Monday, December 23
Shadow

প্রেম করলে শরীর–মন ভালো থাকে : বললেন জয়া আহসান

জয়ার ১০ রহস্য

সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম সরব জয়া আহসান এর ফিটনেস ও সৌন্দর্যের রহস্য নিয়ে। রসিকতার সাইটগুলো লেখে, মিসির আলী তো কত রহস্যেরই সমাধান করলেন, কিন্তু জয়ার সৌন্দর্যের রহস্য তো স্বয়ং মিসির আলীর কাছেই অমীমাংসিত রয়ে গেল।

সে কথা তুলতেই জয়া আহসানের সহাস্য উত্তর, আমি তো খোলা বইয়ের মতো, আমার কোনো গোপন রহস্য নেই।

তাই নাকি? তাহলে আমাদের ১০টি জিজ্ঞাসার জবাব দিন। আমরা খুলতে যাচ্ছি ‘এক্সফাইল: জয়া রহস্য’, ডিকোড করতে যাচ্ছি জয়া আহসানের চির সবুজ থাকার গোপন ১০ চাবিকাঠি। সঙ্গে প্রেমের কথাও।

জয়া হাসিমুখেই জবাব দিলেন ১০ প্রশ্নের। বছরের পর বছর ধরে প্রেম করার কথাও বলেছেন জয়া

১০
সম্প্রতি দেবী সিনেমার প্রচার চলাকালে কাঁচা মরিচ দিয়ে ভাত খাওয়ার একটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হতে দেখা যায়। সাধারণত যাঁরা ডায়েট করেন, ভাত খাওয়া বাদ দিয়ে দেন। প্রশ্ন হলো, ভাত খান?
জয়া: হা হা হা হা। সত্যিই আমি ভাত খাই। শুধু তা–ই না, আমি প্রচুর খাওয়াদাওয়া করি। খেতে ভালোবাসি। ঢাকায় থাকলে সকালে ঘুম থেকে উঠে ছাদের বাগান থেকে তাজা সবজি নিয়ে আসি। দুপুরে সবজি দিয়ে ভাত খাই। মাঝে মাঝে পোলাও ও রেডমিট খেতে ইচ্ছে করলে মাকে বলি। মা রান্না করে খাওয়ান। অত হিসাব করে খাই না। তবে এক বছর হলো রাতে কম খেতে চেষ্টা করছি।


আপনার ডায়েট চার্ট যদি বলতেন…
জয়া: নিয়ম মেনে হিসাব–নিকাশ করে খেতে পারি না; বিশেষ করে যখন শুটিং চলে। তাই ঠিক সঠিক কোনো ডায়েট প্ল্যান নেই। তবে কারিনা কাপুরের ডায়েটিশিয়ান রুজুতা দিবাকরের বই পড়ি। তিনি খুব সুন্দর করে মন ও শরীরের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে ওজন কমানোর কথা বলেন। কলকাতায় শুটিং থাকলে ডিম সেদ্ধ খেয়ে আবার কচুরি, জিলাপি খাই। শুটিংয়ে গিয়ে বলি, আমি চাইলেও তোমরা আমাকে দুধ চা দেবে না। ওরা কিছু বলে না, মুখ টিপে হাসে। আসলে সকালে দুধ–চিনি দিয়ে এক কাপ চা না খেলে মনে হয়, দিন ঠিকমতো শুরু হলো না। দুপুরে নায়িকার জন্য আলাদা খাবারের ব্যবস্থা থাকে। কিন্তু আমি সবাই যা খায় তা–ই খাই। শুটিংয়ের সময় আমার খাওয়ার পরিমাণ বেড়ে যায়। মনের মতো কাজ করতে পারছি কি না, সেরাটুকু দিতে পারছি কি না—এসব নিয়ে একধরনের মানসিক চাপ বোধ করি নিজে নিজে। বাইরে থেকে কেউ সেটা বুঝতে পারে না। সেই অস্থিরতা দূর করতে খেতে থাকি। মনে হয়, খাবার খেলেই কমে যাবে। আর পেটভরে না খেলে, বিশেষ করে ভাত না খেলে মনে হয় মাথা ঠিকমতো কাজ করছে না।


এত খেয়েও ওজন বাড়ে না কেন?
জয়া: একটা কাজ অবশ্য আমি করি, নিয়মিত ব্যায়াম করার চেষ্টা করি। একটা সময়ে এত বেশি ব্যায়াম করেছি, শরীর টোনড হয়েছে। তাই এখন হালকা ব্যায়াম করলেও চলে। সন্ধ্যা সাতটার পরে খাওয়ার পরিমাণ কমিয়ে দিই। সরভর্তি এক গ্লাস দুধ অবশ্যই পান করি। এর ব্যতিক্রম হয় না।

কখন ব্যায়াম করেন? বাড়িতে নাকি জিমে যান?
জয়া: দেবী নিয়ে ব্যস্ত থাকার কারণে নিয়মিত ব্যায়াম করা হচ্ছে না। তবে শুটিং থাকলে ব্যায়াম করা হয় না। তাই অন্য সময় সুেযাগ পেলেই ব্যায়াম করি। আমি মনে করি, আমার সৌন্দর্যের মূলমন্ত্র ব্যায়াম করা। ব্যায়াম করার পর আয়নায় নিজেকে দেখলে অন্য রকম সুন্দর লাগে। ঢাকায় থাকলে বাড়িতে ব্যায়াম করি না। অনেকের সঙ্গে মিলে দলগত হয়ে ব্যায়াম করতে ভালো লাগে। জিমে গিয়ে যন্ত্র ও অ্যারোবিকস করি। অ্যারোবিকস করতে বেশি পছন্দ করি। এখন ৪৫ মিনিট করে চলে আসি। কলকাতায় অনেক কাজ নিয়ে যাই। তাই সময় পেলে আমার নিজস্ব একজন প্রশিক্ষক বাড়িতে এসে স্ট্রেচিং (একধরনের ব্যায়াম) করিয়ে যান। ওই যে বলছিলাম একটা সময়ে দীর্ঘক্ষণ ব্যায়াম করতাম, দেখা যেত ২–৩ ঘণ্টাও ব্যায়াম করেছি। আর বিদেশে গেলে প্রচুর হাঁটি। কিছু না নিলেও হাঁটার জন্য জুতা ও পোশাক নেবই।


আপনার ত্বক নিয়ে মানুষের নানা জল্পনা–কল্পনা। এত সুন্দর মসৃণ ত্বকের রহস্য কী?
জয়া: অনেকেই জানেন না, যাঁরা নিয়মিত ব্যায়াম করেন, তাঁদের ত্বকে বাড়তি উজ্জ্বলতা আসে। রাতে দু–তিনটি ক্রিম লাগাই। কখনো কখনো নারকেল তেল মুখে মেখে ঘুমাতে যাই। নারকেল তেল ত্বক মসৃণ করে। এই তেল খুব পছন্দ আমার। সুেযাগ পেলেই নারকেল তেল মুখে ও চুলে লাগাই।


টিভি বা সিনেমার পর্দায় কিংবা ছবিতে যেমন দেখা যায় এর পেছনে কি শুধু ব্যায়াম আর নারকেল তেল?
জয়া: ব্যায়ামকে সবকিছুর ওপরে রাখি। ব্যায়াম করলে আমার আত্মবিশ্বাস দৃঢ় হয়, চেহারা ভালো থাকে। আমি তো মুখে কোনো ফেস প্যাক ব্যবহার করি না। এমনকি ফেসিয়ালও করি না। আমি মনে করি, প্রত্যেকের অল্প সময় হলেও প্রতিদিন ব্যায়াম করা উচিত। ত্বক সতেজ দেখাবে। আরেকটা ব্যাপার হলো—চেষ্টা করি কারেকশন মেকআপ করতে। ক্রিশ্চিয়ান ডিওরের বেস দিয়ে হালকা পাউডার ব্যবহার করি। শুটিংয়েও নিজের প্রসাধনসামগ্রী নিয়ে যাই। অতিরিক্ত মেকআপ আমাকে মানায় না। হালকা মেকআপে সুন্দর ও স্নিগ্ধ দেখায়।


ঘরের নাকি বাইরের খাবার—কোনটি বেশি পছন্দ?
জয়া: খেতে ভালোবাসি, কিন্তু খাওয়া নিয়ে অত ভাবি না। সামনে যা থাকে তা–ই খাই। মেক্সিকান, জাপানি, কোরীয় আবার বাংলাদেশি ঐতিহ্যবাহী খাবার সবই ভালো লাগে। নতুন কোনো রেস্তোরাঁ খুলেছে খেতে যেতে হবে বা এখন এই খাবার খেতে ইচ্ছে করছে, তখনই খেতে হবে। এগুলো আমার মধ্যে নেই।


ছোটবেলার বিশেষ কোনো খাবারের কথা মনে পড়ে?
জয়া: আমার নানি আমাকে ও আমার বোনকে তেতো খাবার খাওয়াতেন। সেই অভ্যাস এখনো আছে। তেতো খেলে ত্বক ও শরীর দুটোই ভালো ও সুস্থ থাকে।


শরীর ও ত্বক ভালো রাখার জন্য দুটি পরামর্শ যদি দিতেন…
জয়া: আমি চেষ্টা করি ৮ ঘণ্টা ঘুমানোর। অনেক সময় কাজের চাপে ছয় ঘণ্টা বা তার কিছু কম ঘুম হয়। ঘুম কম হলে একটুতেই ক্লান্ত লাগে। কাজে মন দিতে পারি না। তাই আমি বলব, পর্যাপ্ত ঘুমাতে হবে। আর ব্যায়াম করতে হবে। সুন্দর দেখানোর জন্য না, ব্যায়াম করার সময়টুকু আমার কাছে একান্তই নিজের সময়। মনে হয় নিজের জন্য কিছু করলাম। সবারই তা করা উচিত।


এবার একান্তই ব্যক্তিগত একটি প্রশ্ন। পাঠকেরা জানতে চান, আপনি কি প্রেম করছেন?
জয়া: আরে কী বলেন। প্রেম করব না কেন? প্রেম ছাড়া বাঁচা যায় নাকি। বছরের পর বছর ধরে প্রেম করছি। প্রেম করলে শরীর–মন দুটোই ভালো থাকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Please disable your adblocker or whitelist this site!