Thursday, April 25
Shadow

এক নজরে সৌরজগত : সৌরজগত নিয়ে অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর

সৌরজগতসৌরজগত কিভাবে গঠিত?সূর্য এবং একে কেন্দ্র করে ঘূর্ণায়মান সকল জ্যোতিষ্ক ও ফাঁকা জায়গা নিয়ে আমাদের  সৌরজগত গঠিত। সৌরজগতের কেন্দ্র হলো এবং সূর্যকে  কেন্দ্র করে ঘোরে পৃথিবী। আমাদের এই বাসভূমি পৃথিবীর আহ্নিক গতি কারণে দিন-রাত হয  আবার পৃথিবীর বার্ষিক গতির ফলে দিন-রাত ছোট বা বড় হয় এবং ঋতুর পরিবর্তন হয়। আহ্নিক গতির কারণে পৃথিবী নিজ অক্ষের উপর কেন্দ্র করে ২৪ ঘণ্টায় একবার পশ্চিম থেকে পূর্বে আবর্তন করে, অন্যদিকে বার্ষিক গতির কারণে পৃথিবী প্রায় ৩৬৫ দিন ৬ ঘণ্টা সময়ে একবার সূর্যের চারপাশে ঘোরে।

 

সৌরজগত নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

 

সৌরজগতের কেন্দ্র – সূর্য।

সৌরজগত এর বেশিরভাগ স্থান- ফাঁকা

বিজ্ঞানী অ্যারিস্টটল ছিলেন একজন দার্শনিক

পৃথিবী তার নিজ অক্ষে আবর্তন করছে এটা বলেন— কোপারনিকাস

পৃথিবী কেন্দ্র করে ঘোরে— সূর্যকে।

সৌরজগতের গ্রহ- ৮টি

সূর্য কেন্দ্রিক মডেলের প্রস্তাব করেন- কোপারনিকাস।

সূর্য একটি-নক্ষত্র

সূর্য থেকে পৃথিবীর দূরত্ব প্রায় ১৫ কোটি কিলোমিটার

সূর্যের সবচেয়ে কাছের গ্রহ বুধ।

শুকতারা আসলে সূর্যের একটি গ্রহ

লাল গ্রহ বলা হয়- মঙ্গলকে

সূর্যের সবচেয়ে বড় গ্রহ বৃহস্পতি।

পৃথিবীর একমাত্র প্রাকৃতিক উপগ্রহ চাঁদ।

চাঁদ একবার পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে ২৭ দিন ৮ ঘন্টা

পৃথিবী দেখতে উত্তর ও দক্ষিণ মেরুর আকৃতি— কমলালেবুর মতো

পৃথিবী পৃষ্ঠের চারভাগের তিন ভাগ পানি।

আমরা পৃথিবী থেকে ছিটকে পড়ি না— অভিকর্ষজ বলের জন্য।

গোলাকার পৃথিবী কে ঘিরে রয়েছে- গ্যাসীয় বায়ুমণ্ডল।

পৃথিবীর বার্ষিক গতির ফলে পরিবর্তন হয়— ঋতু

পৃথিবীর দক্ষিণ গোলার্ধ সূর্য থেকে দূরে অবস্থান করে—২১ জুন।

পৃথিবীর উভয় গোলার্ধে দিন রাত সমান হয়– ২৩ সেপ্টেম্বর

 

ক।কোপারনিকাস কোন কোন ধরনের মডেলের প্রস্তাব করেন?

খ।কোপারনিকাসের মতবাদ ব্যাখ্যা কর।

গ. কোপারনিকাসের মডেলের কেন্দ্রীয় বস্তুটি বর্ণনা কর।

ঘ. মানুষের জীবনে ঋতু পরিবর্তনের প্রভাব আলোচনা কর।

 

ক।সূর্যকেন্দ্রিক

খ। কোপারনিকাস পৃথিবীকেন্দ্রিক মডেলের পরিবর্তে সূর্যকেন্দ্রিক মডেল প্রস্তাব করেন। তার মডেলের মূল কথা হলো পৃথিবী সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘোরে। তিনি আরও একটি নতুন কথা বলেন, সেটি হলো পৃথিবী তার নিজ অক্ষের উপর আবর্তন করে। পরবর্তীতে বিজ্ঞানী গ্যালিলিও ও কেপলার, কোপারনিকাসের এই মতবাদের পক্ষে প্রমাণ দেন। বর্তমানে সূর্যকেন্দ্রিক এই মডেল প্রমাণিত।

গ।কোপারনিকাসের মডেলটি সূর্যকেন্দ্রিক। সকল গ্রহ সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘোরে। নিচে সূর্যের বর্ণনা করা হলো

সূর্যের জ্বলন্ত গ্যাসপিণ্ডে রয়েছে মূলত হাইড্রোজেন ও হিলিয়াম গ্যাস। হাইড্রোজেন গ্যাসের পরমাণু পরস্পরের সাথে সংযুক্ত হয়ে হিলিয়াম পরমাণুতে পরিণত হয়। এ প্রক্রিয়ায় প্রচুর শক্তি উৎপন্ন হয়। এ শক্তি তাপ ও আলোক শক্তি হিসেবে সৌরজগতে ছড়িয়ে পড়ে। এভাবে সূর্যের কাছ থেকে আমরা তাপ ও আলো পেয়ে থাকি। সূর্য মাঝারি আকারের একটি নক্ষত্র। তারপরও এটি পৃথিবীর তুলনায় কয়েক লক্ষ গুণ বড় এবং পৃথিবী থেকে প্রায় ১৫ কোটি কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। তাই পৃথিবী থেকে আমরা সূর্যকে এতো ছোট দেখি ।

ঘ।ঋতু পরিবর্তন মানুষের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ঋতু পরিবর্তন না হলে বাংলাদেশের মতো নাতিশীতোষ্ণ দেশে সারা বছর গরমকাল বা শীতকাল থাকত । বিভিন্ন ফসল উৎপাদন করা সম্ভব হতোনা , সারা বছর এরকম ফসলই উৎপন্ন হবে। জীবনধারণ কষ্টকর হয়ে যেত। শীতপ্রধান দেশগুলোতেও ঋতু পরিবর্তন না হলে মানুষের জীবনধারণ অসম্ভব হয়ে।

 

সৌরজগত নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ অনুধাবনমূলক প্রশ্ন

প্রশ্ন: সূর্য সহ অন্যান্য নক্ষত্র কীভাবে তাপ ও আলো উৎপন্ন করে চলেছে, তা ব্যাখ্যা কর।

উত্তর: সূর্য এবং অন্য নক্ষত্রগুলো হচ্ছে এক প্রকার জ্বলন্ত গ্যাসপিন্ড, যা মূলত হাইড্রোজেন ও হিলিয়াম গ্যাস দিয়ে গঠিত। হাইড্রোজেন গ্যাসের পরমাণু পরস্পরের সাথে সংযুক্ত হয়ে হিলিয়াম পরমাণুতে পরিণত হয়ে প্রচুর তাপ ও আলোক শক্তি উৎপন্ন করে।

 

প্রশ্ন : ২১ মার্চ এবং ২৩ সেপ্টেম্বরে দিন-রাত্রি সমান হয় কেন?

উত্তর: পৃথিবী সূর্যের চারদিকে কিছুটা হেলে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করছে। পৃথিবী বছরের বিভিন্ন সময়ে তার হেলানো অবস্থার পরিবর্তন করে। ২১ মার্চ এবং ২৩ সেপ্টেম্বর তারিখে পৃথিবীর উত্তর ও দক্ষিণ মেরু সূর্য থেকে সমান দূরে থাকে। এজন্য ২১ মার্চ এবং ২৩ সেপ্টেম্বর তারিখে দিন-রাত্রি সমান হইয়।

প্রশ্ন : শুকতারা ও সন্ধ্যাতারা বলতে কী বোঝায়? ব্যাখ্যা কর।

উত্তর: পৃথিবী থেকে ভোর বেলায় শুকতারা ও সন্ধ্যায় পশ্চিম আকাশে যে তারাটি দেখা যায় সেটিই সন্ধ্যাতারা নামে পরিচিত। এটি কোনো  নক্ষত্র না, এটি আসলে শুক্র গ্রহ। ভোররবেলা ও সন্ধ্যায় সূর্যের আলো শুক্র গ্রহের ওপর পড়ে বলে এটাকে তারার মতো মনে হয়।

প্রশ্ন আগের মানুষ কেনো মনে করত  সূর্য পৃথিবীকে কেন্দ্র করে ঘোরে?

উত্তর: প্রাচীনকালে মহাকাশ গবেষণায় কোন যন্ত্র ছিল না। খালি চোখে যেমনটা বোঝা যেত তাই ধারনা করা হতো। ভোররবেলায় সূর্য পূর্ব দিগন্তে উঠে ধীরে ধীরে মাথার ওপরে এসে পশ্চিম দিগন্তে ডোবে, পৃথিবী থেকে এটা দেখে তাই ধরে নেয়া হয় সূর্য পৃথিবীকে কেন্দ্র করে পূর্ব থেকে পশ্চিম দিকে ঘোরে। ফলে আগের দিনে সাধারণ মানুষসহ অনেক বিখ্যাত বিজ্ঞানী ও জ্যোতির্বিদরাও মনে করতেন সূর্য পৃথিবীকে কেন্দ্র করে ঘোরে।

 

প্রশ্ন : অমাবস্যা ও পূর্ণিমা কেন হয়?

উত্তর: চাদ ২৭ দিন ৮ ঘণ্টায় পৃথিবীকে একবার প্রদক্ষিণ করে। এই প্রদক্ষিণের সময় এক রাতে চাদকে একেবারেই দেখা যায় না,  তাকে অমাবস্যা বলে। পরের দিন থেকে সরু এক ফালি চাঁদ পশ্চিম আকাশে দেখা যায়। এটি প্রতি রাতে বড় হতে থাকে এবং এর দুই সপ্তাহ পর চাঁদ পরিপূর্ণ হয়ে একটি থালার মত দেখা যায় একে পূর্ণিমা বলে । এবং এভাবে ২৯ বা ৩০ দিন পর পর অমাবস্যা ও পূর্ণিমা হতে দেখা যায়।

 

প্রশ্ন : গ্রহ ও নক্ষত্রের দুটি পার্থক্য লিখ

গ্রহ আকারে ছোট ও এর তাপমাত্রা কম অন্যদিকে নক্ষত্র আকারে অনেক বড় ও তাপমাত্রা তুলনামূলক অনেক বেশি।

গ্রহ শক্তি উৎপন্ন করতে পারে না অন্যদিকে নক্ষত্র হাইড্রোজেন পরমাণু পরস্পরের সাথে মিলিত হয়ে হিলিয়ামে রূপান্তরের ফলে প্রচুর শক্তি উৎপন্ন হয় ফলে এরা আলো ও তাপ নিঃসরণ করে ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Please disable your adblocker or whitelist this site!

error: Content is protected !!