Monday, December 23
Shadow

অঙ্গভঙ্গিতেই মনে হচ্ছিল আমি তাদের দাসী, ক্ষোভ অভিনেত্রীর

মেখলা দাশগুপ্ত

মেখলা দাশগুপ্ত । রিয়্যালিটি শো খ্যাত সঙ্গীত শিল্পী তিনি। তবে সম্প্রতি এ গায়িকাকে কিছু কটূক্তির সম্মুখীন হতে হয়েছে। যা শুনে রীতিমতো কষ্ট পান এ অভিনেত্রী। এছাড়া তাকে শুনতে হয়েছে ‘তিন টাকার শিল্পী কোথাকার!’

আর এমন পরিস্থিতি হয়েছে দাঁতন থানার কালীপূজা উপলক্ষে পুলিশের আয়োজিত এক জলসায়। শনিবার রাতের ওই ঘটনার পরে রবিবার দুপুরে ফেসবুক লাইভে গোটা অভিজ্ঞতা জানিয়েছেন তিনি। তার অভিযোগের তির, দাঁতন থানার কনস্টেবল, সিভিক ভলান্টিয়ার থেকে পুলিশ আধিকারিকদের বিরুদ্ধেও রয়েছে।

রাজ্যের নানা প্রান্তে এর আগেও জলসায় গিয়ে হেনস্থার মুখে পড়েছেন অভিনেত্রী থেকে মহিলা সঙ্গীত শিল্পীরা। কোথাও অভিযোগ উঠেছে ক্লাব কর্তাদের বিরুদ্ধে, কোথাও বা আম দর্শকের বিরুদ্ধে। এবার খোদ পুলিশের বিরুদ্ধে মহিলা সঙ্গীত শিল্পীকে হেনস্থার অভিযোগ ওঠায় শোরগোল পড়েছে। মেখলার ফেসবুক পোস্ট ভাইরাল হচ্ছে।

মেখলার দাবি, থানার পক্ষ থেকে অনুষ্ঠানের আয়োজক হিসাবে সুব্রত রায় পরিচয় দিয়ে একজন তার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তিনি আরও জানান, সঙ্গীতশিল্পী অনীক ধরও মেখলার সঙ্গে গান গাইবেন। কিন্তু সোমবার ফোনে মেখলা বলেন, “আমি দাঁতনে এসে সুব্রত রায় নামে ওই আয়োজককে দেখতে পাইনি। সন্ধে সাড়ে ৭টায় মঞ্চ দেবে বলে রাত ১০টায় মঞ্চ পাই। অনীকদা না আসায় দর্শক উত্তেজিত ছিল। আইসি-র কথামতো দু’ঘণ্টা গান গাইতে রাজিও হয়েছিলাম। কিন্তু ঘণ্টাখানেক যে অসভ্যতা চলে তাতে আর গান গাওয়া সম্ভব ছিল না।”

ফেসবুক লাইভে মেখলা জানিয়েছেন, দর্শকাসনে অনেকেই মদ্যপ অবস্থায় ছিল। ‘লায়লা মে লায়লা’, ‘দো ঘুঁট মুঝেভি পিলাদে শরাবি’র মতো গান গাওয়ার অনুরোধ আসে। একাংশ দর্শক তাদের কাছে গিয়ে নাচার আবদারও করে।

মেখলা বলেন, ‘‘বলা হচ্ছিল বাঁ-দিকে রেসপেক্টেড পুলিশ অফিসারদের কাছে যেতে। কিন্তু আমি জানি না তাদের মধ্যে কেউ অফিসার কিনা। তবে কনস্টেবল, সিভিক ভলান্টিয়াররা ছিলেন। তারা এমন অঙ্গভঙ্গিতে আমাকে ডাকছিলেন যেন আমি তাদের দাসী। তারা যা খুশিই আমার সাথে করতে পারবে।

মেখলার ক্ষোভ, ‘‘তেমন হলে নৃত্যশিল্পী বা ডিজে ভাড়া করলেই হত। সত্যি বলতে খুব সাধনা করে গান শিখেছি তো, তাই এ সবে কষ্ট হচ্ছিল।”

ঘটনার পরই দাঁতন থানার আইসিকে বিস্তারিত জানান মেখলা। মেখলার কথায়, “আইসি বাইরে বেরিয়ে পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু পুলিশকর্মীরা দু’দলে ভাগ হয়ে যাওয়ায় খুব গোলমাল হচ্ছিল। আমি কোনও রকমে দাঁতন ছেড়ে বেরিয়ে আসি।” মেখলার সংযোজন, “নাচের গানের অনুরোধ বহু মঞ্চেই আসে। কিন্তু থানার অনুষ্ঠানে পুলিশ এমন আচরণ করলে আমাদের নিরাপত্তার কী হবে!”

সুব্রত রায় নামের ওই আয়োজকের মোবাইল এ দিন বন্ধ ছিল। তবে মেখলার ফেসবুক-লাইভের পরে নড়েচড়ে বসেছে পুলিশ। অনুষ্ঠানের সিসিটিভি ফুটেজ ও ভিডিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, ‘‘দাঁতনের বিষয়টি শুনেছি। ঠিক কী হয়েছে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

ফেসবুকে শেয়ার করা গায়িকার ভিডিওটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Please disable your adblocker or whitelist this site!