পৃথিবী তাঁকে চেনে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ‘সম্রাজ্ঞী’ হিসেবে। রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ চরিত্রে তাঁর অনবদ্য অভিনয়ই যার কারণ। ঠাট্টা করে বলা হয়, স্বয়ং সম্রাজ্ঞীও নিজ চরিত্রে এতটা ভালো মানিয়ে নিতে পারতেন না। সিনেমাবিষয়ক ট্যাবলয়েডগুলো তো ‘হলিউডের নতুন রানি’র স্বীকৃতি দিয়েছে ক্লেয়ার কে। খাঁটি ব্রিটিশ পরিবারে জন্ম। তাই ছোটবেলা থেকেই ব্রিটিশ আভিজাত্যটা রপ্ত করেছেন ভালোভাবেই। হাই স্কুলের পাট চুকিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন নাট্যকলায়। অক্সফোর্ডে অভিনয়ের ওপর কোর্স করেছেন। ছোট পর্দায় সূচনা ২০০৮ সালে হররধর্মী টিভি সিরিজ ‘বিইং হিউম্যান’-এ ছোট্ট চরিত্র দিয়ে। প্রধান চরিত্রে সুযোগ পেতে বেশি দিন অপেক্ষা করতে হয়নি। একই বছর বিবিসির ‘লিটল ডরিট’-এ নাম ভূমিকায় অভিনয় তাঁকে ব্রিটেনজুড়ে তারকা খ্যাতি দেয়। পরে ‘আপস্টেয়ারস ডাউনস্টেয়ারস’, ‘দ্য প্রমিজ’ ইত্যাদি সিরিজে তাঁর অভিনয় প্রশংসা পায়। কিন্তু
প্রশংসা পেলেও ঠিক তারকা খ্যাতিটা আসছিল না। সেটা হয় ‘দ্য ক্রাউন’ দিয়ে। ‘নেটফ্লিক্স’-এর সিরিজে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের ভূমিকায় ক্লেয়ার বাজিমাত করেন। এরই মধ্যে বাগিয়ে নিয়েছেন অ্যামি ও গোল্ডেন গ্লোব। তবে এসব পুরস্কারের বাইরে রানি এলিজাবেথের চরিত্রটি তাঁর কাছে বিশেষ কিছু, ‘এখন তো বাস্তবেও মানুষ আমাকে রানি ভাবে। যেখানে যাই রানির মতোই খাতির পাই। রাজকীয় আপ্যায়ন পেতে খারাপ লাগে না।’ মজার ব্যাপার, দ্বিতীয় এলিজাবেথ ছাড়াও আরেক ব্রিটিশ রানির ভূমিকায়ও তিনি অভিনয় করেছেন। ২০১৫ সালে ‘উলফ হল’ সিরিজে রানি অ্যান বলেনের চরিত্রেও ছিলেন ক্লেয়ার।
টিভি সিরিজের সঙ্গে বেশ কিছু চলচ্চিত্র করলেও এখনো বড় পর্দায় নিজেকে সেভাবে প্রতিষ্ঠা করতে পারেননি। ২০১১ সালে নিকোলাস কেজের বিপরীতে ‘সিজন অব দ্য উইচ’ দিয়ে অভিষেকের পর ‘ভ্যাম্পায়ার একাডেমি’, ‘দ্য লেডি ইন দ্য ভ্যান’, ‘ব্রেথ’ ইত্যাদি সিনেমা করলেও ততটা ভালো করতে পারেননি। তবে হালে সময়টা ভালো যাচ্ছে। স্টিফেন সোডারবার্গের ‘আনসেইন’ সমালোচক মহলে বেশ প্রশংসা পায়। এ ছাড়া চন্দ্র বিজয় নিয়ে ‘ফার্স্ট ম্যান’-এ দেখা গেছে এই অভিনেত্রীকে। এবার ক্লেয়ারকে দেখা যাবে সিগ লারসন সৃষ্ট প্রখ্যাত চরিত্র লিসবেথ সালান্দারের ভূমিকায়। ফেডে আলভারেজের ‘দ্য গার্ল ইন দ্য স্পাইডারস ওয়েব’-এ নাওমি রিপ্যাস ও রুনি মারার পর তৃতীয় অভিনেত্রী হিসেবে লিসবেথ চরিত্রে রূপদান করছেন। এ পর্বে হ্যাকার লিসবেথকে দেখা যাবে অন্তর্জালের দুনিয়ায় গুপ্তচর, সাইবার অপরাধীদের এক চক্রের বিরুদ্ধে অসম লড়াইয়ে। এ বছর দারুণ সফল অভিনেত্রী চান এই ছবি দিয়ে সুসময় আরো দীর্ঘায়িত হোক। এ জন্যই মা হওয়ার মাত্র দুই মাসের মধ্যেই দাঁড়িয়েছেন ক্যামেরার সামনে!