাস্ট ফুডেই বেশি ভরসা রাখছেন বেশির ভাগ মানুষ। বার্গার, চাউমিন, এগ বা চিকেন রোল, ফ্রেঞ্চ ফ্রাইতেই পেট ভরাচ্ছেন অনেকেই। কিন্তু পুষ্টিবিদদের মতে, এই খাবারগুলি খেলে রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়বে হু হু করে।
২) বাজারে এখন অনেক রকমের ‘রিফাইনড’ তেল পাওয়া যায়। বিজ্ঞাপনে এগুলি সম্পর্কে দাবি করা হচ্ছে, এই তেলে ভাজা খাবার স্বাস্থ্যকর। কিন্তু তা মোটেই সঠিক নয়। জানেন কি, এই সব তেলে ভাজা চিপস বা স্ন্যাকস জাতীয় খাবার রক্তে ক্ষতিকর কলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে দিচ্ছে। এরই সঙ্গে ডায়াবিটিসের ঝুঁকি বহুগুণ বাড়িয়ে দিচ্ছে।
৩) রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে যে কোনও প্যাকটজাত পানীয়, যেমন ফ্রুট জুস বা সফট ড্রিঙ্কস এড়িয়ে চলা জরুরি। এই পানীয়গুলির মধ্যে, বিশেষ করে ফ্রুট জুসে রয়েছে ‘ফ্রুকটোজ’ যা রক্তে শর্করার পরিমাণ বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়।
৪) পেস্ট্রি, আইসক্রিম শুনলেই অধিকাংশ মানুষেরই জিভে জল আসে। জানেন কি, কাপকেক, পেস্ট্রি, কুকিজ আপনাকে তৃপ্তি দিচ্ছে ঠিকই, কিন্তু রক্তে ইনসুলিনের মাত্রা বহুগুণ বাড়িয়ে দিচ্ছে!
৫) রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে এড়িয়ে চলুন ভাত, হোয়াইট ব্রেড, পাস্তা। কারণ, এগুলি রক্তে শর্করার মাত্রা বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। ব্রাউন ব্রেড, ওটমিল বা এই জাতীয় খাবার খান যেগুলিতে গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের মাত্রা কম আছে।
৬) দই খেতে ভালবাসেন না, এমন মানুষের সংখ্যাটা খুবই কম। বিশেষজ্ঞদের মতে, দই খেতে হলে ঘরে পাতা দই খান। বাজার থেকে কেনা নানা রকম ফ্লেভার যুক্ত দই না খাওয়াই ভাল। পুষ্টিবিদদের মতে, এগুলি ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয় অনেকটাই।
৭) বাজারচলতি মধু, জ্যামে ‘আর্টিফিশিয়াল সুগার’ থাকে যা স্বাস্থ্যের জন্য চিনির মতোই ক্ষতিকর!
৮) অতিরিক্ত তেল বা মশলাদার খাবার এড়িয়ে চলুন। এই সব খাবারে থাকা ট্রান্স ফ্যাট ইনসুলিনের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। ফলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বৃদ্ধি পায়।